গণমাধ্যমের প্রতি ৮৬ শিক্ষক, লেখক ও সাংবাদিকের খোলাচিঠি
বাংলাদেশ নিয়ে বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা বন্ধ করুন
আউটলুক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৪ আগস্ট ২০২৪, ১১:৪৪ পিএম
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক গণ–আন্দোলন এবং পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে উদ্দেশ্যমূলক বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা, গুজব ও অপতথ্য ছড়ানো নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছেন ৮৬ শিক্ষক, কবি, সাহিত্যিক ও সাংবাদিক। বাংলাদেশ নিয়ে বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা বন্ধের আহ্বান জানিয়ে গতকাল মঙ্গলবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর উদ্দেশে একটি খোলাচিঠি দিয়েছেন তাঁরা।
ওই খোলাচিঠিতে বলা হয়, ভারতের বেশির ভাগ সংবাদমাধ্যমে বাংলাদেশের গণ–আন্দোলনকে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। এসব সংবাদমাধ্যম বলছে, এটা বিরোধী দল, ইসলামপন্থী জঙ্গি ও পশ্চিমা শক্তির ষড়যন্ত্র। মূলত ভারতের ক্ষমতাসীন দল ও সরকার–সমর্থিত সংবাদমাধ্যমের এসব দাবি একেবারেই ভিত্তিহীন।
খোলাচিঠিতে আরও বলা হয়, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং ছাত্রলীগ যে হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে, তা ভারতের বেশির ভাগ সংবাদমাধ্যমের খবরে উপেক্ষিত। এর বদলে তারা নানা গুজব ও অপতথ্য ছড়াচ্ছে। এসব গুজব ও অপতথ্য মূলত ভারতের সরকারপন্থী লোকজনের তৈরি। এ ছাড়া সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা নিয়েও ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলো গুজব ছড়াচ্ছে।
খোলাচিঠিতে আরও বলা হয়, সরকার পতনের পর হওয়া হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় শিক্ষার্থীরা জড়িত ছিলেন না। এসব করেছে মূলত ক্ষুব্ধ জনতা। এসবের সঙ্গে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ নেই। বরং সরকারি-বেসরকারি সম্পত্তি, বিশেষ করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উপাসনালয় পাহারা দেওয়ার কাজ করেছেন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে এসব খবর আসেনি।
আরও বলা হয়, ভারতীয় অনেক সাংবাদিক এই বিক্ষোভকে উগবাদ্রী ইসলামপন্থীদের বিক্ষোভ হিসেবে প্রচার চালিয়ে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার সম্পর্কে অপ্রয়োজনীয় টানাপোড়েন তৈরির অপচেষ্টা চালাচ্ছে। শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট সরকার দেশের নির্বাচন ও সাংবিধানিক ব্যবস্থাকে যেভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে, সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে চায় বাংলাদেশ। এমন সংকটকালে শক্তিশালী কূটনৈতিক ও বাণিজ্য সম্পর্ক রাখতে ভারতের সমর্থন খুব গুরুত্বপূর্ণ।
চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ; কবি ও লেখক ফরহাদ মজহার; লেখক রেহনুমা আহমেদ; আলোকচিত্রী শহীদুল আলম; লেখক ও অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান; জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মানস চৌধুরী; রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আ-আল মামুন; চলচ্চিত্রকার মোস্তফা সরয়ার ফারুকী; সাংবাদিক সাদিয়া গুলরুখ প্রমুখ।