Logo
Logo
×

সংবাদ

চাকরি ফেরত চেয়েছেন সশস্ত্র বাহিনীর ২৩০ কর্মকর্তা

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:৫২ পিএম

চাকরি ফেরত চেয়েছেন সশস্ত্র বাহিনীর ২৩০ কর্মকর্তা

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সশস্ত্র বাহিনী থেকে চাকরি হারানো ২৩০ জন কর্মকর্তা তাদের চাকরি ফেরত চেয়েছেন। আর অবসরে যাওয়া সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তারা সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কাজে থাকার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। আজ শনিবার রাজধানীর মহাখালীতে রাওয়া ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা এসব দাবি করেন। 

তারা বলেন, শেখ হাসিনা সরকার সেনাবাহিনীর কতিপয় কর্মকর্তাকে দানব বানিয়েছিল। তাদের কয়েকজনকে ছাড়া পুরো সশস্ত্র বাহিনী ছিল সরকারে প্রতিপক্ষ। তিনি (শেখ হাসিনা) একদিকে যেমন সশস্ত্রবাহিনীকে প্রতিপক্ষ বানায় ঠিক অন্যদিকে পুলিশকে শক্তিশালী করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। 

রাওয়া রিসার্চ অ্যান্ড স্টাডি ফোরামের (আরআরএসএফ) আয়োজনে জুলাই-আগস্ট ২০২৪ বিপ্লবে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান এবং বিপ্লবোত্তর ভূমিকা বিষয়ক সেমিনারে এসব আলোনা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাসিমুল গনি (অব.), লে. কর্নেল মোশাররফ, লে. আবু রুশদসহ ঊর্ধ্বতন অবসরপ্রাপ্ত শতাধিক সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তা। বিশেষ অতিথি হিসেবে আলোচনা করেন প্রফেসর মাহবুবুল্লাহ, প্রফেসর ড. শহীদুজ্জামান, ডা. জাহেদ উর রহমান। আলোচনা শেষে বঞ্চনার শিকার দাবি করে অবসরপ্রাপ্ত ও বরখাস্ত অনেক কর্মকর্তা তির্যক বক্তব্য দেন। 

চাকরিচ্যুত কর্মকর্তারা বলেন, সশস্ত্র বাহিনীর অন্তত ২৩০ জন কর্মকর্তা পুনরায় চাকরি ফিরে পেতে আবেদন করেছেন। এর মধ্যে সেনাবাহিনীর ১৮৫ জন, নৌবাহিনীর ৪৫ জন কর্মকর্তা রয়েছেন। কর্মকর্তাদের তালিকা ধরে এই আবেদন ১ সেপ্টেম্বর সেনাসদরের সেন্ট্রাল রেকর্ড অফিসে জমা দেওয়া হয়। একই তালিকায় আবার ৫ সেপ্টেম্বর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে প্রধান উপদেষ্টাকে বরাবর জমা দেওয়া হয়েছে। তবে কর্মকর্তারা বলছেন, তারা এখনো সেনাসদর বা প্রধান উপদেষ্টা অফিস থেকে কোনো বার্তা পাননি। 

২০২৩ সালে সেপ্টেম্বরে নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট পদ থেকে চাকরিচ্যুত আনসার আলী রনি বলেন, তিনি ২০১৮ সালে চাকরি যোগদান করেন। চাকরি চলাকালীন সময়ে ব্যক্তিগত একটা কারণে তার বিরুদ্ধে তদন্ত হয়। সেই তদন্তে মূল বিষয়ে বাইরে উঠে আসে জামায়াতের এক নেতার সঙ্গে তাদের পারিবারিকভাবে যোগাযোগ রয়েছে। পরে কোর্ট মার্শাল করে মূল আলোচনা না গিয়ে তাকে চাকরি থেকে বের করে দেয়। 

প্রেম ঘটিত একটি বিষয়ে সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন থেকে চাকরিচ্যুত আমিনুল হক বলেন, তিনি যে অন্যায় করেছেন তা শেখ হাসিনা সরকারের আমলে সেনাবাহিনীর কয়েকজনের ১ কোটি ভাগের এক ভাগ। কিন্তু তাদের কিছুই হয় নাই। লঘু পাপে গুরুদণ্ড দিয়ে চাকরি থেকে বের করে দিয়েছেন তাকে। যেটা তার সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে। একই ধরনের অভিযোগ তুলছেন ৭৯ দীর্ঘ মেয়াদি কোর্সের ক্যাপ্টেন মইন। তাকেও ২০২৪ সালে ১ জানুয়ারিতে চাকরিচ্যুত করা হয়। 

এর আগে বেলা ১১টায় শহীদ ছাত্র-জনতার আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং দোয়া মোনাজাতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর জুলাই-আগস্টের সশস্ত্র বাহিনীর অবদান নিয়ে কথা বলেন কর্নেল মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, শান্ত আন্দোলনে সরকার যখন বন্দুক ব্যবহার শুরু করতে থাকেন তখন থেকেই অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তারা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে মাঠে নামেন। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, যদি সত্যি দেশে নতুন স্বাধীনতা না আসত, মাঠে নামা এই সিনিয়র জেনারেলরা কোথায় থাকতেন তা সবাই অনুমান করতে পারছেন। 

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাসিমুল গনি (অব.) বলেন, অবসরপ্রাপ্ত এই প্রশিক্ষিত সশস্ত্র বাহিনীকে দেশের জনগণের কল্যাণে নানাভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। তারা সবাই দেশের জন্য আবারও কাজ করতে প্রস্তুত। সরকার চাইলে তাদের নানা খাতে যোগ করে দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে। এ সময় তিনি বেশ কিছু সুপারিশও তুলে ধরেন। তিনি সীমিত পরিসরে সামরিক ও সিভিল ডিফেন্স প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বিপ্লবকে রক্ষা এবং জাতীয় স্বার্থে ছাত্র মিলিশিয়া ব্রিগেড গঠনের প্রস্তাব দেন। আর যারা দেশ সংস্কারের বাধা দিচ্ছেন তাদের ধরে ধরে ভাসানচরে পাঠাতে অনুরোধ করেন। 

অনুষ্ঠানের শেষের দিকে মুক্ত আলোচনার সময় সশস্ত্র বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ও চাকরিচ্যুত ক্ষুব্ধ কয়েকজন কর্মকর্তা বক্তব্য দেওয়ার জন্য হইচই শুরু করেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ বক্তব্য দিতে এসে গ্রেপ্তার ও বরখাস্তকৃত মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান, বরখাস্ত রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোয়াহেল, বরখাস্ত প্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মজিবুর রহমানদের ব্যাপক সমালোচন করেন। তাদের জন্যই প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর (ডিজিএফআই) কার্যালয় আয়নাঘর হিসেবে পরিচিত পেয়েছে ও সেনাবাহিনীর নাম ক্ষুণ্ন হয়েছে বলে উল্লেখ্য করেন। নতুন বাংলাদেশে তাদের বিচার করতে সরকার প্রধানকে অনুরোধ করেছেন তারা।

Logo

প্রধান কার্যালয়: ৬০৯০ ডাউসন বুলেভার্ড, নরক্রস, জর্জিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন