Logo
Logo
×

সংবাদ

মানুষের কল্যাণেই ট্যাক্স-জিডিপি অনুপাত স্বাস্থ্যকর জায়াগায় নিতে হবে: প্রেস সচিব

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:০৪ এএম

মানুষের কল্যাণেই ট্যাক্স-জিডিপি অনুপাত স্বাস্থ্যকর জায়াগায় নিতে হবে: প্রেস সচিব

বাংলাদেশের ট্যাক্স-জিডিপির যে অনুপাত ছিল সেটি ২০২১ সালের পর থেকে নেমে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি জানিয়েছেন, করোনার পর থেকে এটি এমন জায়গায় এসেছে যে, গত ৫ মাসে রাজস্ব ঘাটতি ৪২ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।

রবিবার (১২ জানুয়ারি) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রাজস্ব আদায়ের বিষয়ে শফিকুল আলম বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য ছিল ১ লাখ ৬৯ হাজার কোটি টাকা। সেখানে সংগ্রহ হয়েছে ১ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকার একটু বেশি।’

‘আরেকটা বিষয় হচ্ছে, বিশ্বে বাংলাদেশের ট্যাক্স-জিডিপি রেশিও (অনুপাত) নিচের দিকে। অনুপাতের হার এমন জায়গায় চলে যাচ্ছে যে সেটি টেকসই নয়।’

তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষের ভালো থাকার জন্য ট্যাক্স-জিডিপি রেশিও একটা জায়গায় আমাদের নিতেই হবে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে কিছু ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে। আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে ভ্যাটের অনেক ফারাক ছিল। কোথাও ৩ শতাংশ আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে ৪ শতাংশের একটু বেশি, পুরোটাকেই আমরা চাইছি সরলীকরণ করে ১৫ শতাংশ করতে। সরলীকরণ করার লাভ হচ্ছে, এতে লিকেজ (ফাঁক) কমে আসে। এই লিকেজ কমানো আমাদের খুবই দরকার। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে চেষ্টা করছে, খরচ কত কমানো যায়।’

তিনি বলেন, ‘আগে বিদেশ সফরে ২৫০-৩০০ জনের বহর যেত, আর এখন প্রধান উপদেষ্টা বিদেশে গেলে ৪০-৫০ জন যায়। তার মধ্যে নিরাপত্তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট লোকই বেশি যাচ্ছে।’

প্রেস সচিব বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতিতে দেখবেন সব জায়গায় কী পরিমাণ অপচয় করা হয়েছে। কর্ণফুলী টানেল করা হলো কত টাকা খরচ করে। তার ওই পাড়ে সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের বিশ্রামের জন্য ৪৫০ কোটি টাকা দিয়ে সেভেন স্টার হোটেল করা হয়েছে, এটা কার টাকায়?  এদেশের জনগণের ভ্যাটের টাকায়। জনগণের টাকা কীভাবে লুটপাট আর অপচয় হয়েছে তার কিছু নমুনা আপনারা এখন ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমগুলোতে দেখছেন।’

তিনি বলেন, ‘সত্যিকার অর্থে আমরা চাইছি, দেশের ট্যাক্স-জিডিপি রেশিও এমন একটা হেলদি (স্বাস্থ্যকর) জায়গায় যাক যাতে ইকোনমিক গ্রোথ (অর্থনীতির উন্নয়ন) হয়। ট্যাক্স-জিডিপি রেশিও কমে যাওয়া মানে হচ্ছে, আপনি ঋণ শোধ করতে পারবেন না। সেই জায়গা থেকে বিচার করে এটা করা হয়েছে। আমরা আশা করছি, সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশের মানুষের উন্নয়নে এই টাকা ব্যয় হবে।’

জনগণের ওপর করের বোঝা কতটুকু প্রভাব ফেলতে পারে— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এই বিষয়গুলো নিয় আমরা কাজ করছি। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের নেতৃত্বে একটা টাক্স ফোর্স কাজ করছে। এছাড়া কীভাবে টাকাগুলো আনা যায়। এটা হচ্ছে আমাদের প্রথম প্রায়রিটি (অগ্রাধিকার)।’

‘চুরি তো আনলিমিটেড হয়েছে, সেই চুরিটাকে আগে ট্রেস (শনাক্ত) করা দরকার। কোথায় কোথায় টাকা রেখেছে। আপনারা আজকেও দেখেছেন যে, এই যে ৬০ কাঠার জমির ওপর পূর্বাচলে যে জমিগুলো নিয়েছে সেটার ওপর আজকে একটা মামলা হয়েছে। যেহেতু আমরা সরকার তাই আমদের দেখতে হয় টাকাগুলো কীভাবে নিয়ে গেছে। সেই জন্য যা যা করা দরকার আমরা সেই কাজটা করব। আপনারা দেখেছেন আমরা অ্যান্টি করাপশনকে (দুর্নীতি দমন) উন্নত করেছি, সেন্ট্রাল ব্যাংকে (কেন্দ্রীয় ব্যাংক) আমরা মেইনটেন করেছি, মানি লন্ডরিং টিমকে উন্নত করেছি।’

ভ্যাট–ট্যাক্স বৃদ্ধির ফলে মূল্যস্ফীতি ও সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বাড়বে কিনা জানতে চাইলে শফিকুল আলম বলেন, ‘আমরা মনে করছি তা খুবই মিনিমাম হবে, ম্যাসিভ প্রভাব পড়বে না। এখানে অজনপ্রিয় হওয়ার কোনো প্রশ্নই দেখছি না। বরং সরকার দেশের অর্থনীতির অবস্থা যাতে ঠিক থাকে সেই দিকে লক্ষ রাখছে। আমি মনে করি, বিষয়টির প্রেক্ষাপট ও কেন করা হয়েছে তা মানুষকে বোঝানো সাংবাদিক ও সবার কর্তব্য।’

তিনি বলেন, ‘আমরা অনেক জনপ্রিয় (পপুলিস্ট) কথা বলতে পারি, কিন্তু জনপ্রিয় হওয়ার চেয়ে আমার মনে হয় বাস্তবতাটা কী? যে ধরনের ভঙ্গুর একটি অর্থনীতি রেখে গেছে, আপনি দেখেন কোথায় কোথায় অপচয় হয়েছে, ইয়ত্তা নেই।’

ভ্যাট–ট্যাক্স বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের পেছনের যুক্তি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘সেটা না হলে টাকার মান কমে যাবে। এখন ১২৫ টাকায় ডলার কিনছেন, কিন্তু একটা সময় আসবে ১৯০ টাকা দিয়ে কিনতে হবে। ম্যাক্রো ইকোনমিক স্ট্যাবিলিটি বাড়ানোর জন্য ট্যাক্স জিডিপি রেশিও বাড়াতে হবে।’

Logo

প্রধান কার্যালয়: ৬০৯০ ডাউসন বুলেভার্ড, নরক্রস, জর্জিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন