ভোট নিয়ে জরিপ
৬ বিভাগে বিএনপি, দুটিতে জামায়াত এগিয়ে

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮ মার্চ ২০২৫, ০২:৪৬ পিএম

দেশের ৮টি বিভাগের ৬টিতেই সম্ভাব্য ভোট পাওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এগিয়ে আছে। আর দুটিতে এগিয়ে আছে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ। মাঠ পর্যায়ে ভোটারদের ওপর পরিচালিত এক জরিপে এমন আভাসই পাওয়া যায়।
আজ শনিবার (৮ মার্চ) জরিপের ফলাফল প্রকাশ করে জরিপকারী সংস্থা ইনোভিশন কনসাল্টিং। জরিপের ফলাফল তুলে ধরে জরিপকারী সংস্থা ইনোভিশন কনসাল্টিং। বাংলাদেশ ভিত্তিক আন্তর্জাতিক উন্নয়ন গবেষণা এবং প্রকল্প ব্যবস্থাপনা এই সংস্থাটি চলতি বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩ মার্চ পর্যন্ত ‘জনগণের নির্বাচন ভাবনা’ শীর্ষক জরিপটি চালায়। জরিপে ভোটারদের অনুভূতি, প্রত্যাশা এবং পছন্দ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় উঠে আসে।
বিভাগ ভিত্তিক জরিপে দেখা যায়, বরিশালে ৩৯ দশমিক ৬৬ শতাংশ, চট্টগ্রামে ৪৭ দশমিক ৮২ শতাংশ, ঢাকায় ৪৪ দশমিক ৭১ শতাংশ, ময়মনসিংহে ৪৪ দশমিক ৬০ শতাংশ, রাজশাহীতে ৪২ দশমিক ৬৮ শতাংশ এবং সিলেট বিভাগে ৫১ দশমিক ০২ শতাংশ ভোট পেয়ে এগিয়ে আছে বিএনপি।
অন্যদিকে, খুলনায় ৪৬ দশমিক ৩২ শতাংশ এবং রংপুর বিভাগে ৪৪ দশমিক ৯১ শতাংশ ভোট পেয়ে এগিয়ে আছে জামায়াত।
প্রসঙ্গত, যারা ভোট দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন, তাদের মধ্যে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ (৩৪.৩ শতাংশ) ভোটার কাকে ভোট দেবেন তা জানাতে অস্বীকার করেছেন। অর্থাৎ মতামত দিয়েছেন ৬৫ দশমিক ৭ শতাংশ ভোটার। আর মতামত দেননি ৩৪ দশমিক ৩ শতাংশ।
সংস্থাটি জানায়, জরিপের ফলাফল থেকে বোঝা যায় আসন্ন নির্বাচনে বিএনপি এগিয়ে ও জামায়াতে ইসলামী শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে। পাশাপাশি নতুন ছাত্র নেতৃত্বাধীন দল এবং অন্যান্য ছোট দলগুলোও কিছু ভোটার আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয়েছে। তাছাড়া যে ৩৪ দশমিক ৩ শতাংশ ভোটার কাকে ভোট দেবেন তা জানাতে অস্বীকার করেছেন, তাদরে সিদ্ধান্তও ভোটের ফলাফলে প্রভাব ফেলতে পারে। তবে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা এবং নির্বাচনী প্রচারণার গতিপথ পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে যা শেষ মুহূর্তে ভোটারদের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করতে পারে।
এছাড়া জরিপে দেখা যায়, ছাত্র সমর্থিত নতুন রাজনৈতিক দলের সবচেয়ে বেশি ভোট শেয়ার রয়েছে চট্টগ্রামে (৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ)। ছাত্র সমর্থিত নতুন রাজনৈতিক দলের ভোটের হার গ্রামাঞ্চলের তুলনায় (৪ দশমিক ১ শতাংশ) শহরাঞ্চলে বেশি (৮ দশমিক ৯ শতাংশ)।
অন্যদিকে, শহরাঞ্চলের (৩৯ দশমিক ৭ শতাংশ) তুলনায় বিএনপির গ্রামাঞ্চলে (৪২ দশমিক ২ শতাংশ) ভোট বেশি। একইভাবে শহরাঞ্চলের তুলনায় (৩০ দশমিক ৪ শতাংশ) গ্রামাঞ্চলে জামায়াতের ভোটের হার বেশি (৩১ দশমিক ৯ শতাংশ)। আর
যারা বিএনপিকে ভোট দেবেন তাদের মধ্যে জেন জি (১৮-২৮ বছর) ভোটের ভাগ সর্বনিম্ন (৩৫ দশমিক ৫ শতাংশ) এবং জেন এক্স (৪৫-৬০ বছর) ভোটের ভাগ সর্বোচ্চ (৪৭ শতাংশ)।
যারা জামায়াতে ইসলামীকে ভোট দেবেন তাদের মধ্যে জেন জি ভোটের ভাগ সর্বোচ্চ (৩৪ দশমিক ২ শতাংশ), তারপর মিলেনিয়াল (২৯-৪৪ বছর) ভোটের ভাগ (৩১ দশমিক ২ শতাংশ); যারা ছাত্র সমর্থিত নতুন দলকে ভোট দেবেন তাদের মধ্যে জেন জি ভোটের ভাগ সর্বোচ্চ ১০ দশমিক ১ শতাংশ। তারপর মিলেনিয়াল ভোটের ভাগ ৩ দশমিক ৮ শতাংশ।
উল্লেখ্য, ইনোভিশন কনসাল্টিং বাংলাদেশ ভিত্তিক আন্তর্জাতিক উন্নয়ন গবেষণা এবং প্রকল্প ব্যবস্থাপনা সংস্থা। সংস্থাটি গত ১৬ বছর ধরে বিশ্বজুড়ে দারিদ্র্যের সমস্যা সমাধানে কাজ করছে। এছাড়া, সামাজিক ও বাজার সংক্রান্ত বিষয়গুলোর উপরও সংস্থাটি গবেষণা করে আসছে। সংস্থাটি অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন নিয়েও কাজ করে।
সংস্থাটি চলতি বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩ মার্চ পর্যন্ত ‘জনগণের নির্বাচন ভাবনা’ শীর্ষক জরিপটি চালায়। জরিপে ভোটারদের অনুভূতি, প্রত্যাশা এবং পছন্দ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় উঠে আসে। জরিপে দেশের ৮ বিভাগ ও ৬৪ জেলা জুড়ে ১০ হাজার ৬৯৬ জন সম্ভাব্য ভোটারের অংশগ্রহণে বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করা হয়।