Logo
Logo
×

সংবাদ

ভারতের পরাজয় হয়েছে, নতুন বাংলাদেশ তারা মেনে নিতে পারবে না, তাহলে কী হবে

ডেস্ক রিপোর্ট

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৪৫ এএম

ভারতের পরাজয় হয়েছে, নতুন বাংলাদেশ তারা মেনে নিতে পারবে না, তাহলে কী হবে

বাংলাদেশে স্বৈরাচারী সরকারের পতনে ভারতের পরাজয় হয়েছে। রাজনৈতিক, কূটনৈতিক ও কৌশলগত পরাজয়। ভারত এই পরাজয় মেনে নিতে পারবে না। এটা স্বীকার করার সাহস তাদের নেই। বলেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।

তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশ' সম্পর্কে ভারতের নেতিবাচক মনোভাব থেকে বেরিয়ে আসা উচিত।

স্বৈরাচারী শাসনের পতনের পর নতুন বাংলাদেশের প্রথম ১০০ দিন নিয়ে টিআইবির পর্যবেক্ষণ তুলে ধরতে রাজধানীর ধানমন্ডিতে সংগঠনটির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব  কথা বলেন।

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে সব দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহায়তা ও সহযোগিতার ক্ষেত্রে নতুন দিক উন্মোচিত হয়েছে। আমরা আশা করছি ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের ইতিবাচক পরিবর্তনের পর ভারত ইতিবাচক ভূমিকা' পালন করতে পারছে না। কারণ ভারত রাজনৈতিক, কূটনৈতিক ও কৌশলগত পরাজয় মেনে নিতে পারছে না। কারণ ভারত এখনো বাংলাদেশকে সেই দৃষ্টিকোণ থেকে দেখছে, যা বাংলাদেশের স্বৈরতন্ত্রকে সমর্থন করে।

তিনি  আরও বলেন, বাংলাদেশে সম্ভাব্য অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির কিছু ক্ষেত্রে (ভারতের পক্ষ থেকে) ভারতের গণমাধ্যম অনুঘটকের ভূমিকা পালনের জন্য এটি বিশাল ঝুঁকি তৈরি করেছে।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, অনেকের ধারণা ছিল ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গন, জনগণ ও গণমাধ্যমে 'উদার চিন্তার' প্রচার হয়। ‘আমরা মনে করি, ভারত (সেই উদার চিন্তাভাবনা থেকে) বদলে গেছে।’

তিনি বলেন, ভারতীয় গণমাধ্যম বাংলাদেশকে যেভাবে তুলে ধরছে তা অন্তত ঝুঁকিপূর্ণ এবং অবশ্যই বাংলাদেশের জন্য 'বিরক্তির কারণ'। এটা আমাদের (বাংলাদেশ) জন্য বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। তবে আমরা এটাও মনে করি যে এটি ভারতের জন্য অত্যন্ত বিব্রতকর এবং লজ্জাজনক। তাই ভারতকে এ পথ থেকে সরে আসতে হবে।

তিনি ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, তারা সব সময় দরজা উন্মুক্ত রাখার পক্ষে। ‘আমরা সবসময় দরজা উন্মুক্ত রাখার কথা বলি। ভারত আমাদের সবচেয়ে বড় প্রতিবেশী। আমরা ভারতের সঙ্গে ইতিবাচক সম্পর্ক বজায় রাখতে চাই। এক্ষেত্রে ভারতের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’

বাংলাদেশের ক্রান্তিকালে ঝুঁকি রয়েছে উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ভারতের ভূমিকা ইতিবাচক এবং প্রতিটি ক্ষেত্রে খুবই নেতিবাচক হতে পারে। তিনি বলেন, 'এই ঝুঁকির কথা মাথায় রাখতে হবে।’

এর আগে অনুষ্ঠানে 'স্বৈরশাসনের পতনের পর প্রথম ১০০ দিনে নতুন বাংলাদেশ পর্যবেক্ষণ' শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন টিআইবির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো শাহজাদা এম আকরাম।

প্রতিবেদনে আকরাম বলেন, কর্তৃত্ববাদের পতনের বাস্তবতা মেনে নিতে এবং নিজেদের ভুল স্বীকার করতে ভারতের ব্যর্থতা এবং ভারতে ক্ষমতাচ্যুত সরকারের ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকাণ্ড ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়াকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে এবং সর্বোপরি ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের টানাপোড়েন সরকার ও বাংলাদেশের জন্য উদ্বেগজনক হতে পারে।

তিনি বলেন, ভারত সরকার, রাজনীতিবিদ ও গণমাধ্যম গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচারী সরকারের পতনের বাস্তবতা মেনে নিতে ব্যর্থ হয়েছে।

তিনি বলেন, ভারত বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, বিশেষ করে হিন্দুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং ভারতীয় গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উদ্দেশ্যমূলক ভুল তথ্য ও গুজব ছড়াচ্ছে।

বাংলাদেশে জোরালো প্রতিবাদ সত্ত্বেও 'সীমান্ত হত্যা' অব্যাহত রয়েছে বলে মন্তব্য করেন টিআইবির এই কর্মকর্তা।

প্রতিবেদনে তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোভাব ইতিবাচক।

তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, পাকিস্তান, রাশিয়া, চীন, ইরান, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা বাংলাদেশের শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক উত্তরণের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেছে।’

তিনি বলেন, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আর্থিক ও অন্যান্য সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন টিআইবির নির্বাহী ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খায়ের, রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ডিরেক্টর মুহাম্মদ বদিউজ্জামান ও টিআইবির আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন্স ডিরেক্টর মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম।

Logo

প্রধান কার্যালয়: ৬০৯০ ডাউসন বুলেভার্ড, নরক্রস, জর্জিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন