ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছবি হাতে গ্রেপ্তার কয়েকজনের ছবি
বাংলাদেশে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকদের ধরপাকড় বা দমনপীড়ন করা হয়নি বলে নিশ্চিত করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের ফ্যাক্টচেকিং ফেসবুক পেইজে জানায়, ছাত্রনেতৃত্বাধীন গণআন্দোলনের মাধ্যমে আগস্টে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে কিছু ভারতীয় পত্রিকা ‘আক্রমণাত্মকভাবে ভ্রান্ত তথ্য ছড়াচ্ছে’। তারা বিপ্লবের পরে সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতার সংবাদ অতিরঞ্জিত করেছে। আওয়ামী লীগের সমর্থকদের আজকের ধরপাকড়ের সঙ্গে সম্পর্কিত তথ্য প্রচারের ক্ষেত্রে একইভাবে মিথ্যাচার করছে।
রবিবার রাজধানীতে উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে আওয়ামী লীগের কয়েক ডজন কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এই বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ একটি বিবৃতি দিয়েছে।
প্রেস উইং জানায়, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে কয়েকজনের হাতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছবি ছিল। পলাতক আওয়ামী লীগ নেতা শেখ হাসিনা তার সমর্থকদের গ্রেপ্তার এড়াতে ঢাল হিসেবে ট্রাম্পের ছবি ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
প্রেস উইংয়ের দাবি, গ্রেপ্তারকৃতরা পুলিশকে জানিয়েছে, তারা মার্কিন রাজনীতি অনুসরণ করে না এবং শুধু হাসিনার নির্দেশে ট্রাম্পের ছবি নিয়ে বেরিয়েছিল।
ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে গতকালের বাংলাদেশের ঘটনাগুলো সম্পর্কে পুরোপুরি ভুল রিপোর্ট করেছে। তারা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে গুলিস্তানের জিরোপয়েন্টে নূর হোসেন দিবস (১০ নভেম্বর) উপলক্ষে অনুষ্ঠিত সমাবেশকে 'ট্রাম্প সমর্থকদের' সমাবেশ হিসেবে বর্ণনা করেছে। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্পের বিজয় উদযাপন করতে এসেছিলেন তারা।
বাংলাদেশে কোনো গোষ্ঠী নিজেদের ‘ট্রাম্প সমর্থক’ হিসেবে পরিচয় দেয়নি বা অতীতে তার সফলতা উদযাপন করেনি। এছাড়া আওয়ামী লীগের নূর হোসেন দিবসের কর্মসূচির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের বিজয় উদযাপনের কোনো বিষয় উল্লেখ ছিল না।
তবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি নির্দেশনা দিয়েছিলেন। সেটি প্রেস উইংয়ের বিবৃতিতে সংক্ষেপে উল্লেখ করা হয়েছে। তাতে বলা হয়, আওয়ামী লীগকর্মীদের রবিবারের অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা ও বঙ্গবন্ধুর পোস্টারের পাশাপাশি ট্রাম্পের পোস্টারও বহন করতে হবে। বিশেষভাবে ট্রাম্পের পোস্টারগুলো পুলিশি কার্যক্রম থেকে নিজেদের রক্ষা করতে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করতে হবে।
আওয়ামী লীগের কর্মীদের এই ঘটনার ছবি তোলার এবং তাদের নেতাদের কাছে পাঠানোর নির্দেশ ছিল, যাতে সেগুলো ট্রাম্পের কাছে পাঠানো যায়। এসব যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে উসকে দেওয়ার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে বলে দাবি প্রেস উইংয়ের।
এই নির্দেশনা-সম্বলিত একটি কল রেকর্ড গত সপ্তাহে ফাঁস হয়। যদিও এই রেকর্ডিংটির সত্যতা স্বাধীনভাবে যাচাই করা যায়নি, তবে আওয়ামী লীতের অনেক কর্মী পরে একই নির্দেশনা অনুসরণ করে গ্রেপ্তার হওয়ায় এই রেকর্ডিংটির সত্যতা প্রমাণিত হয়।