হাসনাত আব্দুল্লাহর ফেসবুক পোস্টের জবাবে যা বললেন সময় টিভির চাকরিচ্যুতরা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৪ এএম
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ সময় টিভির পাঁচ সাংবাদিককে বরখাস্তের ঘটনায় আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনের প্রতিবাদ জানিয়ে বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন। এদিকে হাসনাত আব্দুল্লাহর পোস্টের পরিপ্রেক্ষিতে বিবৃতি দিয়েছেন ওই ৫ সাংবাদিক। বিবৃতিদাতারা হলেন- মো. আরিফুল সাজ্জাত, ওমর ফারুক, দেবাশীষ রায়, কামাল শাহরিয়ার ও বুলবুল রেজা।
সময় টিভি থেকে সম্প্রতি চাকুরিচ্যুত ওই পাঁচ সাংবাদিক বুধবার রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে বলেন, 'অবশেষে মুখ খোলার জন্য হাসনাত আব্দুল্লাহকে ধন্যবাদ। উনি যে সিটি গ্রুপের হেড অফিসে গিয়েছিলেন সেটি জানানোর জন্যও ধন্যবাদ। তবে সম্পাদকীয় নীতি বা সংবাদ নিয়ে কোন আপত্তি থাকলে প্রথমত সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমে প্রতিবাদ পাঠানো; প্রেস কাউন্সিল এমনকি তথ্য মন্ত্রণালয় কিংবা প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং বা গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনে যেতে পারতেন। হাসনাত তা করেননি। উপরোক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো কিংবা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বাইরে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান সিটি গ্রুপে যাওয়ার মানে কী?'
তারা আরও বলেন, 'এমনকি চাকরিচ্যুত কর্মীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোন ধরনের তথ্য-প্রমাণ ছাড়া মনগড়াভাবে চরিত্রহনন করে যেসব পোস্ট দেয়া হয়েছে, সেসব কেনো হচ্ছে তার উত্তর দিতে হবে হাসনাত ও তার টিমকে। এ ধরনের কার্যক্রম তো ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সময়ে আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে।'
তারা আরও বলেন, 'হাসিনা আমলে বিশেষ করে জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে সময় টিভির ভূমিকা সস্পর্কে দেশবাসী অবগত। এ নিয়ে কর্তৃপক্ষ তাদের মতো ব্যবস্থাও নিয়েছে। ৫ আগস্ট পরবর্তী পরিস্থিতিতে চ্যানেলটি সাময়িক বন্ধ থাকার পর, নতুন ব্যবস্থাপনায় সেটি পুনরায় সম্প্রচার শুরু করে। এরপর কর্মীদের নিরলস প্রচেষ্টায় স্বাধীন-বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার ফলে, পিছিয়ে থাকা অবস্থান থেকে আবারও শীর্ষস্থানে ফিরে আসতে সক্ষম হয়। কারা তালিকা করেছে এবং কেন করেছে সেটি জাতির সামনে তুলে ধরার জন্য ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি তারা আহ্বান জানান।
তারা বলেন, 'গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং এর কর্মীদের জীবন-জীবিকা রক্ষায় দায়িত্বশীলরা ভূমিকা রাখবেন, এটাই প্রত্যাশা করি। একইসঙ্গে, তালিকাটি কারা করেছে, কারা এটি প্রণয়নে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ মদদ দিয়েছে, কি উদ্দেশ্যে এটি করেছে; তা বের করতে আমরা হাসনাত আব্দুল্লাহর সক্রিয় সহায়তা প্রত্যাশা করছি৷'
বিবৃতিত আরও বলা হয়, 'আমরা মনে করি, হাসনাত আব্দুল্লাহর ভূমিকা ও সরকারের নির্লিপ্ততা দেশে স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থি। একইসঙ্গে এমন আচরণ, গণ-অভ্যুত্থানে পতিত সরকারের শাসনামল স্মরণ করিয়ে দেয়।'
সাংবাদিকেরা বিবৃতিতে চারটি দাবি জানান-
১. অবিলম্বে চাকুরিচ্যুত কর্মীদের পুনর্বহাল করতে হবে।
২. হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোকে স্বাধীন সাংবাদিকতা নিশ্চিত করতে হবে।
৩. জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে শুধু সময় টিভি নয়, সব গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে স্বাধীনভাবে তদন্ত করতে হবে।
৪. গণমাধ্যমের কর্মীদের কারও বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ থাকলে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দিতে হবে। তারা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।