রাজশাহীতে এক মাদক কারবারির স্ত্রীর ঘরে পুলিশের একজন সহকারী উপপরিদর্শককে (এএসআই) পেয়ে লাঠিপেটা করেছে স্থানীয়রা। পরে খবর পেয়ে পুলিশ বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে তাকে উদ্ধার করে নগরীর মতিহার থানা হেফাজতে নেয়।
জানা যায়, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) চন্দ্রিমা থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) সোহেল রানাকে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে নগরের সাতবাড়িয়া মহল্লার এক মাদক কারবারির স্ত্রীর ঘর থেকে স্থানীয়রা আটক করে। পরে ঘরের দরজা বন্ধ করে তাকে লাঠিপেটা করা হয়। মারধর করা হয় ওই নারীকেও। এর একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক মাধ্যমে।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, স্থানীয়রা ওই নারী ও এএসআইকে নানাভাবে জেরা করছেন। জেরার ফাঁকে ফাঁকে লাঠি দিয়ে পেটানোও হচ্ছে। এ সময় ওই নারীকে বলতে দেখা যায়, ‘প্রচুর মেরেছে, প্রচুর,’ আর এএসআই সোহেলকে বলতে দেখা যায়, ‘আমি কলমা করে বিয়ে করেছি’।
জেরার মুখে এএসআই বলেন, ‘তার গ্রামের বাড়ি বগুড়া। সেখানে তার স্ত্রী-সন্তান আছে। তাকে তিনি কলমা করে বিয়ে করেছেন।’
তবে ঘরে উপস্থিত ওই নারীর স্বামী বলেন, ‘স্ত্রীর সঙ্গে তার এখনও বিবাহ বিচ্ছেদই হয়নি। এ সময় ওই নারী বলেন, ‘স্বামীকে আমি মুখে মুখে তালাক দিয়েছি।’
স্থানীয়দের অভিযোগ, এই নারীর সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক চালিয়ে যাচ্ছিলেন এএসআই সোহেল রানা। তাকে ঘরে আটকে রেখে থানায় খবর দেওয়া হয়। পুলিশ আসার আগে অল্পবয়সী কয়েকজন লাঠি দিয়ে এএসআইকে পেটায়। পরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ এসে তাকে নিয়ে যায়।
মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মালেক বলেন, ‘এএসআই সোহেল রানা থানা হেফাজতে আছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এ ধরনের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ায় পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে। এ জন্য কর্তৃপক্ষ এএসআইয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেন।’
তবে ওই নারীর সঙ্গে এএসআইয়ের বিয়ে কিংবা বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক চালানোর বিষয়ে ওসি কোনো তথ্য দিতে পারেননি। এ সময় তিনি জানান, ওই নারীর স্বামী মাদক কারবারি। তার বাড়ি ডাসমারী মধ্যপাড়ায়। তিনি মাদক মামলায় বছর দেড়েক জেলে ছিলেন। এই সময়ে ওই নারী বাবার বাড়ি চলে যান। এছাড়া স্বামী জামিনে বের হলেও তিনি তার বাড়ি আসছিলেন না।
ওসি বলেন, ‘ওই নারীর স্বামী যখন জেলে ছিলেন, তখন এএসআই তিনটি অটোরিকশা কেনেন। অটোরিকশাগুলো সোহেল তার পূর্বপরিচিত ওই নারীর তত্ত্বাবধানে রাখেন। ওই নারীর ভাই ও অন্য চালকেরা অটোরিকশাগুলো চালান। সোহেল মাঝে মাঝে ওই নারীর কাছ থেকে ভাড়ার টাকা নিয়ে আসতেন। মঙ্গলবার রাতেও তিনি ভাড়ার টাকা আনতে গিয়েছিলেন। তখন ওই নারীর স্বামী স্থানীয় কিছু ব্যক্তিকে নিয়ে এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন। আসলেই কী ঘটনা ঘটেছে সে ব্যাপারে তদন্ত চলছে।’