ধানমন্ডি ৩২-এর ভবন, সুধা সদনসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় এইচআরএসের উদ্বেগ

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬:৪৬ পিএম

রাজধানীর ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে অবস্থিত শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি, শেখ হাসিনার বাসভবন সুধা সদন এবং দেশের বিভিন্ন স্থানের আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হচ্ছে জানিয়ে এসব ঘটনায় নিন্দা ও উদ্বেগ জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি (এইচআরএসএস)। আজ বৃহস্পতিবার এক বিবৃতি তারা এই নিন্দা ও উদ্বেগ জানায়।
বিবৃতিতে বলা হয়, এইচআরএসএস মনে করে, অপরাধী আইনানুগভাবে তার শাস্তি পাবে, রাষ্ট্র তা নিশ্চিত করবে, কোনো নাগরিক আইন নিজের হাতে তুলে নিতে পারে না। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের তথ্যানুযায়ী- ভারতে পালিয়ে যাওয়া স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার বক্তব্য নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের ভার্চ্যুয়াল অনুষ্ঠানে প্রচারের ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা গতকাল বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ব্যাপক বিক্ষোভ করেন। একপর্যায়ে, শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে ভবনটির ভেতর থেকে বই, স্টিল, লোহা, টিন, কাঠসহ বিভিন্ন জিনিস নিয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটে। পাশাপাশি ধানমন্ডির ৫/এ-তে শেখ হাসিনার বাসভবন সুধা সদনে ভাঙচুর করে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এছাড়া, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আমির হোসেন আমুসহ আরও কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতে ভাঙচুর করা হয়।
বিবৃতি আরও বলা হয়, আমরা মনে করি, এ ধরনের হামলার ঘটনা দেশের সামগ্রিক স্থিতিশীলতাকে মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত করে প্রতিশোধপরায়ণ মনোভাবকে দীর্ঘস্থায়ী করে শান্তিপ্রক্রিয়া ব্যাহত এবং গণতন্ত্রের অভিযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করবে। স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা ও তার দোসররা গত ১৫ বছরে দেশে যে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও অপরাধযজ্ঞ সংঘটিত করেছে, সেসকল ঘটনার পুনরাবৃত্তি নতুন বাংলাদেশে কাঙ্ক্ষিত নয়। তারা দেশকে ধ্বংস করেছে, লুট করেছে, মানুষকে বর্বরভাবে নির্যাতন ও হত্যা করেছে একথা যেমন সত্যি, ঠিক তেমনি তাদের পরাজয়ের পর একটি বিজয়ের মধ্য দিয়ে সাধারণ জনতা সর্বদা গণতন্ত্রের পথের অভিযাত্রী হতে চায়। আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের শান্তিপ্রিয় জনতা কোনো ধরনের সহিংস কর্মকাণ্ডই সমর্থন করে না। আমরা মনে করি, এই মুহূর্তে সবাইকেই ধৈর্যধারণ করে যেকোনো ধরনের অপরাধ প্রবণতাকে প্রত্যাখ্যান করে দেশ ও জাতির সার্বিক কল্যাণের স্বার্থে স্বদর্পে সামনে এগিয়ে যেতে হবে এবং দেশকে নতুন করে সাজাতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।
বিবৃতি আরও বলা হয়, হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটির (এইচআরএসএস) পক্ষ থেকে আমরা দেশে সব ধরনের অন্যায়, অপরাধ, বিশৃঙ্খলা ও সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টির নিন্দা জানাই। পাশাপাশি বিক্ষুব্ধ ছাত্র জনতাকে ধৈর্য ধারণের, সহিংস কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার এবং সর্বস্তরের জনতাকে দায়িত্বশীল আচরণের আহ্বান জানাচ্ছি। একইসাথে অন্তর্বর্তী সরকারকে যেকোনও ধরনের সহিংসতা প্রতিরোধ, জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার এবং আহতদের পুনর্বাসন ও দোষীদের বিচারে দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দেশের শৃঙ্খলা রক্ষায় আরও সক্রিয় করার আহ্বান জানাচ্ছি।