জুলাই-আগস্টের আরেক যোদ্ধা শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র মো. আব্দুল্লাহ তিন মাস মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে অবশেষে হার মানলেন। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৭টায় রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে।

আবদুল্লাহর বাবা আব্দুল জব্বার জানান, আবদুল্লাহ ৫ আগস্ট তাঁতীবাজার এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়। প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিএমএইচে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ সকালে মারা যায়। 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্বাস্থ্য বিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্যসচিব তারেকুল ইসলাম তার মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, আবদুল্লাহর বাড়ি যশোরের বেনাপোল। আন্দোলনের শুরু থেকেই সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন তিনি। আজ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।

তারেকুল ইসলাম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আমাদের ভাই, সহযোদ্ধা আব্দুল্লাহ আজ শহীদ হয়ে গেলেন। ইন্না-লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। শহীদ আব্দুল্লাহ ৫ আগস্ট বিজয়ের পর সন্ধ্যা সাতটার দিকে গুলিবিদ্ধ হন। ঠিক যে সময়ে ঢাকার কোটি মানুষ বিজয় উদযাপনে ব্যস্ত ছিলেন, সে সময়ে আব্দুল্লাহ মাথায় গুলি নিয়ে তিন ঘণ্টা রাস্তায় পড়ে ছিলেন। একপর্যায়ে কেউ তাকে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালে নেয় এবং পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেল কলেজে আনা হয়।’

তারেকুল ইসলাম জানান, কপালের মাঝ বরাবর গুলি লাগলেও সৌভাগ্যক্রমে অল্পের জন্য মস্তিষ্ক রক্ষা পায় তার। ওই দিন রাত ৩টায় সার্জারি শুরু হয়ে ভোর ছয়টায় শেষ হয়। অপারেশন সাকসেসফুল হলে এক পর্যায়ে বেশ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যান আব্দুল্লাহ। কিন্তু কিছুদিন পরেই তার প্রচণ্ড মাথাব্যথা শুরু হয়। আবার ঢাকা মেডিকেলে আনা হয়। চিকিৎসকরা তার মাথায় ইনফেকশন আবিষ্কার করেন। ফের সার্জারি। কিন্তু তেমন উন্নতি লক্ষ্য না করতে পেরে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সহায়তায় তাকে ২২ আগস্ট ঢাকা সিএমএইচে স্থানান্তর করা হয়।

তারেকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে কিছুটা উন্নতি হলেও কিছুদিন পরেই তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া লাগে। এরপর থেকে আজ শহীদ হওয়ার আগ পর্যন্ত লাইফ সাপোর্টেই ছিলেন আব্দুল্লাহ। আল্লাহ আমাদের শহীদ ভাই আব্দুল্লাহকে কবুল করে নিন। পরিবারের সাথে আলোচনা চলছে। অতিসত্বর আলোচনা সাপেক্ষে তার জানাজার সময় নির্ধারণ করে জানিয়ে দেওয়া হবে। জানাজা হবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে।’