Logo
Logo
×

সংবাদ

রেমিট্যান্সে বড় ধাক্কা, প্রবাসীরা ব্যাংকে রেমিট্যান্স না পাঠাতে ক্যাম্পেইন চালাচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ জুলাই ২০২৪, ১০:৫০ এএম

রেমিট্যান্সে বড় ধাক্কা, প্রবাসীরা ব্যাংকে রেমিট্যান্স না পাঠাতে ক্যাম্পেইন চালাচ্ছে

ছবি সংগৃহীত

দেশে ৫ দিনের জন্য ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় ব্যাংক ও মোবাইল আর্থিক সেবার (এমএফএস) মাধ্যমে রেমিট্যান্স সংগ্রহে বড় ধরনের ধাক্কা লেগেছে। ছাত্র আন্দোলনে সহিংসতায় বহু হতাহতের প্রতিবাদে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স না পাঠানোর বিষয়ে ক্যাম্পেইন চালাচ্ছে অনেক প্রবাসী বাংলাদেশি। রেমিট্যান্স কম আসায় এই ক্যাম্পেইনের ভূমিকাও আছে। আর এর প্রভাবে বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় বা রিজার্ভের ওপরও চাপ সৃষ্টি করতে পারে। এতে বেশ দুশ্চিন্তায় পড়েছে সরকার। 

একাধিক সূত্রের বরাতে দেশের ট্যাবলয়েড মানবজমিন এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, নানা কৌশলে যেকোনো মূল্যে রেমিট্যান্স বাড়াতে কাজ শুরু করছে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নির্ধারিত রেটের চেয়ে বেশি দামে ডলার কিনতে মৌখিকভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা জানান, ১৮ই জুলাই থেকে ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় রেমিট্যান্স সংগ্রহ বন্ধ ছিল। এরপর সীমিত পরিসরে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা চালু হলে রেমিট্যান্স সংগ্রহ শুরু হয়। কিন্তু ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা আংশিক চালুর পর ব্যাংক ও এমএফএসের রেমিট্যান্স সংগ্রহ স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় ব্যাপক কমেছে। অথচ স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন প্রায় ৮০ মিলিয়ন থেকে ১০০ মিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স বাংলাদেশে পাঠানো হয়।

এদিকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যালেন্স অব পেমেন্ট ম্যানুয়াল ৬ অনুযায়ী, ৩০শে জুন পর্যন্ত বাংলাদেশের রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২১.৭৮ বিলিয়ন ডলার।

এমএফএস সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের একজন কর্মকর্তা জানান, তারা স্বাভাবিক দিনে ৫ থেকে ৭ কোটি টাকা রেমিট্যান্স পেলেও, ইন্টারনেট সংযোগের ধীরগতির কারণে তা ৮০ লাখ টাকায় নেমে এসেছে। গত ১লা জুলাই থেকে ১৩ই জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশে রেমিট্যান্স এসেছে ৯৭৮ মিলিয়ন ডলার।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কোটা সংস্কার নিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সৃষ্ট উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ইন্টারনেট বন্ধ থাকাসহ নানা কারণে চলতি মাসে রেমিট্যান্স কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আন্দোলনে সহিংসতায় বহু হতাহতের প্রতিবাদে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স না পাঠানোর বিষয়ে ক্যাম্পেইন চলছে। ক্যাম্পেইন যদি সফল হয় এবং সরকার বা কেন্দ্রীয় ব্যাংক যদি কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে না পারে তাহলে রেমিট্যান্স আসায় বড় ধরনের ধাক্কা খেতে পারে বাংলাদেশ।

এ বিষয়ে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে রেমিট্যান্স কমে গেছে। তবে এটা যদি দীর্ঘমেয়াদে কমতে থাকে তাহলে ভয়াবহ বিষয় হবে। কারণ রাজনৈতিক পরিস্থিতি খারাপ হলে অর্থ পাচারকারীরা সক্রিয় হয়ে ওঠে। এর ফলে দেখা যাবে প্রবাসীরা অর্থ পাঠাবে, তার আত্মীয়স্বজন টাকা পাবে, কিন্তু দেশে ডলার আসবে না। যা অর্থনীতির জন্য খারাপ ফল বয়ে আনবে।

রেমিট্যান্স না পাঠাতে নেতিবাচক প্রচার হচ্ছে, এতে কোনো প্রভাব পড়বে কিনা? জানতে চাইলে এ অর্থনীতিবিদ বলেন, তারা ক্ষোভের কারণে এ প্রচার করছে। ক্ষোভ কমে গেলে ঠিক হয়ে যাবে। তবে এটা দেখতে হবে সরকারকে। দেশকে স্থিতিশীল রাখতে হবে। স্থিতিশীল না হলে বিনিয়োগ করার মতো বড় অঙ্কের রেমিট্যান্স আসবে না।

দেশ জুড়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, সংঘাত-সংঘর্ষে হতাহত ও গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ জানিয়ে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বৈধপথে রেমিট্যান্স না পাঠানোর প্রচারণা করছেন বিভিন্ন দেশে থাকা প্রবাসী বাংলাদেশিরা। আবার এসব প্রচারকে অপপ্রচার আখ্যা দিয়ে সেগুলো বিশ্বাস না করে বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠাতে প্রবাসীদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। 

Logo

প্রধান কার্যালয়: ৬০৯০ ডাউসন বুলেভার্ড, নরক্রস, জর্জিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন