হাসিনার ছবি ও উদ্ধৃতিগুলো বাদ
পাঠ্যবইয়ে ‘স্বাধীনতার ঘোষক’ জিয়াউর রহমান, সাঈদ-মুগ্ধও থাকছেন
ষষ্ঠ থেকে ৯ম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় পাঠ্যবইয়ে যুক্ত হচ্ছে জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা। সেইসঙ্গে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে নিহত আবু সাঈদ ও মুগ্ধর গল্প। একই সঙ্গে পাঠ্যবইয়ের পেছনের পৃষ্ঠায় শেখ হাসিনার ছবি ও উদ্ধৃতিগুলো বাদ দেওয়া হবে। এর পরিবর্তে চিরন্তন কিছু বাণী যুক্ত করা হচ্ছে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড এ কথা জানিয়েছে। এরই মধ্যে বইয়ের পরিমার্জন খসড়া সম্পন্ন হয়েছে, যা চূড়ান্ত হবে আগামী সপ্তাহেই।
ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকারের টানা ৩ মেয়াদের শাসনামলে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে এক কেন্দ্রীকরণের অভিযোগ ইতিহাসবিদদের। তাদের মতে, মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা অনেক বীরকে বঞ্চিত করা হয়েছে।
বেসরকারি ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের ওয়েব সংস্করণে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পাঠ্যবইয়ে পরিমার্জনের কাজ শুরু করে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড। পরিমার্জনের খসড়ায় বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় বইয়ে বলা হচ্ছে, ২৬ শে মার্চ মেজর জিয়া প্রথমবার চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। পরের দিন ২৭ শে মার্চ তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে পুনরায় স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। সেই সঙ্গে তাজউদ্দিন আহমেদ, মাওলানা ভাসানীসহ মুক্তিযুদ্ধে সবার অবদান সংযুক্ত করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক রিয়াজুল হাসান বলেন, ইতিহাসের কিছু বিষয় ছিল, যেখানে অনেকের অবদান খুব ভালোভাবে উঠে আসেনি। আবার অনেকের অতি মূল্যায়ন করা হয়েছে, অতি বন্দনা করা হয়েছে। সেগুলোকে যথাযথভাবে স্থান দেওয়ার জন্য এই পরিমার্জন।
সেইসঙ্গে মাধ্যমিকের বাংলা সাহিত্য বইয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত আবু সাঈদ ও মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধের অবদান যুক্ত হচ্ছে। কিছু বইয়ের প্রচ্ছদে বা কোনো কোনো অংশে স্বৈরাচারবিরোধী গ্রাফিতি বা দেয়ালে আকা ছবি যুক্ত হচ্ছে।
অধ্যাপক রিয়াজুল হাসান বলছেন, পরিমার্জন আমাদের শেষ, এখন কিছু ঘষামাজা চলছে। আগামী ৭ তারিখের মধ্যে সবকিছু শেষ হবে।
শিক্ষা গবেষকরা বলছেন, বইয়ের পরিমার্জনের কাজ বিষয়ভিত্তিক বিশেষজ্ঞ দিয়ে করাতে হবে। সেইসঙ্গে ইতিহাসে যার যে অবদান, তা নিশ্চিত করতে হবে।