ঢাকাসহ সারাদেশে ১৯১ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন
ছবি: সংগৃহীত
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে ১৯১ প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন করা হয়েছে। আজ রবিবার (১০ নভেম্বর) বিজিবির সদর দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হয়। এরপর প্রকাশ্যে কোনো কর্মসূচি পালন করেনি আওয়ামী লীগ। ১০ নভেম্বর নূর হোসেন দিবস উপলক্ষে আজ দুপুর ৩টায় রাজধানীর গুলিস্তানের জিরো পয়েন্টে নেতা-কর্মীদের জড়ো হয়ে বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি দেয় দলটি।
এদিকে, আওয়ামী লীগের এই কর্মসূচিকে প্রতিহতের ঘোষণা দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। ফ্যাসিবাদ প্রতিরোধ মঞ্চের ব্যানারে দুপুর ১২টায় গুলিস্তানের জিরো পয়েন্টে ‘পতিত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের বিচারের দাবিতে গণজমায়েত’ শিরোনামে কর্মসূচি দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা।
শনিবার (৯ নভেম্বর) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টের মাধ্যমে এই কর্মসূচির ঘোষণা দেন। পোস্টে তিনি একটি ডিজিটাল পোস্টারও যুক্ত করে দিয়েছেন। যেখানে দুপুর ১২টায় জিরো পয়েন্টে গণজমায়েতের কথা বলা হয়েছে।
এর আগে শুক্রবার (৯ নভেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেখ হাসিনার ‘কণ্ঠে’ নতুন একটি ফোনালাপ ফাঁস হয়। ওই ফোনালাপে শেখ হাসিনার কণ্ঠের মতো একজনকে ১০ নভেম্বর নূর হোসেন দিবস উপলক্ষে দলীয় নেতাকর্মীদের ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছবি হাতে মিছিল বের করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
অডিওতে বলা হয়, মিছিলে তাদের হাতে ট্রাম্পের ছবি থাকবে। এতে যদি কেউ যদি বাধা দেয়, কোনো হামলা করে। তাহলে তো সেটা ট্রাম্পের ছবিতে হামলা হবে। সেই ছবি তোলার জন্য আলাদা লোক থাকবে।
অডিওতে ‘শেখ হাসিনা’ বলেন, সেই হামলার ছবি আমি ট্রাম্পের কাছে পাঠাব। ট্রাম্পের সঙ্গে আমার ভালো যোগাযোগ আছে। বাধা দেওয়ার ছবি ট্রাম্পকে পাঠিয়ে বলা যাবে দেখো ইউনূস সরকার কী করছে। সবচেয়ে বড় স্বৈরাচার তো ইউনূস। ২৫০ জন এসআইয়ের (ক্যাডেট সাব-ইন্সপেক্টর) চাকরি দিল না, তাদের বের করে দিল। মিছিলে ভালো লোক জমায়েত যেন হয়, সে ব্যবস্থা করবা। মিছিলে নূর হোসেনের ছবি থাকবে। ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’ লেখা প্লেকার্ড রাখবা। আমাদের অনেক ঘরবাড়ি, দোকানপাট পোড়ানো হয়েছে। এর তথ্য বের করতে হবে। আমরা সব হিসাব কড়ায়-গণ্ডায় করে নেব।
এদিকে, ওই ফোনালাপের পর গতকাল (৯ নভেম্বর) আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে নূর হোসেন দিবস উপলক্ষে আজ গুলিস্তানের জিরো পয়েন্টে বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দেওয়া হয়। এতে নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণের আহ্বান জানানো হয়।
অন্যদিকে, আওয়ামী লীগের এই ঘোষণার পর তাদের প্রতিরোধে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম কড়া হুঁশিয়ারি দেন। গতকাল দুপুর ১২টা ৮ মিনিটে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে তিনি লিখেন, বর্তমানে আওয়ামী লীগ একটি ফ্যাসিবাদী দল। বাংলাদেশে প্রতিবাদ করার মতো দলটির কোনো সুযোগ নেই। গণহত্যাকারী ও স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার নির্দেশে কেউ সভা, সমাবেশ ও মিছিলের চেষ্টা করলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তা কঠোরভাবে মোকাবিলা করবে।
অন্তর্বর্তী সরকার কোনো সহিংসতা বা দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভঙ্গের প্রচেষ্টাকে বরদাশত করবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন শফিকুল আলম।
এছাড়া আওয়ামী লীগের আহুত কর্মসূচির ব্যাপারে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম এই সমন্বয়ক ফেসবুকে লিখেন, গণহত্যাকারী ও নিষিদ্ধ সংগঠনের কেউ কর্মসূচি করার চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা নেবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।