পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের নতুন কমিটি
পাহাড়ে মানসম্মত শিক্ষা ও জাতীয় অস্তিত্ব রক্ষার্থে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের আহ্বান

ছবি: সংগৃহীত
পাহাড়ে শিক্ষক সংকট নিরসন ও মানসম্মত শিক্ষার দাবিতে এবং জাতীয় অস্তিত্ব রক্ষার্থে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য ছাত্র সমাজের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি)।
আজ শুক্রবার (১৪ মার্চ) চট্টগ্রাম নগরীর চেরাগী পাহাড় মোড়ে কাউন্সিল পরবর্তী নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত ছাত্র সমাবেশে পিসিপির নব নির্বাচিত সভাপতি অমল ত্রিপুরা এই আহ্বান জানান।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) দিনব্যাপী চট্টগ্রাম নগরীর সাংবাদিক ইউনিয়ন মিলনায়তনে ২৭তম কেন্দ্রীয় কাউন্সিল সম্পন্ন হয়। এতে অমল ত্রিপুরাকে সভাপতি, শুভাশীষ চাকমাকে সাধারণ সম্পাদক ও রোনাল চাকমাকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ২৯ সদস্য বিশিষ্ট নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হয়।
‘শাসকগোষ্ঠীর দমন-নিপীড়নের বিরুদ্ধে গর্জে উঠুন; আসুন, অগ্রণী সৈনিক হিসেবে পূর্ণস্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে বীরোচিত আত্মোৎসর্গের শপথ নিই’ এই স্লোগানে বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) সকাল সাড়ে ৮টায় সংগঠনের দলীয় সঙ্গীত ‘পাহাড়ি ছাত্র-ছাত্রী দল’ গানের মধ্য দিয়ে কাউন্সিল অধিবেশন উদ্বোধন করা হয়। পরে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি শহীদ সুনীল ত্রিপুরা, বিপুল-লিটন-রুহিন বিকাশ ও পিসিপির কেন্দ্রীয় সদস্য রিপন আলো চাকমার প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে কাউন্সিলের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান পিসিপির সভাপতি অঙ্কন চাকমা, সহ-সভাপতি কুনেন্টু চাকমা ও সহ-সাধারণ সম্পাদক সমর চাকমা। এরপর শোক প্রস্তাব পাঠ ও অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে আত্মোৎসর্গকারী সকল বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান জানিয়ে দাঁড়িয়ে দুই মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
কাউন্সিলের প্রথম অধিবেশনে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি অঙ্কন চাকমার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অমল ত্রিপুরার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি রিনিসা চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামে কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক রূপন মারমা ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি নীতি চাকমা।
কাউন্সিলে কর্মী বাহিনীর উদ্দেশে অঙ্কন চাকমা বলেন, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের আদর্শ, চেতনাকে লালন করে শত ঝুঁকি নিয়ে আমাদের নেতা-কর্মীরা কাজ করে যাচ্ছে। শত প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও হাল ছেড়ে দেয়নি, রূপন, সমর-সুকেশ-মনতোষ ও সুনীল ত্রিপুরা, লাল রিজাভ বমসহ সকল শহীদদের আদর্শের পতাকাকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরে রেখেছি। শিক্ষা আন্দোলনের পাশাপাশি পিসিপি নেতা-কর্মীরা জাতির অস্তিত্ব রক্ষার্থে কাজ করে যাচ্ছে। পাহাড় ও সমতলের প্রগতিশীল রাজনৈতিক সংগঠনের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নিপীড়িত জনগণের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। সামনের দিনগুলোতে পিসিপিকে পূর্বসূরীদের আদর্শ, চেতনায় বলীয়ান হয়ে এগিয়ে যেতে হবে।
সারাদেশের পরিস্থিতি তুলে ধরে অঙ্কন চাকমা বলেন, বংলাদেশ এক ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে অতিক্রম করছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটলেও পার্বত্য চট্টগ্রামে কোন পরিবর্তন হয়নি। আমরা আশা করেছিলাম অভ্যুত্থান পরবর্তীতে পার্বত্য চট্টগ্রামে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত হবে। রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠন হিসেবে আমরা আমাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবো। কিন্তু কোনটাই হয়নি। আগের মতোই শাসন-শোষণ থেকে গেছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের নেত্রী রিনিসা চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে নারী ধর্ষণ-নিপীড়ন মূলত শাসকগোষ্ঠীর জাতি ধ্বংসের ষড়যন্ত্রের অংশ। পাহাড়ে একজন নারীকে ঘর থেকে বের হতে হলে নিরাপদে ঘরে ফিরে আসতে পারবে কিনা সে আশঙ্কায় থাকতে হয়, উৎপেতে থাকা হায়েনাদের দ্বারা ধর্ষণের আতঙ্কে থাকতে হয়, বাস্তুভিটা দখল হয়ে যাবে কিনা চিন্তা করতে হয়।
তিনি আরও বলেন, অধিকার দয়াদাক্ষিণ্যের বস্তু নয়, কঠোর সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে তা অর্জন করতে হয়। জাতীয় অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইয়ে ছাত্র-যুব-নারী সমাজকে রণাঙ্গনে সারিতে নামতে হবে, একযোগে কাজ করতে হবে।
যুবনেতা রুপন মারমা বলেন, শাসকগোষ্ঠীর আতঙ্কিত নাম হল পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ। পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের উত্থান এবং বিকাশ কঠোর ত্যাগ ও সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে হয়েছে। পিসিপি পাহাড়ি জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করেছে। বর্তমানে শাসকগোষ্ঠী পিসিপি’র গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসকে কলুষিত করার জন্য ছাত্র সংগঠন নামধারী কিছু সংগঠনকে দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে এবং জাতিগত বিভাজন সৃষ্টি করছে। আগামী দিনে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের নেতা-কর্মীদের আরো কঠোর সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। একমাত্র সংগ্রামই নিপীড়িত জাতি ও জনগণের মুক্তির পথ।
হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভানেত্রী নীতি চাকমা বলেন, সারা দেশে মব উস্কে দিয়ে নারী ধর্ষণ, নিপীড়ন ও হেনস্তার ঘটনা ক্রমাগত চলছে। পাহাড়েও জাতিগত দমনের হাতিয়ার হিসেবে নারী ধর্ষণ-নিপীড়ন করা হচ্ছে। নৈরাজ্যকর এই পরিস্থিতিতে সকল প্রগতিশীল শক্তিকে ঐক্যেবদ্ধ হতে হবে।
কাউন্সিলের দ্বিতীয় অধিবেশনে সংগঠনের বার্ষিক রাজনৈতিক, সাংগঠনিক, আর্থিক ও দাপ্তরিক সংক্রান্ত প্রতিবেদন পেশ করেন যথাক্রমে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক, সাংগঠনিক, অর্থ ও দপ্তর সম্পাদক। উত্থাপিত প্রতিবেদনের উপর উপস্থিত প্রতিনিধিবৃন্দ আলোচনা-সমালোচনা ও নিজেদের মতামত উপস্থাপন করেন। এছাড়াও কাউন্সিলে অংশগ্রহণকারী পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে পিসিপির প্রতিনিধিরা স্ব স্ব শাখার সাংগঠনিক অবস্থা ও আগামী দিনে কর্মসূচি সম্পর্কে প্রস্তাব ও মতামত তুলে ধরেন।
কাউন্সিলের তৃতীয় অধিবেশনে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি অঙ্কন চাকমা নতুন কমিটি প্রস্তাব আকারে প্রতিনিধিদের নিকট তুলে ধরেন। উত্থাপিত কমিটির ওপরে উপস্থিত প্রতিনিধিদের পর্যালোচনা, মতামত প্রদান শেষে সর্বসম্মতিক্রমে অমল ত্রিপুরাকে সভাপতি, শুভাশীষ চাকমাকে সাধারণ সম্পাদক ও রোনাল চাকমাকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ২৯ সদস্য বিশিষ্ট নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হয়।
নতুন কমিটিকে শপথবাক্য পাঠ করান বিদায়ী কমিটির সভাপতি অঙ্কন চাকমা। এরপর নতুন কমিটিকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)-এর সংগঠক থুইক্যচিং মারমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভানেত্রী নীতি চাকমা ও নারী সংঘের নেত্রী রিনিসা চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সহ-সাধারণ সম্পাদক রূপন মারমা, সদ্য বিদায়ী কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক নিকন চাকমা, সদস্য সুদেব চাকমা। এছাড়াও নতুন কমিটির পক্ষ থেকে সংগঠন থেকে সদ্য বিদায় নেওয়া অঙ্কন চাকমা, নিকন চাকমা, সুদেব চাকমাকে ফুল দিয়ে বিদায়ী সম্ভাষণ জানানো হয়।
কাউন্সিলের চতুর্থ অধিবেশনে কমিটির নবনির্বাচিত সভাপতি অমল ত্রিপুরার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শুভাশীষ চাকমার সঞ্চালনায় বিদায়ী কমিটির নেতৃবৃন্দ সংগঠনে লড়াই সংগ্রামের নানা অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন এবং নবনির্বাচিত কমিটিকে আগামী দিনের সংগ্রামের নানা দিক-নির্দেশনা ও পরামর্শ প্রদান করে শুভেচ্ছা জানান। পরে নব-নির্বাচিত কমিটির সভাপতি অমল ত্রিপুরার বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে কাউন্সিল অধিবেশন সমাপ্ত হয়।
ছাত্র সমাবেশের মাধ্যমে নতুন কমিটি প্রকাশ
শুভেচ্ছা মিছিল ও ছাত্র সমাবেশ মাধ্যমে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সদ্য গঠিত নবনির্বাচিত কমিটি প্রকাশ করেছে সংগঠনটি। আজ শুক্রবার বিকাল ৩টায় চট্টগ্রাম নগরের ডিসি হিল থেকে এক শুভেচ্ছা মিছিল বের হয়ে প্রেসক্লাব প্রদক্ষিণ করে চেরাগী পাহাড় মোড়ে এক ছাত্র সমাবেশের মধ্যে দিয়ে এই কমিটি প্রকাশ করা হয়।
‘ড. ইউনুস ফ্যাসিস্ট হাসিনা নন, প্রমাণ দিন; পাহাড়ে সেনা দমন-পীড়ন, সেনাসৃষ্ট সশস্ত্র দুর্বৃত্তদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করুন; সারাদেশে নারী ধর্ষক-ভূমিদস্যু-লুটেরা ও মাফিয়াদের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক শক্তি এক হোন, লড়াই করুন’ এই স্লোগানে সমাবেশে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের নব নির্বাচিত সভাপতি অমল ত্রিপুরার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শুভাশীষ চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন পিসিপির সদ্য সাবেক সভাপতি অঙ্কন চাকমা, পিসিপির কেন্দ্রীয় সহ-সভপতি কুনেন্টু চাকমা, সহ-সাধারণ সম্পাদক সোহেল চাকমা ও শিল্প সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক রূপসী চাকমা। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাংগঠনিক সম্পাদক রোনাল চাকমা।
অমল ত্রিপুরা বলেন, জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে পিসিপির নেতা-কর্মীরা পাহাড়-সমতলে বিভিন্নস্থানে আন্দোলনে অংশ গ্রহণ করার মাধ্যমে ছাত্র সংগঠন হিসেবে ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করেছে। রংপুরে আবু সাঈদসহ সারাদেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনার প্রতিবাদে পিসিপির নেতৃত্বে গত বছরের ১৭ জুলাই খাগড়াছড়িতে বিক্ষোভ ও ২১ জুলাই পানছড়িতে কালো পতাকা মিছিল এবং কারফিউ উপেক্ষা করে বন্ধুপ্রতিম ছাত্র সংগঠনের সাথে একিভূত হয়ে ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছিলাম। আন্দোলনে সম্পৃক্ত হওয়ার কারণে পিসিপির নেতা-কর্মীদেরকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ, ছাত্র লীগ এবং প্রশাসনের নানা হুমকি, ভয়-ভীতিমূলক পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হয়েছে। জুলাইয়ের শিক্ষার্থী-জনতার সাহসী ভুমিকার ফলে দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে চলা ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসান ঘটেছিল।
দেশের সার্বিক পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে অমল ত্রিপুরা বলেন, গণঅভ্যুাত্থান পরবর্তীতে এদেশের জনগণের একটি গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার আকাঙ্ক্ষা ছিল। এজন্য তারা দেশে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা হবে এবং ধর্মীয়, সংখ্যালঘু জাতিসত্তা, নারী-শিশু ও নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে এমনটাই আশা করেছিল। কিন্তু আমরা লক্ষ করছি দেশের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পূর্ণ এর বিপরীতে ধাবিত হচ্ছে। পুলিশ-প্রশাসন কর্তৃক প্রতিনিয়ত সভা-সমাবেশে হামলা করা হচ্ছে। দিন দুপুরে লুটপাট, ডাকাতির ঘটনা ঘটছে, হত্যা-খুন, গুম, বিচার বহির্ভুত হত্যা ও নারী-শিশু ধর্ষণ মত জঘন্যতম ঘটনা সংঘটিত হচ্ছে। এই ঘটনাগুলো দেশের মানুষকে উদ্বেগ উৎকণ্ঠার মধ্যে ফেলেছে। এসব ঘটনা অচিরেই বন্ধ হওয়া দরকার এবং তা বন্ধের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে।
পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতি তুলে ধরে অমল ত্রিপুরা বলেন, পাহাড়িদের ভূমি কেড়ে নেয়া হচ্ছে, নারীদের সম্ভ্রম কেড়ে নিচ্ছে এবং পাহাড়িদের সমাজচ্যুত কিছু সংখ্যক লোককে ব্যবহার করে হত্যা-খুন-গুম-অপহরণ করে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করে রেখেছে। পাহাড়ি জনগণ আশা করেছিল অন্তত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে পাহাড়িদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। কিন্তু দেখা গেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গত ৭ মাসের অধিক সময়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে আগের মতোই সেনা শাসন বলবৎ রাখার মাধ্যমে বিচার বহির্ভুত হত্যাকাণ্ড, পাহাড়িদের ওপর অন্যায় দমন-পীড়ন, ধর্মীয় পরিহানি ও ভূমি কেড়ে নেওয়ার ঘটনা অব্যাহত রয়েছে।
রুপসী চাকমা বলেন, সোহাগী জাহান তনু হত্যার ঘটনা ঘটেছিল কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টের ভিতর। আর ’৯৬ সালে কল্পনা চাকমা অপহরণের ঘটনাও ছিল সেনাবাহিনী কর্তৃক। কিন্তু এসব ঘটনায় জড়িত ক্ষমতাশালী ব্যক্তিরা সবসময় সরকারের সহযোগিতায় পার পেয়েছে। এসব ঘটনার বিচার হলে শিশু আছিয়া’র মতো ধর্ষণের ঘটনা ঘটতো না।
সমাবেশে হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভাপতি নীতি চাকমা ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সহ-সাধারণ সম্পাদক রূপন মারমা উপস্থিত ছিলেন।