অবিলম্বে ডিবি হেফাজতে আটক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে তাদের পরিবারের হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ৯০’র ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্রঐক্যের নেতৃবৃন্দ।

আজ বুধবার (৩১ জুলাই) সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই দাবি করেন তারা। বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন , কোটা সংস্কারের যৌক্তিক দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের এই ছয় সমন্বয়ককে নিরাপত্তা দেবার হাস্যকর খোঁড়া যুক্তি দাঁড় করিয়ে গত কয়েক দিন ধরে ডিবি হেফাজতে আটক রেখে নির্যাতন করে ভয় ভীতি দেখিয়ে তাদের দিয়ে আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়ানো হচ্ছে, যা বুঝতে কারোরই অসুবিধা হবার কথা নয়। 

তারা বলেন, ক্ষমতাসীন অবৈধ ভোটার বিহীন ডামি সরকার সারা দেশে রক্তগঙ্গা বইয়ে দিয়ে শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কারের যৌক্তিক ও ন্যায়সংগত দাবিতে গড়ে উঠা আন্দোলনকে দমন করার নিষ্ঠুর পথ বেছে নিয়েছে।

নেতৃবৃন্দ চলমান আন্দোলনকে ছাত্রজনতার  অভূতপূর্ব অভ্যুত্থান আখ্যায়িত  করে বলেন, সরকারি  ঘাতক বাহিনী  শত শত ছাত্র তরুণ সাধারণ মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে।এদের নির্বিচার আক্রমণে গুলিবিদ্ধ হয়ে হাজার হাজার মানুষ বিভিন্ন হাসপাতালে কাতরাচ্ছে। প্রতিদিনই মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘায়িত হচ্ছে। 

নেতৃবর্গ তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ঘাতকদের বুলেটের হাত থেকে নিজ বাসায় মা-বাবার কোলের শিশুও রেহাই পায় নাই। পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি দিয়ে পাখির মতো গুলি চালিয়ে নির্বিচারে মানুষ হত্যা করে রক্তের বন্যায় আন্দোলন দমনে ব্যর্থ হয়ে সরকার গদি টিকিয়ে রাখতে কার্ফু দিয়ে সেনাবাহিনী নামিয়ে দেশে ভীতিকর পরিস্হিতি সৃষ্টি করেছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়ম ব্যাপক প্রাণহানি, হত্যাযজ্ঞের ঘটনাকে আড়াল করার জন্য সরকার নিজেরাই নানা রাষ্ট্রীয় স্হাপনায় আগুন দিয়ে বিরোধী রাজনৈতিক দলের ওপর দায় চাপিয়ে দেশব্যাপী নির্বিচার গ্রেপ্তার অভিযান পরিচালনা করছে। ইতিমধ্যে ৯০'র স্বৈরাচার বিরোধী ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম শীর্ষ নেতা সাবেক ডাকসু ভিপি আমানউল্লাহ আমান, জহিরউদ্দিন স্বপ্নসহ হাজার হাজার রাজনৈতিক নেতা, শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিয়ে অমানুষিক নির্যাতন করে মিথ্যা স্বীকারোক্তি আদায় করা হচ্ছে।

নেতৃবৃন্দ সকল হত্যাকাণ্ডের দায়দায়িত্ব নিয়ে শেখ হাসিনার অবৈধ সরকারকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়ে বলেন, কেবলমাত্র বর্তমান খুনী সরকারের পদত্যাগ এবং দল নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটে সত্যিকার নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা করে বর্তমান রাজনৈতিক সংকটের স্হায়ী টেকসই সমাধান হতে পারে। অবিলম্বে বিদ্যমান অসহনীয় শ্বাসরুদ্ধকর দশা থেকে দেশে দ্রুত স্বাভাবিক পরিস্হিতি ফিরিয়ে আনার জন্য দমন পীড়ন গ্রেপ্তার বন্ধ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৯ দফা দাবি মেনে নেওয়ার জন্য জোর দাবি জানান। 

একইসাথে রক্তে ভেজা এই আন্দোলনকে চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত ঐক্যবদ্ধভাবে সাহসিকতার সাথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বীর ছাত্রসমাজের প্রতি আহ্বান জানান তারা।

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন হাবিবুর রহমান হাবীব, খায়রুল কবির খোকন, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, ফজলুল হক মিলন, নাজিমউদ্দিন আলম, লুৎফর রহমান ও খন্দকার আসাদুর রহমান।