গণমাধ্যম সংস্কার উদ্যোগের সংগঠককে চাকরিচ্যুতির প্রতিবাদ
স্বাধীন সাংবাদিকতার লক্ষ্যে গঠিত প্ল্যাটফর্ম ‘গণমাধ্যম সংস্কার উদ্যোগ’-এর অন্যতম সংগঠক আরিফুল সাজ্জাতকে অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। তিনি নিউজ ২৪ টেলিভিশনের ভারপ্রাপ্ত চিফ নিউজ এডিটর (সিএনই) ছিলেন। তিনি স্বৈরাচারী শাসনামলে সংগঠিত গণহত্যার তীব্র প্রতিবাদ করেছেন ও পেশাদার সংবাদ পরিবেশনে মালিকপক্ষ বসুন্ধরা গ্রুপের চাপের সঙ্গে আপোষহীন থেকেছেন। সর্বশেষ তাঁবেদারমুক্ত স্বাধীন গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠায় ১৩ দফা আন্দোলনে যুক্ত আছেন। যা বসুন্ধরা গ্রুপ শুরু থেকেই ভালেভাবে নেয়নি এবং আরিফুল সাজ্জাতকে চাকরি থেকে অব্যাহতি নিতে হুমকি দিয়ে আসছিলো।
প্লাটফর্মটি তাকে চাকরিচ্যুতির প্রতিবাদ জানিয়েছে। গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতির মাধ্যমে এই প্রতিবাদ জানিয়েছে তারা।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নিউজ ২৪ টেলিভিশনের মালিকপক্ষ বসুন্ধরা গ্রুপ ফ্যাসিস্ট দুঃশাসনের প্রত্যক্ষ সহযোগী ও লুটপাটের ভাগিদার বলে অভিযোগ রয়েছে। গ্রুপটি অপশাসনকে কাজে লাগিয়ে ভূমিদস্যুতা, ব্যাংক লুট, জ্বালানি ব্যবসার নিয়ন্ত্রণসহ নানা অপকর্মে জড়িত। দেশবিরোধী এসব অপরাধ আড়াল করতে বসুন্ধরা গ্রুপ প্রত্যক্ষভাবে গণমাধ্যমকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে। যার সর্বশেষ উদাহরণ, ছাত্র-জনতা গণহত্যার পরও বসুন্ধরার চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান আন্দোলনকারীদের জঙ্গি আখ্যা দিয়ে কঠোর হাতে দমনে শেখ হাসিনাকে অনুরোধ করেন। যা স্পষ্ট মানবতাবিরোধী অপরাধ।
এদিকে গণহত্যায় প্রত্যক্ষ মদতদাতা হিসেবে বসুন্ধরা গ্রুপ নিউজ ২৪ টেলিভিশনে সংবাদ পরিবেশনের ওপর সরাসরি হস্তক্ষেপ করে। ছাত্রদের ওপর গুলি বর্ষণ করা হয়েছে এমন ফুটেজ প্রকাশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। জনাব আরিফুল সাজ্জাত এসব নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদ করলে তাকে চাকরিচ্যুতির হুমকি দেয়া হয়।
সর্বশেষ, হাসিনা সরকারের পতনের পর তাঁবেদারমুক্ত স্বাধীন গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকায় অবতীর্ণ হন আরিফুল সাজ্জাত। গণমাধ্যমে ব্যাপক সংস্কারের লক্ষ্যে চালিয়ে যাচ্ছেন ১৩ দফা আন্দোলন। যা বর্তমান বিপ্লবী সরকারের মৌলিক নীতির সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত। এ অবস্থায় তার চাকরিচ্যুতি স্বাধীন সাংবাদিকতা বিকাশের পথে স্পষ্ট বাধা ও ভীতি প্রদর্শন বলে প্রতীয়মান হয়। একই সাথে নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বিপ্লবী সরকারের নীতির সঙ্গে সরাসরি সাংঘার্ষিক। ফলে ‘গণমাধ্যম সংস্কার উদ্যোগ’ প্লাটফর্ম আরিফুল সাজ্জাতকে চাকরি থেকে অপসারণের কঠোর প্রতিবাদ জানাচ্ছে। পাশাপাশি পট পরিবর্তনের সুযোগে গণমাধ্যমগুলোতে অপেশাদার আচরণে পদ দখলের যে প্রতিযোগিতা চলছে তারও নিন্দা জানাচ্ছে গণমাধ্যম সংস্কার উদ্যোগ।