Logo
Logo
×

সংবাদ

বহিষ্কার, গ্রেপ্তার ও আটকের পরও থামছে না চাঁদাবাজি

ডেস্ক রিপোর্ট

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:২২ পিএম

বহিষ্কার, গ্রেপ্তার ও আটকের পরও থামছে না চাঁদাবাজি

ছবি: সংগৃহীত

স্বৈরাচারের পতনের পর কিছুদিন শান্ত থাকলেও আবারও বেপরোয়া হয়েছে চাঁদাবাজ সিন্ডিকেট। এসব দমনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি তৎপর রয়েছে রাজনৈতিক দলগুলোর কেন্দ্রীয় কমিটিও। কিন্তু আটক গ্রেপ্তার এবং বহিষ্কার করেও কোনো কোনো এলাকায় থামছে না চাঁদাবাজি। রাজধানীর উত্তরার বিভিন্ন বাজার, কারখানা, ময়লা, ডিস-ইন্টারনেট, ফুটপাত ও পরিবহন খাতে চাঁদাবাজির অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তর সূত্র জানিয়েছে, এ পর্যন্ত ১ হাজার ২৩ জন নেতার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৫২৩ জনকে কারণ দর্শানোর নেটিশ, ৪৩৭ জনকে বহিষ্কার, ২৪ জনের পদ স্থগিত, ৩৫ জনকে সতর্ক এবং ৪ জনকে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে ভুক্তভোগী ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় লিখিত অভিযোগও করেছেন। সম্প্রতি সেনাবাহিনী, র‌্যাব অভিযান চালিয়ে উত্তরা এলাকা থেকে কয়েকজন চাঁদাবাজকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে গ্রেপ্তারকৃতদের অনেকেই জিজ্ঞাসাবাদে উত্তরার সাবেক যুবদল নেতার অনুসারী বলে জানিয়েছেন।  

ঢাকা-১৮ আসনের উপনির্বাচনে বিএনপি থেকে প্রার্থী ছিলেন যুবদল নেতা এস এম জাহাঙ্গীর। ওই নির্বাচনে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভোট পেয়েছিলেন তিনি। বর্তমানে তিনি স্থানীয়দের সঙ্গে সাক্ষাৎ করছেন ও নিজের নির্বাচনী এলাকায় গণসংযোগ অব্যাহত রেখেছেন। 

এদিকে, ৫ আগস্টের পর ওই এলাকায় অনৈতিক কর্মকাণ্ড ও দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করায় বিএনপি থেকে বহিষ্কার হয়েছেন ৩ নেতা। এরা হলেন- উত্তরা পশ্চিম থানা বিএনপির সদস্য সচিব আজমল হুদা মিঠু। তার দখল ও চাঁদাবাজিসহ বার ও ক্লাব পাড়ার দখল নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দল তাকে বহিষ্কার করে। 

পশ্চিম থানা যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক মিলন মিয়াকে বাজার ও ফুটপাত দখলের অভিযোগে বহিষ্কার করে যুবদল। ৫ আগষ্টের পর তার বিরুদ্ধে নানা দখলের সঙ্গে জড়িত অন্তত তিনটি মামলা হয়। গত ৬ আগষ্ট যৌথবাহিনী তাকে গ্রেপ্তার করে চালান দেয়। 

এছাড়া কিশোর গ্যাং, অবৈধ দোকান বসানো এবং আওয়ামী লীগের লোকদের কাছ থেকে মোটা টাকা নিয়ে সেল্টার দেওয়ার দায়ে তিন মাসের জন্য দল থেকে বহিষ্কার করা হয় আলাউদ্দিন সরকার টিপুকে।

অন্যদিকে, বিএনপি নেতা হেলাল উদ্দিন তালুকদার ও বাবলুর বিরুদ্ধে অন্যের গরু জোর করে নিজ খামারে নিয়ে নেওয়াসহ উত্তরার রাজলক্ষ্মীসহ বিভিন্ন মার্কেট কমিটি দখলে নেওয়ার জোরালো অভিযোগ আছে। কিশোর এবং ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে মাঠে সক্রিয় থাকা লোকদের নিজ দলে নিয়ে এলাকার ময়লা, ডিস ইন্টারনেট ব্যবসা দখলের অভিযোগও আছে তাদের বিরুদ্ধে। 

মহানগর বিএনপির সদস্য সালাম সরকারের বিরুদ্ধে দক্ষিণ খানের ময়লা ডিসসহ বির্তকিত জায়গা ও মার্কেট দখলের অভিযোগ আছে। ৫০ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ডিস আতাউরকে দিয়ে এসব কাজ সামলাচ্ছেন বলে অভিযোগ আছে। এছাড়া তুরাগ যুবদলের আহ্বায়ক মামুন, ছাত্রদলের জাকির, স্বেচ্ছাসেবক দলের উত্তরের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এ খোকন, উত্তরখানের আহসান, ৫৩ নং ওয়ার্ড সভাপতি কবির, খিলক্ষেতের মোবারকসহ অনেক নেতা নানা অনিয়ম ও চাঁদার অর্থের উৎস নিয়ে ব্যস্ত বলে অভিযোগ রয়েছে। এরাও জাহাঙ্গীরের অনুসারী বলে জানা গেছে। 

সম্প্রতি অবশ্য এস এম জাহাঙ্গীর নিজে বাদী হয়ে বিএনপির এক নেতার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। কিন্তু সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া দুটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে, ৫৩ নং ওয়ার্ড শ্রমিক লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রনি এবং উত্তরা কিশোরগ্যাংয়ের মোস্ট ওয়ান্টেড আসামি ছোটন যোগ দিয়েছেন জাহাঙ্গীরের সঙ্গে। অবশ্য এসব অভিযোগের ব্যাপারে জাহাঙ্গীরের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। 

সম্প্রতি বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘বিএনপির নামে কেউ কেউ দখলদারি, চাঁদাবাজি করতে পারে। কিন্তু আমরা ইতিমধ্যে বিএনপিসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের প্রায় চার শর বেশি বহিষ্কার করেছি, অনেকের পদ স্থগিত করা হয়েছে। কই মিডিয়ায় তো এসব লেখা হয় না। তারেক রহমানের নির্দেশে দখলদারিত্বে যার নাম পাওয়া যাচ্ছে, সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

পুলিশের উত্তরা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) রওনক জাহান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, চাঁদাবাজ, কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে পুলিশ তৎপর রয়েছে। কোনো ভুক্তভোগী কিংবা ব্যবসায়ী অভিযোগ করলে চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অপরাধী কোন দলের সেটি বিবেচনা করা হবে না।

Logo

প্রধান কার্যালয়: ৬০৯০ ডাউসন বুলেভার্ড, নরক্রস, জর্জিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন