দেশের গণতান্ত্রিক যাত্রাকে উৎসবমুখর করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাছির উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
এরই মধ্যে একটি সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনি সামগ্রী কেনার প্রক্রিয়া শুরু করতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
হালনাগাদ ও শক্তিশালী ভোটার তালিকা নিশ্চিত করতে মার্চের পরিবর্তে জানুয়ারিতে নাগরিকদের ঘরে ঘরে গিয়ে তথ্য সংগ্রহ অভিযান দ্রুত বাস্তবায়ন করার পরিকল্পনাও চলছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) সিইসির সভাপতিত্বে কমিশনের তাৎক্ষণিক বৈঠকে এসব সিন্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
বৈঠকে ভোটার তালিকা হালনাগাদ, নির্বাচনি এলাকার সীমানা নির্ধারণ, নির্বাচনের প্রয়োজনীয় সামগ্রী সংগ্রহসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়।
সুবিন্যস্ত ক্রয়ের সময়সীমা
ইসি মনে করে, সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়নের মাধ্যমে ছয় থেকে সাত মাসের মধ্যে সচিবালয় প্রয়োজনীয় সব উপকরণ নিশ্চিত করতে পারবে।
কর্মকর্তারা সময়সীমা মেনে চলার জন্য সূক্ষ্ম পরিকল্পনার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছেন।
বৈঠকে নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় মজুদ সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হয়। এখন পর্যন্ত ইসির রয়েছে স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স, অমোচনীয় কালির কলম, অফিসিয়াল এবং মার্কিং সিল, স্ট্যাম্প প্যাড, চার্জার এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস।
প্রত্যাশিত প্রয়োজনীয়তার বিপরীতে বিদ্যমান মজুদের পর্যালোচনা ক্রয় প্রক্রিয়াটির তাৎপর্যকে জোর দিয়েছে।
অমোচনীয় কালি, একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, যা অবশ্যই আমদানি করতে হবে। এটি সরবরাহের জন্য সাধারণত ৭০ দিন পর্যন্ত সময় দরকার হয়। তবে ইসি উল্লেখ করেছে যে কিছু ঠিকাদার অতীতে প্রক্রিয়াটি দ্রুত করেছে, যা একটি দক্ষ পরিবর্তনের আশা জাগিয়েছে।
নির্বাচনের সময়সীমার সঙ্গে মেলানো
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সম্প্রতি ইঙ্গিত দিয়েছেন, ২০২৫ সালের শেষের দিকে অথবা ২০২৬ সালের শুরুতে ১৩তম সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।
এর জবাবে সিইসি এ এম এম নাছির উদ্দিন ইসি কর্মকর্তাদের এই নির্ধারিত সময়সীমার সঙ্গে প্রস্তুতি সমন্বয় করার নির্দেশ দেন।
চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নির্বাচন কমিশনের সক্ষমতার ওপর আস্থা প্রকাশ করে সিইসি বলেন, 'প্রধান উপদেষ্টার প্রস্তাবিত সময়সীমা অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত থাকব।’
ভোটার তালিকা হালনাগাদ
নির্বাচন কমিশণ ভোটার তালিকার বার্ষিক হালনাগাদ ত্বরান্বিত করতে প্রস্তুত।
ঐতিহ্যগতভাবে, ২ জানুয়ারি একটি খসড়া তালিকা প্রকাশ করে জনগণের প্রতিক্রিয়া আহ্বান করা হয়। এরপর ২ মার্চ চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের আগে যেকোনো অভিযোগ নিষ্পত্তি করা হয়।
তথ্য সংগ্রহ অভিযানের প্রস্তাবিত আগাম শুরু সঠিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ভোটার তালিকা নিশ্চিত করতে ইসির অঙ্গীকারকে তুলে ধরে।
বৃহস্পতিবারের বৈঠকে চারজন নির্বাচন কমিশনার ও ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের সুষ্ঠু প্রস্তুতি নিশ্চিত করতে সম্মিলিত প্রচেষ্টার অঙ্গীকার করেছেন।