Logo
Logo
×

সংবাদ

আমাকে তুলে নেওয়ার জন্য সাদাপোশাকধারীরা ২ দফা অভিযান চালিয়েছে: রাশেদ খাঁন

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ আগস্ট ২০২৪, ০৪:৫৪ পিএম

আমাকে তুলে নেওয়ার জন্য সাদাপোশাকধারীরা ২ দফা অভিযান চালিয়েছে: রাশেদ খাঁন

গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন

গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন বলেন, আমাকে তুলে নেওয়ার জন্য সাদাপোশাকধারীরা ২ দফা অভিযান চালিয়েছে। গলিতে গলিতে গিয়ে আমার ছবি দেখিয়ে তন্নতন্ন করে খোঁজা হচ্ছে। আজ শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই অভিযোগ করেন রাশেদ খাঁন। 

গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আপনারা সকলে জানেন ২০১৮ সালের কোটা সংস্কারের আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে সেই বছরের ১ জুলাই আমি গ্রেপ্তার হই। এরপর আমাকে একটানা ১৫ দিন পুলিশ রিমান্ডে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়। সেই সময় আমার মত আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী অন্যান্যদেরকেও আটক করা হয়। একটা পর্যায়ে আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রায় ২ মাস পরে আমাদের মুক্তি দেওয়া হয়। 

রাশেদ খাঁন বলেন, পরবর্তীতে ছাত্র আন্দোলনের মুখে কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। কিন্তু হাইকোর্টে ২০২১ সালের একটি রিটের পরিপ্রেক্ষিতে আবারও ৩০% কোটা ফিরিয়ে আনার রায় দিলে শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে আন্দোলন শুরু করে। আমরা ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনের সংগঠকদের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে সমর্থন করি এবং সরকারকে কোটা পুনর্বহাল না করার আহ্বান জানাই।

তিনি আরও বলেন, সারাদেশে শিক্ষার্থীদের উপর দমন-পীড়ন, গ্রেপ্তার শুরু হলে আমরা নাগরিক সমাজকে সাথে নিয়ে 'নাগরিক প্রতিক্রিয়া' সমাবেশেরও আয়োজন করি। চলমান আন্দোলনে ১৬ জুলাই রংপুরে আবু সাঈদসহ শিক্ষার্থীরা হত্যাকাণ্ডের শিকার হলে রাজপথে মিছিল করে প্রতিবাদ জানিয়েছি৷ ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনের সংগঠক হিসেবে ২০২৪ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনে সংহতি জানানো আমাদের নৈতিক দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। কারণ ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন করতে গিয়ে আমরা হামলা মামলা, জেল-জুলুমের শিকার হয়েছি। হাজারো শিক্ষার্থীর রক্তের বিনিময়ে সেই সময় ছাত্রসমাজের কাঙ্ক্ষিত প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছিল। যদিও আমাদের দাবি ছিল কোটা সংস্কার কিন্তু, তৎকালীন মন্ত্রী পরিষদ সচিবের নেতৃত্বে সরকারের গঠিত ৭ সদস্য বিশিষ্ট  কমিটির পরামর্শে কোটা বাতিল করা হয়। 

রাশেদ খাঁন বলেন, আপনারা জানেন ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনের সংগঠক, ডাকসুর সাবেক ভিপি, গণঅধিকার পরিষদের সংগ্রামী সভাপতি নুরুল হক নুরকে ইতোমধ্যে আন্দোলনে মদদ, উসকানি ও নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং পৃথক ২ টি মামলায় ২ দফায় মোট ১০ দিন রিমান্ডে নিয়ে  অমানুষিক নির্যাতন করা হয়েছে। এছাড়া গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফসহ সারাদেশে গণঅধিকার পরিষদের অসংখ্য নেতৃবৃন্দকে আটক করা হয়েছে। আমাকে তুলে নেওয়ার জন্য সাদাপোশাকধারীরা ২ দফা অভিযান চালিয়েছে। গলিতে গলিতে গিয়ে আমার ছবি দেখিয়ে তন্নতন্ন করে খোঁজা হচ্ছে। এনিয়ে আমার পরিবারে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। তাদের এই আচরণে আমার ছোট্ট দুটি মেয়ে ও ৬ মাসের পুত্র সন্তান নিয়ে আমার সহধর্মিণী মানসিক চাপে ভেঙে পড়েছে। 

রাশেদ খাঁন আরও বলেন, বিষয়টি জানতে পেরে আমার মা-বাবা গ্রামে সারাক্ষণ আহাজারি করছে। আপনারা জানেন ২০১৮ সালে আমার মা কীভাবে পাগলপ্রায় হয়ে গিয়েছিল। এমনকি পরবর্তী সময়ে আমার উপর নির্যাতনের কারণে একবার স্ট্রোকও করেছিলো। আমরা ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনের সংগঠক হিসেবে আন্দোলনের লিগ্যাসি বহন করায় ২০২৪ সালের আন্দোলনে সংহতি ও হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়েছি। এখানে আমাদের কোনো অপরাধ নেই। বরং কোটা পুনর্বহালের অপচেষ্টা ও ছাত্রসমাজের যৌক্তিক দাবি মেনে নিতে টালবাহানা করায় চলমান সংকট শুরু হয়েছে। 

তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের ৯ দফার যৌক্তিকতায় ও গণহত্যার বিচারে ইতোমধ্যে দেশের নাগরিক সমাজ, আইনজীবী, শিক্ষক সমাজ, শিল্পী ও সাংস্কৃতিক কর্মীরা মাঠে নেমেছে। এরকম গণহত্যা চালানোর পরে সরকার ক্ষমতায় থাকার নৈতিকতা রাখে না। সরকারকে বলবো জনগণের উপর দমন-পীড়ন বন্ধ করে অনতিবিলম্ব ছাত্রসমাজের ৯ দফা মেনে নিন এবং দেশে শান্তিশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে জাতীয় সংসদে জাতীয় ঐক্য ও সংহতির প্রস্তাব পাশ করে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সাথে সংলাপের আয়োজন করুন। অন্যথায় সংকট আরও গভীর হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।

Logo

প্রধান কার্যালয়: ৬০৯০ ডাউসন বুলেভার্ড, নরক্রস, জর্জিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন