সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার নন্দিরগাঁও, তোয়াকুল, রুস্তুমপুর, বিছনাকান্দি, পশ্চিম জাফলং, গোয়াইনঘাট সদর, লেঙ্গুড়া ও মধ্য জাফলং ইউনিয়নবাসীর একমাত্র চলাচলের রাস্তা সালুটিকর-গোয়াইনঘাট সড়ক।
উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের বাসিন্দারা উপজেলা সদর ও জেলা সদরের সঙ্গে সড়ক পথে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যমও এ সড়ক।
এলাকাবাসীর পাশাপাশি এ সড়ক দিয়ে দেশ-বিদেশি হাজার হাজার ভ্রমণ পিয়াসু পর্যটক বিছনাকান্দি ও পান্তুমাই বেড়াতে আসেন।
সড়কটি সংস্কারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ডিসিএল অ্যান্ড এমডিএইচের (জেভি) বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ থাকলেও এবারে প্রকাশ্যে উঠে এসেছে ‘সড়কের পেট কেটে’ রাস্তা ভরাটের অভিযোগ।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে সরেজমিনে এ অভিযোগের সত্যথা পাওয়া যায়। সেখানে গিয়ে দেখা যায় সড়কের পাশ থেকেই এক্সকেভেটর দিয়ে মাটি কেটে রাস্তা ভরাট করা হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা নন্দিরগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য আফতাব আলী, নিজাম উদ্দিন, সমাজসেবী আব্দুল হাসিম চৌধুরী জানান, সালুটিকর-গোয়াইনঘাট সড়কের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অংশ হচ্ছে দশগাঁও মসজিদের বাজার থেকে সালুটিকর বাজার পর্যন্ত। সড়কের ঝুঁকিপূর্ণ এ অংশ প্রতি বছর বন্যার পানিতে বেশ কয়েকবার তলিয়ে যায় এবং এ অংশে পানির স্রোত বেশি থাকে। বর্তমানে দামারী বিল এলাকায় এক্সকেভেটর দিয়ে রাস্তার পেট কেটে ভরাট করা হচ্ছে বৃষ্টি হলেই সেখানে রাস্তার অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে না।
রাস্তার পাশ থেকে এভাবে মাটি কাটার দৃশ্য দেখে পথচারী ও স্থানীয় এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
উপজেলা প্রকৌশলী অফিস সূত্রে জানা যায়, গোয়াইনঘাট উপজেলা সদর থেকে সালুটিকর বাজার পর্যন্ত সড়কটি সংস্কারের জন্য ৩টি প্রকল্পের মাধ্যমে ১৩ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারে সরকারের ব্যয় হচ্ছে প্রায় ৪০ কোটি টাকা। মূলত রাস্তায় মাটি ভরাট করার কথা অন্য কোনো স্থান থেকে মাটি এনে। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তা না করে রাস্তার পাশ থেকেই মাটি কেটে ভরাট করছেন। এটি নিয়মবহির্ভূত।
এ ব্যাপারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ডিসিএল অ্যান্ড এমডিএইচের (জেভি) স্বত্বাধিকারী দেলোয়ার হোসেন বলেন, রাস্তার পেট কেটে মাটি ভরাটের কোনো সুযোগ নেই। বিষয়টি আমি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি।
এ সড়ক সংস্কার কাজে এলজিইডির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপসহকারী প্রকৌশলী আজমীর শরীফ বলেন, রাস্তার পেট কেটে মাটি ভরাট করতে আমরা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নিষেধ করেছি। কিন্তু উনারা আমাদের কথা না শুনে তাদের মতো কাজ করছেন।
এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাট উপজেলা প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বলেন, রাস্তার পেট কেটে মাটি ভরাট করতে আমরা নিষেধ করেছি।
এ ব্যাপারে বক্তব্য নেওয়ার জন্য এই প্রতিবেদক সোমবার সন্ধ্যায় সিলেট জেলা এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী জেএম ফারুকের মোবাইলে ফোন করলে তিনি ক্ষুব্ধ হন এবং কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি।
এ ব্যাপারে সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ বলেন, রাস্তার পেট কেটে মাটি দিয়ে রাস্তা ভরাটের প্রশ্নই আসে না। রাস্তা নিরাপদ রেখে মাটি কাটার বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।