Logo
Logo
×

সংবাদ

মাঠে ট্র্যাফিক পুলিশ, ঘুষ ও বেআইনি কাজে না জড়ানোর শপথ

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২ আগস্ট ২০২৪, ০৪:৫৫ পিএম

মাঠে ট্র্যাফিক পুলিশ, ঘুষ ও বেআইনি কাজে না জড়ানোর শপথ

ঘুষ ও বেআইনি কাজে না জড়ানোর শপথ নিয়ে প্রায় দুই সপ্তাহ পর কাজে নেমেছে ট্র্যাফিক পুলিশ। আজ সোমবার (১২ আগস্ট) সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন মোড়ে সীমিত পরিসরে ট্র্যাফিক পুলিশকে দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে। তবে তাদের সঙ্গে এক হয়ে কাজ করতে দেখা গেছে সাধারণ শিক্ষার্থীদেরও। 

ছাত্র-গণআন্দোলনের সময় থেকে ৫ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সারাদেশে ব্যাপক প্রতিহিংসার শিকার হয় পুলিশ। শিক্ষার্থীদের ওপর বেআইনি বলপ্রয়োগ ও খুনের ঘটনায় শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে পুলিশের ওপর ক্ষোভে ফেটে পড়ে দেশের সাধারণ জনতাও। এই অবস্থায় রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন থানায় ব্যাপক সহিংসতা চলে। এরই ধারাবাহিকতায় অনেকটা আত্মগোপনে চলে যায় পুলিশ। 

এমনকি ট্র্যাফিক পুলিশও মাঠ থেকে সরে যায়। এই অবস্থায় সারাদেশের ট্র্যাফিক ব্যবস্থাপনায় রাস্তায় নেমে আসে ছাত্র-জনতা। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত রাস্তায় দায়িত্ব পালন করে ব্যাপক প্রশংসাও কুড়ায় তারা। এদিকে সোমবার সকালে ডিউটিতে যাওয়ার আগে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় পুলিশকে বেআইনি কাজে না জড়ানো, বেআইনি নির্দেশ পালন না করা ও ঘুষ না খাওয়ার ব্যাপারে শপথ করতে দেখা গেছে।   

সোমবার সকালে রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ছাত্রদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ট্র্যাফিক পুলিশ সদস্যরা রাস্তায় কাজ করে যাচ্ছেন। তাদের সহযোগিতা করছেন এক দল শিক্ষার্থী। রাস্তায় নামার পর ট্রাফিকের সদস্যদের আলিঙ্গন করে স্বাগত জানাচ্ছেন ছাত্র-জনতা। পুলিশ সদস্যরাও স্বতঃস্ফূর্তভাবে নির্ভয়ে যানজট নিরসনে কাজ করে যাচ্ছেন। 

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেলক হক চৌধুরি তার ফেসবুকে লেখেন, “আমি মতিঝিল আসতেছি। এমন সময় এক পুলিশ ভাই তার সহকর্মীকে বলতেছে, আজ থেকে আমরা বেআইনি কাজ করবো না। আজ থেকে আমরা ঘুষ খাবো না। মানুষের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করবো না। শুনে ভালো লাগলো। তারাই বললো-ভাই ছবি নিবেন? আমি বললাম, আপনাদের শপথ নেওয়াটা ভালো লাগলো, তাই ছবি নিলাম।”

মতিঝিলের এমটিবি সিকিউরিটিজের কর্মকর্তা ওয়াকার উদ্দিন সাইম বলেন, সকালে মতিঝিল শাপলা চত্বরে এক মাঝ বয়সী পুলিশ সদস্যের পিঠ চাপড়ে অভিনন্দন জানাই। তিনি মুচকি হাসি দিয়ে জানান, জনগণ যাতে তাদের ভালো বলে সে দিকে লক্ষ্য রেখেই এখন থেকে তারা কাজ করবেন। 

এদিকে দীর্ঘদিন পর রাজধানীর রাস্তায় ট্র্যাফিক পুলিশের দেখা মেলায় সাধারণ মানুষের মধ্যেও স্বস্তি ও উচ্ছ্বাস দেখা গেছে। সরকার পতনের সময় ও ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান চলার সময় পুলিশের প্রতি যে বিদ্বেষ ও ক্ষোভ ছিল মানুষের আজ সেটা দেখা যায়নি। সবাই পুলিশ সদস্যদের উৎসাহিত করছেন তারা যেন আতঙ্কহীনভাবে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করেন। তরুণ থেকে বয়স্ক সব শ্রেণির মানুষ পুলিশ সদস্যদের রাস্তায় দেখে আনন্দিত। তাদের কাছে গিয়ে তাদের সঙ্গে হাত মিলানো থেকে শুরু করে কুশল বিনিময় করছেন সবাই।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে ট্র্যাফিক পুলিশ সদস্যরা বলেন, আপনারা অনেক কষ্ট করেছেন এবার আপনারা আমাদের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিন। আপনারা যেভাবে জনগণের জন্য নিঃস্বার্থভাবে এতদিন কাজ করেছেন সেভাবে আমরাও জনগণকে সেবা দেওয়ার জন্য এসেছি। এতদিন রাস্তায় আপনারা শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য যে কষ্ট করেছেন সেজন্য আপনাদের ধন্যবাদ।

এ বিষয়ে গুলশান-১ নম্বর মোড়ে ট্র্যাফিক ব্যস্ততা পরিদর্শন করতে আসেন ডিএমপির ট্র্যাফিক গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার এ এস এম হাফিজুর রহমান। তিনি এসময় রাস্তায় ট্র্যাফিক শৃঙ্খলার দায়িত্বে কাজ করা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন এবং তাদের ধন্যবাদ জানান। এছাড়া তিনি এসময় দায়িত্বরত ট্র্যাফিক পুলিশ সদস্যদের নির্দেশ দেন তারা যেন জনগণকে তাদের সর্বোচ্চ সেবাটা দেওয়ার চেষ্টা করেন।

তিনি বলেন, দায়িত্বে ফিরে আসায় মানুষ আমাদের স্বাগত জানিয়েছে। আমাদের মানুষ সহযোগিতা করছে। মানুষ বলছে, ট্র্যাফিক পুলিশ ছাড়া ঢাকা শহর অচল। মানুষ বলছে যা হওয়ার হয়েছে, এখন সব কিছু সুন্দর করে চলুক।

এদিকে রাজধানীর খিলগাঁও, ফকিরাপুল, দৈনিক বাংলা, ডিআইটি-মতিঝিল, পুরানা পল্টন, কাকরাইলসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ট্র্যাফিক পুলিশের পাশাপাশি সাধারণ শিক্ষার্থীদেরও ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণে কাজ করতে দেখা গেছে।

Logo

প্রধান কার্যালয়: ৬০৯০ ডাউসন বুলেভার্ড, নরক্রস, জর্জিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন