লেবাননে ১০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত
ইসরায়েলের হামলা
লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি বলেছেন, ইসরায়েলের অব্যাহত বিমান হামলার কারণে দেশজুড়ে দশ লাখের মতো মানুষ ইতোমধ্যেই ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। এটাই সবচেয়ে বড় বাস্তুচ্যুত হওয়ার ঘটনা।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বৈরুতে হেজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরাল্লাহ হত্যার দুই দিন পর রবিবারও বিমান হামলায় ৫০ জন নিহত হয়েছে। অন্যদিকে হেজবুল্লাহও ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চল লক্ষ্য করে আরও রকেট ছুঁড়েছে।
ওদিকে ইসরায়েল জানিয়েছে, তারা ইয়েমেনে ইরান সমর্থিত হুথিদের সামরিক স্থাপনা লক্ষ করে বড় ধরনের বিমান হামলা চালিয়েছে।
রবিবার হেজবুল্লাহ তাদের শীর্ষ সামরিক কমান্ডার আলী কারাকি এবং একজন সিনিয়র ধর্মীয় নেতা শেখ নাবিল কাউক ইসরায়েলের বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে।
লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি বলেছেন, বিমান হামলার কারণে বৈরুত ও দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্ত এলাকাসহ দেশের অন্যান্য স্থানে মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে পালতে বাধ্য হচ্ছে।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ মানুষের প্রয়োজন অনুযায়ী সহায়তার দেয়ার ক্ষেত্রে সংগ্রাম করছে। আশ্রয় শিবির ও হাসপাতালগুলোতে চাপ বাড়ছে বলে লেবানন থেকে সংবাদদাতারা জানাচ্ছেন।
২৫ বছর বয়সী আয়া আয়ুব গণমাধ্যমকে বলেছেন, তাদের ছয় সদস্যের পরিবারের সাথে তাকেও বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলীয় তাহউিইটেট আল ঘাদির শহরতলির বাড়ি ছাড়তে হয়েছে। কারণ সেখানে অবস্থান করাটা বিপজ্জনক হয়ে উঠেছিলো।
তার বাড়ির আশেপাশে সব ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে এবং তিনি এখন বৈরুতের আরেকটি বাড়িতে আরও ষোল জনের সাথে অবস্থান করছেন। তিনি বলেন, আমরা শুক্রবার ছেড়ে আসি এবং যাওয়ার কোনো জায়গা ছিলো না। রাত ২টা পর্যন্ত রাস্তায় ছিলাম। এরপর একদল ব্যক্তি আমাদের সহায়তা করে একটি নির্মাণাধীন আবাসিক ভবনে নিয়ে আসে। রাতে মোমবাতি নিয়ে বাস করতে হচ্ছে। খাবার ও পানি আনতে হচ্ছে বাইরে থেকে।
৩৪ বছর বয়সী সারা তোহমাজ পেশায় সাংবাদিক। তিনি বলেছেন, তাকে গত শুক্রবার বৈরুতের কাছে তার বাড়ি থেকে তার মা ও দুই সহোদরসহ বেরিয়ে আসতে হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘গাড়িতে সিরিয়া হয়ে আমাদের জর্ডানে আসতে ১০ ঘণ্টা সময় লেগেছে। আমি মনে করি আমরা ভাগ্যবান যে জর্ডানে আমাদের থাকার মতো জায়গা আছে। সেখানে মায়ের দিকে আত্মীয়রা আছে। পরে কী হবে আমরা জানি না এবং আবার কখন ফিরতে পারবো তাও জানি না।
এর আগে ২০২৩ সালের ৮ অক্টোবর আন্তঃসীমান্ত লড়াই বেড়ে গিয়েছিলো। হামাস ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালানোর পর তখন ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে হেজবুল্লাহ ইসরায়েলকে লক্ষ করে রকেট ছুঁড়েছিল।
এরপর থেকে হেজবুল্লাহ যোদ্ধাসহ শত শত মানুষ মারা গেছে এবং উভয়পক্ষে লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। সূত্র: বিবিসি