আন্দোলনে গুলিতে নিহত সেই নাফিসা ৪.২৫ পেয়ে উত্তীর্ণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:৪৩ পিএম
১৭ বছর বয়সী কলেজ শিক্ষার্থী নাফিসা বাড়িতে না জানিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিতো। আন্দোলনে সব সময় ছিল সম্মুখ সারিতে। গত ৫ আগস্ট দুপুরে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের দিন সাভারের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন থানা রোডে পুলিশের গুলিতে মারা যায় সে। আজ মঙ্গলবার এইচএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশ করা হলে জানা যায়, নাফিসা ৪.২৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে।
নাফিসার বাবা আবুল হোসেন বলেন, আমার মেয়ের যাতে লেখাপড়া নষ্ট না হয়, সেই জন্য রান্না করতে দিতাম না। চায়ের দোকান দিয়ে যা দুই টাকা উপার্জন করেছি, নাফিসার লেখাপড়ায় দিয়েছি। মেয়ে আমাকে না জানিয়ে ১৮ জুলাই থেকে উত্তরায় যেত আন্দোলনে। সারাদিন দোকানে থাকায় খোঁজ পেতাম না। প্রতিবেশীর কাছে জেনে মেয়েকে ঘরে আটকাই। আন্দোলনে যাওয়া নিয়ে খুব রাগ করেছিলাম। তবে মেয়ে আমাকে ফাঁকি দিছে।
আবুল হোসেন আরও বলেন, ৩ আগস্ট বলল, লেখাপড়া নেই, ঘরে থেকে দমবন্ধ লাগছে। সাভারে মামার বাসায় বেড়াতে যাবে। ভেবেছিলাম, সাভারে গেলে আন্দোলনে যাবে না। সাভারের বক্তারপুরে মামার বাসায় গিয়ে পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ করে আবার আন্দোলনে যায়। ৪ আগস্ট দুপুরে মেয়েকে ফোন করলে গোলাগুলির শব্দ শুনি। মেয়ে তখন স্বীকার করে, আন্দোলনে আছে। আর পিছিয়ে আসার সুযোগ নেই।
আবুল হোসেন বলেন, ৫ আগস্ট থানা রোডে যায় নাফিসা। তারপর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। বেলা ১টা ৪৫ মিনিটে ফোনে বলল, শেখ হাসিনা পলাইছে। আব্বু, আমি গণভবন যামু। আজ আমারে বাধা দিও না। আমি বললাম, শেখ হাসিনা পলাইছে, তাতে তর বাপের কী! তর বাপে করে চায়ের দোকানদারি। রাগ করে ফোন রেখে দিই। বেলা ২টার দিকে মেয়ের ফোন থেকে এক ছেলে জানায়, আমার মেয়ের বুকে গুলি লাগছে। মেয়েটা সোয়া ২টার দিকে আমারে ফোন করে বলে, আব্বু আমি মরে যামু। লাশটা নিও। এটাই মেয়ের শেষ কথা ছিল।