সজীব ওয়াজেদ জয় ও শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত
ক্ষমতাচ্যুতির ধাক্কা যেন কোনোভাবেই কাটিয়ে উঠতে পারছেন না সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীবক ওয়াজেদ জয়। হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে সকালে এক কথা বলছেন, বিকেলে গিয়ে আবার সেই কথায় স্থির থাকতে পারছেন না। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার প্রবল বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান।
৫ আগস্টের পর আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে থেকে নিজের প্রোফাইল থেকে কথা বলে যাচ্ছিলেন জয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৯ আগস্ট বার্তা সংস্থা রয়টারসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জয় দাবি করেন, তার মা পদত্যাগ করেননি। তিনি এখনো বাংলাদেশের বৈধ প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু তার মা শেখ হাসিনা বলছেন, তিনি পদত্যাগ করেছেন। এর আগে হাসিনা সরকারের পতনের পর জয়ের বারবার বক্তব্য পরিবর্তন নিয়ে ‘শেখ হাসিনার পতনের পর জয়ের বারবার কথা বদল’ শিরোনামে বাংলা আউটলুকে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছিল।
এদিকে, মা শেখ হাসিনার পদত্যাগ নিয়ে জয় বলেছিলেন, আমার মা কখনোই আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ করেননি। সেই সময় তিনি পাননি। একটি বিবৃতি দিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল তার। কিন্তু এরপর আন্দোলনকারীরা প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের দিকে অগ্রসর হতে লাগল এবং তখন আর সময় ছিল না। এমনকি আমার মা গোছানোর সময়টুকুও পায়নি। সংবিধান অনুযায়ী, তিনি এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
এদিকে, ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর গতকাল ১০ আগস্ট প্রথমবার নীরবতা ভেঙে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের এক বার্তা পাঠিয়েছেন শেখ হাসিনা। সেই বার্তাটি ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য প্রিন্ট দেখেছে। ওই বার্তার শেখ হাসিনা বলেছেন, আমি পদত্যাগ করেছি যাতে আমাকে লাশের মিছিল দেখতে না হয়। তারা ক্ষমতায় আসতে চেয়েছে তোমাদের (ছাত্রদের) লাশের ওপর দিয়ে। আমি এটা হতে দিইনি। আমি ক্ষমতা নিয়ে এসেছিলাম।
তিনি বলেন, আজকে যদি আমি দেশে থাকতাম হয়তো আরও অনেক জীবন যেত, অনেক সম্পদ ধ্বংস করা হতো।
পরাজয় মেনে নিয়ে শিগগিরই দেশে ফিরছেন নেতাকর্মীদের প্রতিশ্রুতি দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমি শিগগির ফিরব, ইনশা আল্লাহ। পরাজয় আমার, কিন্তু জয়ী হয়েছে বাংলাদেশের জনগণ। আমি নিজেকে সরিয়ে নিয়েছি। আপনাদের সমর্থন নিয়ে আমি এসেছিলাম, আপনারাই ছিলেন আমার শক্তি। আপনারা যখন আমাকে চাননি, তখন আমি নিজে থেকে সরে গেছি, পদত্যাগ করেছি। আমার যেসব কর্মী সেখানে আছেন, কেউ মনোবল হারাবেন না। আওয়ামী লীগ বার বারই উঠে দাঁড়িয়েছে।
এ ছাড়া তার বক্তব্য বিকৃত করার অভিযোগ করে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, তরুণ ছাত্রদের উদ্দেশে আমি আবারও বলতে চাই, আমি তোমাদের কখনো রাজাকার বলিনি...আমার বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে। একটা গোষ্ঠী তোমাদের এই অবস্থানের সুযোগ নিয়েছে।