ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এটি প্রথম বড় ধরনের আন্দোলন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সোমবার ছাত্রলীগের হামলায় আহত কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করা এক শিক্ষার্থী।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলছে কয়েকদিন ধরে। এর মধ্যে গতকাল সোমবার (১৫ জুলাই) আন্দোলনকারীদের ওপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন বিশ্বিবিদ্যালয়ে হামলা হয়েছে। ছাত্রলীগের এই হামলায় তিন শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
এদিকে, শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনকে টানা চতুর্থবার ক্ষমতায় আসা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় আন্দোলন বলে উল্লেখ করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া। এক প্রতিবেদনে সংবাদ মাধ্যমটি বলছে, গত জানুয়ারির বিরোধীদের বয়কট করা নির্বাচনে টানা চতুর্থবার ক্ষমতায় আসা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এই আন্দোলন প্রথম কোনো বড় আন্দোলন।
হোয়াই আর হান্ড্রেডস অব স্টোডেন্টস প্রোটেস্টিং ইন বাংলাদেশ? শিরোনামে ওই প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, ঢাকাসহ দেশব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে হাসিনার আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠনের সহিংস সংঘর্ষ হয়।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, দুই শিক্ষার্থীর মধ্যে এই সংঘর্ষ হয়। এর মধ্যে একদল বর্তমান কোটা ব্যবস্থার বিরোধী, অন্যদল কোটা ব্যবস্থা নিয়ে সরকারের অবস্থানের সমর্থনকারী। লাটিসোঁটা, ইট ও রডকে এই সংঘর্ষে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ফলে একাধিক ক্যাম্পাসে আহতের ঘটনা ঘটে।
এর আগে উচ্চ আদালত সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহাল করলে আন্দোলন শুরু হয়। গত সপ্তাহে উচ্চ আদালতের এই রায়ের ওপর আপিল বিভাগের এক মাসের স্থগিতাদেশ সত্ত্বেও আন্দোলন চলছে।
অন্যদিকে, আদালতের আদেশের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা শিক্ষার্থীদের দাবি না মানায় রোববার রাতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন আরও জোরদার হয়। তিনি মুক্তিযোদ্ধা কোটার বিরোধীদের ‘রাজাকার’ (১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে যারা পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করেছিল) হিসেবে আখ্যা দেন। তার এই বক্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা হলে ছেড়ে মধ্যরাতে আন্দোলন শুরু করে।
শিক্ষার্থীরা দাবি আদায়ে দেশব্যাপী তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদুল ইসলাম বলেছেন, এটি ছাত্র আন্দোলনের চেয়ে বেশি কিছু। এই আন্দোলনকে দমাতে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে উসকানি দেওয়া হয়েছে। তাই সাধারণ মানুষকেও রাস্তায় নেমে আসতে হবে।
এদিকে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ শিক্ষার্থীদের আবেগ কাজে লাগিয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে রাষ্ট্রবিরোধী আন্দোলনে রূপ দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, কোনো ধরনের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি মেনে নেওয়া হবে না।