পাসপোর্ট বাতিলের পর হাসিনাকে দেশে ফিরতে হচ্ছে?
ছবি: সংগৃহীত
সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সদস্যদের সঙ্গে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারও কূটনৈতিক পাসপোর্টও বাতিল করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। শুধু তাই নয় প্রবল ছাত্র আন্দোলনের মুখে হাসিনা সরকার পতনের দুই সপ্তাহ পর হাসিনা সরকারের মন্ত্রিদের স্ত্রীদের কূটনৈতিক পাসপোর্টও বাতিল করা হয়েছে।
এদিকে, কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল হওয়ায় প্রত্যর্পণের হুমকিতে পড়েছেন হাসিনা। ভারতীয় ভিসা নীতিতে, কূটনৈতিক পাসপোর্টধারী বাংলাদেশিরা ভিসা ছাড়াই দেশটিতে প্রবেশ করতে পারেন এবং ৪৫ দিন পর্যন্ত দেশটিতে অবস্থান করতে পারবেন। হাসিনা গত ৫ আগস্ট ছাত্র আন্দোলনের মুখে ভারতে পালিয়ে গেছেন।
ভারতে সরকারি সূত্রের বরাতে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া বলছে, আজ শুক্রবার (২৩ আগস্ট) পর্যন্ত ১৯ দিন ধরে ভারতে আছেন হাসিনা। কূটনৈতিক পাসপোর্ট ছাড়া হাসিনার আর কোনো পাসপোর্ট নেই। এখন এই পাসপোর্ট বাতিল করায় হাসিনা প্রত্যর্পণের ঝুঁকিতে আছেন।
বাংলাদেশের সরকারি সংবাদ সংস্থা বাসসের বরাতে টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ৪২টি হত্যাসহ ৫১টি মামলার মুখোমুখি হাসিনার প্রত্যর্পণ বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যকার স্বাক্ষরিত প্রত্যর্পণ চুক্তির আইনি কাঠামোতেই পড়ে। অর্থাৎ এই চুক্তিতেই তাকে দেশে আনা যাবে।
চুক্তিটি ২০১৩ সালে স্বাক্ষরিত হয়। পরে ২০১৬ সালে সেটি সংশোধন হয়। চুক্তিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারা আছে যেখানে বলা হয়েছে, যার হস্তান্তরের জন্য অনুরোধ জানানো হচ্ছে তার বিরুদ্ধে অভিযোগটা যদি ‘রাজনৈতিক প্রকৃতি’র হয় তাহলে সেই অনুরোধ খারিজ করা যাবে।
তবে, কোন কোন অপরাধের অভিযোগকে ‘রাজনৈতিক’ বলা যাবে না, সেই তালিকাও বেশ লম্বা – এর মধ্যে হত্যা, গুম, অনিচ্ছাকৃত হত্যা ঘটানো, বোমা বিস্ফোরণ ঘটানো ও সন্ত্রাসবাদের মতো নানা অপরাধ আছে।
এর আগে গতকাল বৃহিস্পতিবার (২২ আগস্ট) স্বররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী, তার উপদেষ্টাদের, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সদস্যদের, সদ্য বিলুপ্ত হওয়া সংসদের এমপিদের এবং তাদের স্ত্রীদের কূটনৈতিক পাসপোর্ট প্রত্যাহার করা হলো। তারও আগে ৭৬ বছর বয়সী হাসিনা পালিয়ে গেলে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন ১২তম সংসদ ভেঙে দেন।
বর্তমানে নোবেল জয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার দেশ পরিচালনা করছে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, কর্মকর্তাদের নিয়োগ বাতিলের সঙ্গে সঙ্গে তাদের কূটনৈতিক পাসপোর্টও বাতিল হয়ে যাবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, উল্লিখিত ব্যক্তিদের মধ্যে যারা সাধারণ পাসপোর্টের জন্য আবেদন করবেন, অন্তত দুটি তদন্ত সংস্থার প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তাদের অনুকূলে সাধারণ পাসপোর্ট ইস্যু করা যেতে পারে।