Logo
Logo
×

সংবাদ

সেনাপ্রধান শেখ হাসিনার পালানোর খবর জানতেন না

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ আগস্ট ২০২৪, ০৭:৫০ পিএম

সেনাপ্রধান শেখ হাসিনার পালানোর খবর জানতেন না

সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছেন, ওই সময়ে (ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময়) একটি উত্তপ্ত মুহূর্তে তাকে (শেখ হাসিনা) ওখানে রেখে দিলে সমস্যা হতো। আর প্রথম কথা হচ্ছে, আমিতো রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করছিলাম। তখন আমাকে কিছু ব্যক্তি বলেছে যে, উনিতো চলে যাচ্ছেন। উনি অলরেডি রান। তো এটা আমি জানতাম না যে, তিনি দেশ ছেড়ে যাচ্ছেন। তারপরও আমি মনে করি যে, উনি দেশে থাকলে ওনার জীবন ঝুঁকি হতে পারতো। কেউ চাইবে না যে একজনের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হোক। এটা মোটেই কাম্য না। পরিস্থিতি অত্যন্ত উত্তপ্ত ছিল।

ইউটিউব চ্যানেল নাগরিক টিভিতে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনাকে সেইফ এক্সিট দেওয়া ঠিক ছিল নাকি তাকে দেশে রেখে বিচার করা উচিত ছিল এমন প্রশ্নের জবাবে সেনাপ্রধান এসব কথা বলেন। 

ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সেনাবাহিনী সহযোগিতা করছে। সবাইকে ধৈর্য ধরতে হবে। ১৬ বছরের জঞ্জাল ১৬ দিনেতো মিটবে না। 

সেনাবাহিনীর মধ্যে এখনো অনেকে স্বপদে রয়েছে তাদেরকে সরানো হচ্ছে না কেনো এমন প্রশ্নের জবাবে সেনাপ্রধান বলেন, এখনো তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষ হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। অনেক ইস্যু আছে। যেগুলো তদন্ত হচ্ছে। এজন্য আমরা সময় নিচ্ছি, প্রমাণ লাগবে, প্রমাণিত না হলে কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যায় না। এই কাজটি একটু ধীর প্রক্রিয়ায় চলছে। এখন দেখা যাক, বেশকিছু জিনিস আছে যেটা আমাদের করতে হবে। 

এক প্রশ্নের জবাবে সেনাপ্রধান বলেন, সেনাবাহিনী তো ব্যারাকে যেতে চায়। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব যেতে চায়। তবে সম্ভবত তাদের আরও কিছুকাল থাকতে হবে। কারণ পুলিশ এখনো তাদের দায়িত্ব নেওয়ার মত অবস্থায় নাই। পুলিশ প্রায় অকার্যকর হয়ে গিয়েছিল। এখনো দায়িত্ব নেওয়ার মত হয়নি। তারা দায়িত্ব নেওয়ার মত হলে অবশ্যই তারা ফেরত চলে যাবো। তারা বেশিক্ষণ থাকতে চায় না। 

আনসার বাহিনী নিয়ে অপর এক প্রশ্নের জবাবে জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, যেমন আরইবিতে এমন একটি সমস্যার সৃষ্টি হয়েছিল, তারা তাদের শান্ত করার চেষ্টা করেছে। অনেকে এখন নানা ধরনের কষ্টের মধ্যেই আছে। তারপরও তাদের ধৈর্য ধরে আস্তে আস্তে এগুলো সমাধান করতে হবে। আনসারের ওটা তারা ব্যবস্থা নিয়েছে। নাইন ডিভিশন কাজ করেছে এবং আনসারদের নিবৃত করেছে। 

সেনাপ্রধান বলেন, আমি আশাবাদী সবাই একসঙ্গে যদি কাজ করি তাহলে দেশ সংস্কার করা সম্ভব হবে এবং আমরা একটি সুন্দর গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যেতে সম্ভব হবো। আমরা একসঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি। আমিও তাদের সাথে আছি কাজ করছি। এই সরকারকে সাহায্য করছি। আমরা সেই লক্ষ্যে যাবো, যেতে হবে। কারণ এখান থেকে ফেরত যাওয়ার কোন অবকাশ নেই। জনগণকে ধৈর্য ধরতে হবে। প্রথম কথা হচ্ছে অনেক ভুল তথ্যের ছড়াছড়ি চলছে। যত সংবাদ তারা পায়, আমার দেখা মতে তা ৯৫ শতাংশই মিথ্যা। সত্যের সঙ্গে মিথ্যাকে মিশ্রিত করে এই সমস্ত সংবাদ পরিবেশন করা হয়। এটা মানুষকে একটি ভুল ধারণা দেয়। আমি বলবো মানুষকে ধৈর্য ধরতে হবে এবং প্রকৃত ঘটনা জানতে হবে। 

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে সেনাপ্রধান বলেন, এখন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী যে সরকার যখন থাকে তার সঙ্গে কাজ করে। এর অর্থ এই না যে সবাই স্বৈরাচারকে সহায়তা করেন। স্বৈরাচার হোক আর যাই হোক, দৈনন্দিন কাজতো তাদের করে যেতে হবে। সেই কাজ তারা করেছে। কিছু ভাল করেছে। কিছু খারাপ করেছে। কিন্তু এভাবে আতঙ্ক সৃষ্টি করা যাবে না। সবাইকে এভাবে সিল দিয়ে সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া, এটা ঠিক নয়। অবশ্যই যারা দোষী তাদেরকে খুঁজে বের করে শাস্তি দিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আতঙ্ক সৃষ্টি করলে এই প্রশাসনও কাজ করবে না। কেউ কাজ করবে না। সবাই ভীত থাকবে। যেমন পুলিশের মধ্যে এমন একটি সমস্যা হচ্ছে। তাদের মধ্যে একটি বিশাল ট্রমা কাজ করছে। কাজেই এই ট্রমা যদি বিরাজ করে তাহলে হবে না। তাদের এই ট্রমা থেকে বের করে আনতে হবে। এজন্য একটু সবাইকে ধৈর্য ধরতে হবে। ইনশাআল্লাহ এই সরকার আস্তে আস্তে সবকিছু সামাল দিয়ে উঠবে।

গণমাধ্যম ঠিকমতো কাজ করছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, অনেকেই করছে, অনেকেই দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করছে। তারা এ ধরনের সত্যের সঙ্গে মিথ্যাকে মিশ্রিত করে সংবাদ প্রচার করছে না। তারপরেও তাদের আরও কাজ করতে হবে। আমি নিশ্চিত যে তারা আরো কাজ করবে। সময় পেলে আস্তে আস্তে মিডিয়াটাও আরো সক্রিয় হবে। প্রথমত বিষয়টি হচ্ছে আমাদের আরো ধৈর্য ধরতে হবে। 

তিনি আরও বলেন, এই ১৬ বছরের জঞ্জাল ১৬ দিনে মিটবে না, ১৬ মাসেও যদি আমরা মেটাতে পারি সেটা অবশ্যই একটি ভালো বিষয় হবে। অনেক সমস্যা হয়েছে, বুরোক্রেসির মধ্যে সমস্যা, পুলিশের মধ্যে সমস্যা। সবদিকেই সমস্যা। তো এগুলোকে সমাধানে একটু সময় দিতে হবে। এই সরকারকে সময় দিতে হবে। আমরা যদি অধৈর্য হয়ে যাই, তাহলে অবশ্যই এটা ঠিক হবে না। এই সরকার কাজ করে যাচ্ছে। আমরা তাদেরকে সর্বাত্মকভাবে সাহায্য সহযোগিতা করছি। 

Logo

প্রধান কার্যালয়: ৬০৯০ ডাউসন বুলেভার্ড, নরক্রস, জর্জিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন