সমালোচনার মুখে রংপুরে জামায়াতের হিন্দু শাখা সভাপতির পদত্যাগের ঘোষণা
রংপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৫৬ পিএম
রংপুরে জামায়াতে ইসলামীর হিন্দু শাখা কমিটি গঠন নিয়ে এলাকাসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় শুরু হয়। নানান শ্রেণিপেশার মানুষ এতে প্রতিক্রিয়া জানান। কেউ কেউ বিষয়টি ইতিবাচক হিসেবে দেখলেও হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে বিতর্কের সৃষ্টি হয়।
সব মিলিয়ে তাই সভাপতির দায়িত্ব নেওয়ার একদিনের মাথায় আজ রবিবার (২৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় নবগঠিত কমিটির সভাপতি ভবেশ চন্দ্র বর্মণ পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
নবগঠিত কমিটির সভাপতি ভবেশ চন্দ্র বর্মণ বলেন, বেশি কিছু বলতে পারব না-খুব চাপে আছি। আজকেই আমি পদত্যাগ করব।
এর আগে কমিটি গঠনের পরদিন গতকাল শনিবার বিষয়টি প্রকাশ পেলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপক আলোচিত-সমালোচিত হচ্ছে। স্থানীয়রা বলছেন বিষয়টি নিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদ তৈরি হয়েছে।
এ ব্যাপারে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত থাকা তাপষ বাবু নামে একজন বলেন, এখানে কোনো চাপ দেখছি না। বিভেদেরও কারণ দেখি না। তবে কমিটির নবনির্বাচিত সভাপতি ভবেশ চন্দ্র বর্মণ কেনো পদত্যাগ করতে চেয়েছেন তা আমার জানা নেই।
হৃদয় বাবু নামের আরেকজন বলেন, ৫ আগস্টের পর দেশের প্রেক্ষাপটে মুলত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতেই মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু ওই সভায় হঠাৎ করেই কোনো কমিটি গঠন করাটা ঠিক হয়নি।
নবগঠিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজন চন্দ্র দাস বলেন, জামায়াতের সঙ্গে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকদের যোগাযোগ, বিপদ-আপদে পাশে থাকা, বিভিন্ন সাহায্য-সহযোগিতার জন্যই কমিটি করা হয়েছে। যা নিয়ে নানান কথা উঠছে। তবে এই কমিটি থাকবে কি না, পরবর্তীতে তাদের সঙ্গে বসে জানানো হবে।
এদিকে, পীরগাছায় ‘হিন্দু শাখা কমিটি’ গঠন নিয়ে উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা মোস্তাক আহমেদ দুঃখ প্রকাশ করে বলেছেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার লক্ষ্যেই মুলত হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের সঙ্গে সেদিন মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়েছিল। যোগাযোগ রক্ষার সুবিধার্থেই সেখানে তাদের কয়েকজন প্রতিনিধির নাম ঘোষণা করা হয়। তবে এমন কমিটি গঠনের আগে আরও সিরিয়াস হওয়া উচিত ছিল। প্রয়োজনে তাদের নিয়ে আমরা আবারো বসব।
এর আগে, গত শুক্রবার রাতে পীরগাছা উপজেলা জামায়াতের অফিসে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে জামায়াতের হিন্দু শাখা কমিটি গঠন করা হয়। এতে দুই শতাধিক হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন উপস্থিত ছিলেন। পরে সর্বসম্মতিক্রমে মিঠাপুকুরের মির্জাপুর বছির উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক ভবেশ চন্দ্র বর্মণ সভাপতি, ওষুধ ব্যবসায়ী বিজন চন্দ্র দাস সাধারণ সম্পাদক, সহ-সভাপতি দেবী চৌধুরানী ডিগ্রি কলেজের প্রদর্শক তাপস চন্দ্র রায়, সহ-সম্পাদক কিসামত ঝিনিয়া সনাতন সংঘের সভাপতি সুধারঞ্জন বর্মণ ও অর্থ-সম্পাদক দেউতি স্কুল এন্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক প্রভাষ চন্দ্র বর্মণের নাম ঘোষণা করা হয়। পর্যায়ক্রমে বাকী সদস্যদেরও নাম ঘোষণা করা হবে বলে আয়োজকরা জানান।