দি ফোরাম অব ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড আর্কিটেক্টস বাংলাদেশের বিবৃতি
হত্যাকাণ্ডের বিচার এবং ছাত্রসমাজের দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান
প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১:১৫ পিএম
জনতার ওপর পৈশাচিক হামলার প্রতিবাদ ও হত্যাকাণ্ডের বিচার এবং ছাত্রসমাজের দাবি মেনে স্বস্তির পরিবেশ ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছেন দি ফোরাম অব ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড আর্কিটেক্টস বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী গোলাম মোস্তফা। আজ শনিবার এক বিবৃতিতে তিনি এই আহ্বান জানান।
তিনি কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান শিক্ষার্থীদের ন্যায্য আন্দোলনের ওপর সরকারি দলের অন্যায় হামলা এবং পরবর্তীতে দেশব্যাপী সাধারণ জনতার ওপর সরকারি দল ও বিভিন্ন বাহিনী কর্তৃক সংঘটিত যৌথ হামলা ও নির্বিচার হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানান। এছাড়া গণগ্রেপ্তারের শিকারদের মুক্তি, অবিলম্বে কারফিউ প্রত্যাহার এবং আন্দোলনকারী ছাত্রসমাজের যৌক্তিক দাবি মেনে নিয়ে জনজীবনে স্বস্তির পরিবেশ ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, ছাত্রসমাজ কোটা সংস্কারের দাবিতে দীর্ঘদিন যাবৎ যে আন্দোলন করে আসছিলেন, তা তাদের গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক অধিকার। সরকার আন্তরিক হলে দাবির প্রতি দ্রুত সাড়া দিয়ে সহজ ও শান্তিপূর্ণ সমাধানে যেতে পারতেন। কিন্তু তা না করে, তাদের আন্দোলনকে দমন করার জন্য নিজেদের দলীয় কর্মীবাহিনীকে ছাত্রসমাজের বিরুদ্ধে মাঠে নামার নির্দেশ দিয়েছেন। ফলশ্রুতিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগের হাতে রক্তাক্ত হয়েছে, ক্যাম্পাসগুলো হয়েছে রক্তে রঞ্জিত। সরকার এর দায় এড়াতে পারে না।’
তিনি আরও বলেন, ছাত্রসমাজের উপর ছাত্রলীগের অন্যায় হামলাকে ছাত্রসমাজ ও সাধারণ জনতা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেনি। তারা দলমত নির্বিশেষে রাস্তায় নেমে আসলে, তাদেরকে দমন করার জন্য সরকার পুলিশ-বিজিবি-র্যাব নিয়োজিত করে পরিস্থিতি আরও জটিল করে তোলে। এসব বাহিনীর নির্বিচার গুলি বর্ষণের শিকার হয়ে শিশু, ছাত্র-ছাত্রী, সাংবাদিক, পথচারী, শ্রমিক নির্বিশেষে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ২০৩ জনের অধিক সাধারণ মানুষ নিহত হয়েছেন। বহু মানুষকে বেওয়ারিস হিসেবে দাফন করা হয়েছে। কত মানুষ যে এখনও নিখোঁজ রয়েছে, তার হিসাব নেই। হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছেন। দেশের নিরাপত্তায় নিয়োগকৃত বাহিনী আজ নিজ দেশের মানুষের বুকেই গুলি ছুঁড়তে কার্পণ্য করছে না! এর চেয়ে মর্মান্তিক বিষয় আর কী হতে পারে!
গোলাম মোস্তফা বলেন, দেশে সেনাবাহিনীকে মোতায়েন করে কারফিউ জারি করা হয়েছে। তাদেরও যুদ্ধের ময়দানের ন্যায় জনতার ওপর গুলি ছুঁড়তে দেখা গেছে! ইন্টারনেটের বিচ্ছিন্নতার সাথে সাথে এই কারফিউয়ের ফলে ব্যবসা-বাণিজ্য আজ অনেকাংশেই থমকে দাঁড়িয়েছে। নতুন করে শুরু হয়েছে অজ্ঞাতনামাদের নামে মামলা দেওয়া ও গণগ্রেফপ্তার। এমনকি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতদেরকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। স্বাধীন বাংলাদেশের মানুষ যা কল্পনাও করতে পারেনি, সে রকম চিত্রই আজ দেখছে।
তিনি বলেন, এমতাবস্থায়, “অবিলম্বে কারফিউ প্রত্যাহার, গণগ্রেপ্তার বন্ধ, নিখোঁজদের সন্ধানের ব্যবস্থা করা, হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনা ও ছাত্রসমাজের যৌক্তিক সকল দাবি মেনে নিয়ে দেশে শান্তি ও স্বস্তির পরিবেশ ফিরিয়ে আনা এবং সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত, বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহ খোলার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট মহলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।