সরকারের উদ্দেশ্যে হাসনাত আব্দুল্লাহ
সুশীলগিরি ছেড়ে দোসরদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে আসেন
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৫৪ পিএম
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, এ সরকার সুশীলতার মধ্য দিয়ে আসেনি। এ সরকার দুই হাজার মানুষের লাশের ওপর দিয়ে ক্ষমতায় বসা সরকার। সেই রক্তের সঙ্গে আপস করার কোনো সুযোগ নেই। সরকারের কাছে অনুরোধ সুশীলগিরি ছেড়ে দোসরদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে আসেন। স্বৈরাচারের দোসরদের সব ষড়যন্ত্র থেকে দেশকে বাঁচান। দেশের জনগণকে বাঁচান।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিজের ফেসবুকে পোস্টে তিনি এসব কথা বলেন।
পোস্টে হাসনাত আব্দুল্লাহ লিখেন, ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতনের পর একটার পর একটা ষড়যন্ত্র হয়েছে। প্রথমে জুডিশিয়াল ক্যুর চেষ্টা করা হলো, ছাত্ররা মাঠে নেমে তা রুখে দিল। লীগ যখন আনসার হয়ে ফিরে আসছিল, এ ছাত্ররাই তাদের বিরুদ্ধে সরাসরি মাঠে নেমেছে। এনসিটিবিতে বই না ছাপিয়ে সরকারকে বেকায়দায় ফেলার ষড়যন্ত্র হলো, সেটাও ছাত্ররা প্রতিহত করল।
তিনি আরও লিখেন, যখন স্বৈরাচার হাসিনাকে সার্ভ করা দালাল মিডিয়া, সময় টিভির ক্যু রুখে দেওয়ার জন্য ছাত্ররা এগিয়ে এলো, তখনই চারদিকে শুরু হলো সুশীলদের আহাজারি। আমাদের বিরুদ্ধে একের পর এক বাস্তবতাবিবর্জিত মিথ্যা ছড়ানো হলো। বারবার বলেছি, আমরা কোনো সাংবাদিকদের লিস্ট দিইনি। অথচ এরপরও পুরোপুরি বানোয়াট অভিযোগ তুলে আমাদের বিরুদ্ধে মিডিয়ার মাফিয়ারা ক্যু করল।
তিনি আরও লিখেন, যে সময় টিভি যুগের পর যুগ বিএনপি, জামায়াতসহ ফ্যাসিবাদবিরোধী দলগুলোর ক্যারেকটার এসাসিনেশন করেছে, শহিদ আলিফকে হিন্দু ট্যাগ দিয়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাঁধানোর চেষ্টা করেছে, জুলাই আন্দোলনকে টেরোরিস্টদের উত্থান বানিয়ে হাসিনার ছাত্র হত্যাকে নর্মালাইজ করেছে, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা নিয়ে তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন এবং মিথ্যা অভিযোগ করে ইমেজ নষ্ট করেছে, এমনকি বিএনপির প্রতিষ্ঠাকে ডিলেজিটিমাইজ করার অ্যাটেম্পট পর্যন্ত নিয়েছে। আজকে তাদের জন্য সুশীলদের মায়াকান্নার শেষ নেই। প্রতিবাদ করতে যাওয়া ছাত্ররা হলাম খারাপ। আর এদের কুকীর্তিকে সমর্থন দেওয়া সুশীলরা হয়ে গেল ভালো। এই সুশীলরাই কি গত ১৬ বছর স্বৈরাচারের নুন-ঘি খেয়ে ফ্যাসিবাদকে পাকাপোক্ত করেনি? আমরা তো সেটার বিরুদ্ধেই কথা বলেছি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই নেতা আরও লিখেছেন, ছাত্ররা দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছে প্রশাসনে ঘাপটি মেরে থাকা শেখ হাসিনার দোসরদের অপসারণ করে প্রকৃত দেশপ্রেমিকদের দায়িত্ব দেওয়ার জন্য। কিন্তু সুশীলগিরি দেখিয়ে সরকার সেটি না করার পরিণতি গতকাল (বুধবার) রাতে আমরা পেলাম।
তিনি আরও লিখেন, আমরা শেখ হাসিনাকে পালাতে বাধ্য করেছি একটা নতুন বাংলাদেশের জন্য। প্রশাসন লীগের হুমকি আর আগুন দেখার জন্য নয়। সরকারের কাছে অনুরোধ- এদের হাত থেকে প্রশাসন মুক্ত করেন। যদি না করেন তবে গণভবন আর আদালতের মতো সচিবালয় কেমন করে আওয়ামীমুক্ত করতে হয়, সেটা ছাত্র-জনতার ভালো জানা আছে।