Logo
Logo
×

সংবাদ

‘শিবির’ আখ্যা দিয়ে কোটা আন্দোলনকারীকে মারধর

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ জুলাই ২০২৪, ১১:০০ পিএম

‘শিবির’ আখ্যা দিয়ে কোটা আন্দোলনকারীকে মারধর

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও তার কয়েকজন অনুসারীর বিরুদ্ধে কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশগ্রহণ করা মোস্তফা মিয়া নামের এক শিক্ষার্থীকে ‘শিবির’ আখ্যা দিয়ে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে । গত মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হলে এ ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে। ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী নির্যাতনের সঠিক বিচার ও নিরাপদ জীবনের নিশ্চয়তা চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।

ভুক্তভোগী মোস্তফা মিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। আর অভিযুক্তরা হলেন শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু ও তারা অনুসারী সৈয়দ আমীর আলী হল ছাত্রলীগের সহসভাপতি ফরহাদ হাসান খান ও ছাত্রলীগ কর্মী শামীম রেজা।

তবে মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করেন ছাত্রলীগ সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু ।তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানেন না। দেখলাম অভিযোগে আমার নামও রয়েছে। আমি বিষয়টি নিয়ে কথাবার্তা বলে জানার চেষ্টা করছি। তিনি দাবি করেন, বিষয়টি তার কাছে বানোয়াট মনে হচ্ছে। 

মারধরের বিষয়ে কোনো কথা বলেননি অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা ফরহাদ হাসান খান। তাকে ফোন করা হলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।

লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, সোমবার (৮ জুলাই) কোটা সংস্কারের দাবিতে রেলপথ অবরোধে অংশগ্রহণ করেন মোস্তফা মিয়া। বিষয়টি জানতে পেরে ফরহাদ তাকে কল করে ক্যাম্পাসে দেখা করতে বলেন। তখন শঙ্কিত হয়ে বিষয়টি বিভাগের বড় ভাই আরিফ মাহমুদকে জানায় তিনি। পরের দিন শহিদুল্লাহ অ্যাকাডেমিক ভবনের সামনে আরিফের সঙ্গে দেখা করে তিনি। সেখানে উপস্থিত হয় ছাত্রলীগ কর্মী ও একই বিভাগের শিক্ষার্থী শামীম রেজা। তখন তাকে ফরহাদের ডাকার বিষয়টি জানান।

একপর্যায়ে ফরহাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন শামীম এবং বলেন, ‘শিবির ধরছি, নিয়ে আসব নাকি?’ এরপর তাকে (মোস্তফাকে) টুকিটাকি চত্বরে নিয়ে যায়। সেখানে ফরহাদও উপস্থিত ছিলেন। সে প্রচন্ড গালিগালাজ করার পাশাপাশি শিবির আখ্যা দিয়ে মোস্তফাকে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবুর রুম নিয়ে যায়। তখন বাবু তার ফোন চেক করতে শুরু করেন। ফোন চেক করে শিবিরের সঙ্গে কোনো সম্পৃক্ততা না পেলেও ফেসবুকে কোটা আন্দোলন নিয়ে পোস্ট করা দেখে রেগে গিয়ে তাকে মারধর শুরু করেন। মারার সঙ্গে সঙ্গে বলেন, ‘তুই শিবির করিস, স্বীকার কর।’ শিবিরের সঙ্গে ন্যূনতম কোনো সম্পর্ক নেই জানালেও দফায় দফায় মোস্তফাকে মারধর করেন তিনি। এ সময় বিভাগের বড় ভাই শামীমকে জড়িয়ে ধরলেও সে ধাক্কা দিয়ে সভাপতির কাছে পাঠিয়ে দেয়।

লিখিত অভিযোগে মোস্তফা বলেন, আমার পাশে পাঁচজন দাঁড়িয়ে আমাকে ঘিরে রাখে। আর বাবু ভাই লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি মারতে থাকে। এসময় ফারহাদ ভাই লাথি মারে, ঘুষি মারে। সেই সঙ্গে অন্যরাও লাথি ও ঘুষি মারতে থাকে। ৮ থেকে ১০ মিনিট মেরে কিছু সময় বিরতি নেয়, এরপর আবারও মারে। এভাবে দুই ঘণ্টার অধিক সময় আমার ওপর নির্যাতন চালায়। ফরহাদ ভাই আমাকে কানে কানে বলে―তুই শিবির করিস এটা স্বীকার কর, তাহলে ছেড়ে দেব।। আর তোর ডিপার্টমেন্টে কে কে শিবির করে এটা বল, ছেড়ে দেব। আমি তো নিজেও শিবির করি না, আর কে কে করে তাও জানি না। আমি তাদেরকে বোঝানোর চেষ্টা করি।

তিনি আরও অভিয়োগ উল্লেখ করেন, মারধরের পর তারা আমাকে হল ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। পরে বাবু ভাইয়ের একজন অনুসারী শহীদ শামসুজ্জোহা হলের গণরুম থেকে আমাকে বের করে দেয়। এখন আমি ক্যাম্পাসের বাইরে অবস্থান করছি। এ ঘটনার পর আমি খুবই শারীরিক ও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি। আমি জীবন নিয়ে শঙ্কায় আছি।

Logo

প্রধান কার্যালয়: ৬০৯০ ডাউসন বুলেভার্ড, নরক্রস, জর্জিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন