ঢাবি ও জাবিতে পিটুনিতে নিহতের ঘটনায় নাগরিক কমিটির নিন্দা
পুরোনো ছবি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) পৃথক দু’টি গণপিটুনিতে দুইজন ব্যক্তি নিহত হওয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক কমিটি।
আজ বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সংবাদমাধ্যমে দলটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিনের পাঠানো এক বিবৃতিতে এই নিন্দা জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, পত্র-পত্রিকার বরাতে দেখা যাচ্ছে, হত্যাকাণ্ডের সময় এ দু’টি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন নিরব ও নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উপস্থিতিতেই পুরোনো ফ্যাসিবাদি কায়দায় নির্যাতন করে প্রক্টরিয়াল বডির কাছে হস্তান্তর এবং পরবর্তীতে থানায় প্রেরণের ঘটনা ঘটেছে। উপরোক্ত দু’টি ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি কোনোভাবে দায় এড়াতে পারেন না। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে ফ্যাসিবাদি কায়দায় এ ধরনের হত্যাকাণ্ড কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, জাতীয় নাগরিক কমিটি মনে করে, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও ‘মব-ভায়োলেন্সে’র মতো সকল ফ্যাসিবাদি ব্যবস্থা ও উপাদানের শিগগিরই বিলোপ করতে হবে এবং নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের সূচনা করতে হবে। আমরা মনে করি, কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয় এবং সকল অপরাধের বিচারের দায়িত্ব আদালতের। যারা আইন নিজের হাতে তুলে নিচ্ছে তারা অপরাধ করছে এবং দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলছে বলে আমরা মনে করি।
দেশজুড়ে মব-লিঞ্চিং, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, মাজার ও মন্দিরে হামলা ও ভাঙচুর জনমনে আতঙ্ক তৈরি করছে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির জানান দিচ্ছে। জাতীয় নাগরিক কমিটি আত্মপ্রকাশের দিন থেকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল করতে সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে আসছে। ৫ আগস্টের পরও এমন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড প্রমাণ করে, ফ্যাসিবাদি হাসিনার পতন হলেও ফ্যাসিবাদি কাঠামো ও ব্যবস্থা এখনও বহাল তবিয়তে আছে। একই সাথে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদাসীনতা এবং বিভিন্ন হামলার পরেও যথাযথ আইনি পদক্ষেপ না নেয়ার কারণে এ ধরনের মব-ভায়োলেন্সের পুনরাবৃত্তি ঘটছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ইতোমধ্যে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম গণপিটুনিতে জড়িতদের চিহ্নিত করেছে এবং নেতৃত্বে ছাত্রলীগের সাবেক পদধারী নেতাদের দেখা যাচ্ছে। উপরোক্ত দু’টি হত্যাকাণ্ডে যে ব্যক্তিরাই জড়িত থাকুক না কেন তাদেরকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনার জোর দাবি জানায় জাতীয় নাগরিক কমিটি। একই সাথে বিশ্ববিদ্যালয় ও হল প্রশাসনের অকার্যকর ও নিষ্ক্রিয় ভূমিকার জবাবদিহিতা চায়। নতুবা অচিরেই গণঅভ্যুত্থানের শক্তি দেশের আপামর জনতার স্বার্থকে সুরক্ষিত করতে রাজপথে সক্রিয় কর্মসূচি পালন করবে।