বঞ্চিত ৭৬৪ সাবেক কর্মকর্তা পদমর্যাদার সঙ্গে পাবেন আর্থিক সুবিধা

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৫ পিএম

আরো পড়ুন
আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে বঞ্চিত সরকারি ৭৬৪ সাবেক কর্মকর্তাকে পদমর্যাদা ও আর্থিক সুবিধা দেওয়া হবে। উপসচিব থেকে সচিব পর্যন্ত বিভিন্ন স্তরে এসব কর্মকর্তাকে ‘ভূতাপেক্ষ’ পদোন্নতির সুপারিশ করেছিল অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত পর্যালোচনা কমিটি। আজ রবিবার সচিবালয়ে মহার্ঘভাতা ও বঞ্চনা নিরসন কমিটির প্রতিবেদন নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোখলেস উর রহমান এ কথা জানান।
সচিবালয়ে জনপ্রশাসন সচিব যখন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন, তখন তার কার্যালয়ের সামনে বারান্দায় বেশ কিছুসংখ্যক বঞ্চিত কর্মকর্তা দাবি আদায়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলেন।
ড. মোখলেস উর রহমান বলেন, আমি নিজেও বঞ্চিত কর্মকর্তাদের নিরসন কমিটির একজন আবেদনকারী। আমাকে চুক্তিতে নিয়োগ দিয়েছে, এছাড়া আমি তো ওই কাতারেই। যখন ফাইনালি জিও হবে সেখানে আমার নামও থাকবে। আমাদের ঊর্ধ্বতন অফিস (প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়) থেকে যখন আমাদের কাছে এটা (সুপারিশ প্রতিবেদন) পাঠিয়ে নির্দেশনা দেবে, একটা নির্দেশনা লাগবে, তবে সরকার পজিটিভ।
ড. মোখলেস উর রহমান আরও বলেন, এটা অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত সময়ে আমি বলতে পারি আমাদের লেভেলে একদিনে ওখানে যাবে। আমরা সেটা করব। ওটা তো (সুপারিশ প্রতিবেদন) সিলগালা, আমাদের কাছে আসতে হবে। চাকরির কিছু বিধি-বিধান আছে, সেগুলো আমাদের মানতে হবে। সেগুলোর বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। এটা সিস্টেম এটা আমলাতন্ত্র তারপরও যাতে হ্যাসেল না হয়। আমি আবারো বলছি একদিনের মধ্যে আমাদের মন্ত্রণালয় করে (সুপারিশ বাস্তবায়ন) দেবে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বলেন, কমিটি বিস্তারিত প্রতিবেদন দিয়েছে। যারা পেয়েছে কি কারণে পেয়েছে, যারা পায়নি কি কেন পায়নি- তা উল্লেখ রয়েছে।
কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ৭৬৪ জনকেই পদোন্নতি দেওয়া হবে কি না- এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বলেন, তাদের মান-মর্যাদা দেওয়া হবে। ঠিক পদোন্নতি নয়। তাদের একটা পদ-পদবি দিয়ে জিও জারি করা হতো। সেই জিওর ভিত্তিতে হওয়া ফাইন্যান্সিয়াল জিও’র ভিত্তিতে তারা টাকা পাবে। সরকার এ বিষয়ে নীতিগতভাবে একমত, কিছুটা সময় লাগবে। আমরা ১৬ বছর বঞ্চিত ছিলাম ১৬ দিনে তো এটা হয়নি।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বলেন, তাদের (বঞ্চিত কর্মকর্তা) পদোন্নতি হবে না, পদমর্যাদা দেওয়া হবে। তাকে ওই পদে পদমর্যাদা দিয়ে জিও জারি করা হবে, আর এই হিসাবটা করবে এজি অফিস। তাদের সাইন্টিফিক নিয়ম আছে। এরপর হবে ফাইন্যান্সিয়াল জিও।সর্বশেষ যে বেনিফিট হবে, তিনি শেষ কোনো সিলিংয়ে গেলেন, ওইদিন থেকে ওই তারিখ থেকে তার পেনশন বেনিফিটটাও ওইভাবে হবে। মূল বেনিফিটটা তার পেনশনে হবে সারা জীবন।
ড. মোখলেস উর রহমান বলেন, আমরা গত ৫৩ বছরের মধ্যে এমন একটা সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিল। সরকার আন্তরিক এবং পজেটিভ। ক্যাডার কর্মকর্তাদের সুবিধা দেওয়া হচ্ছে, নিচের কর্মকর্তারা কি সরকারের অংশ নয়- এ বিষয়ে মোখলেস উর রহমান বলেন, ওই কমিটির যে কার্যপরিধি দিয়েছিল, সেটার বাইরে আমার বলা উচিত না। এটা যদি আরও আস্তে আস্তে বাড়ে, আমার মনে হয় বাড়তেই পারে।
উল্লেখ্য, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে গত ১০ ডিসেম্বর পদোন্নতিবঞ্চিত অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের আবেদন পর্যালোচনা কমিটি প্রতিবেদন পেশ করে। কমিটি সচিব পদে ১১৯ জন, গ্রেড-১ (সচিব মর্যাদা) পদে ৪১ জন, অতিরিক্ত সচিব পদে ৫২৮ জন, যুগ্মসচিব পদে ৭২ জন এবং উপসচিব পদে চারজন কর্মকর্তাকে ‘ভূতাপেক্ষ’ পদোন্নতি প্রদান করা যেতে পারে বলে সুপারিশে উল্লেখ করে।