কোটা সংস্কারের দাবিতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন সড়কে অবরোধ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২৪, ০৩:২৮ পিএম
সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা বাতিল ও ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে দেশব্যাপী 'বাংলা ব্লকেড' পালন করছেন শিক্ষার্থীরা। আজ বুধবার (১০ জুলাই) দুপুরে কোটা পদ্ধতির বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে দিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে জড়ো হয় শিক্ষার্থীরা। এসময় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে সেখানে অবস্থান নিয়ে শিক্ষার্থীরা ছোট ছোট দল হয়ে মৎস্য ভবন, পরীবাগ মোড়, বাংলামোটর মোড়, কারওয়ান বাজার ও ফার্মগেটের দিকে যান।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আমাদের দাবি আদালতের কাছে নয়, আদালতের কাছে দাবি ছিল, এখন আর নেই। এখন আমাদের দাবি নির্বাহী বিভাগের কাছে। কোটার যৌক্তিক সংস্কার করে সংসদে আইন পাস করতে হবে।’
এছাড়া সকাল ১০টার দিকে খুলনার ব্রজলাল কলেজের (বিএল) শিক্ষার্থীরা নতুন রাস্তা এলাকায় রাস্তা দখলে নেন। রেললাইন অবরোধ করে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেন তারা।
এদিকে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীরা সকাল পৌনে ১০টার দিকে জব্বার মোড় এলাকায় ঢাকা থেকে দেওয়ানগঞ্জগামী তিস্তা এক্সপ্রেস থামিয়ে রেললাইনে ব্যারিকেড দিয়ে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেয়। বাংলা ব্লকেডের সমর্থনে ক্যাম্পাসে মিছিলও করেন তারা।
এছাড়া এই অবরোধের কারণে ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য স্থানে সড়ক ও রেলপথে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
গতকাল মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাহিদ ইসলাম বলেন, আমাদের ‘বাংলা ব্লকেড’ কাল থেকে সারাদেশের ৬৪ জেলায় চলবে। বুধবার সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত অবরোধ চলবে। এ অবরোধের আওতায় থাকবে সড়ক ও রেলপথ। তিনি আরও বলেন, ২০১৮ সালের পরিপত্র যদি ফিরে আসে, সে ক্ষেত্রে কোটা নিয়ে আবার ঝামেলা হতে পারে। তাই, আমরা সরকার ও নির্বাহী বিভাগের কাছে সম্পূর্ণ সমাধান চাই।
এদিকে আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, যদি সরকারের নির্বাহী বিভাগ থেকে কমিশন গঠনের মাধ্যমে আমাদের দাবি মেনে নেয়, সে ক্ষেত্রেই আমরা রাজপথ ছেড়ে ক্লাসরুমে ফিরে যাব।
উল্লেখ্য, সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি পুনর্বহালে হাইকোর্টের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে দেশজুড়ে প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন ছাত্র আন্দোলন চলছে।
এর আগে ২০১৮ সালে সরকার ব্যাপক ছাত্র আন্দোলনের মুখে নবম থেকে ত্রয়োদশ গ্রেডের চাকরি থেকে সব ধরনের কোটা বাতিল করেছিল। এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ কোটাও বাতিল হয়। হাইকোর্ট গত ৫ জুন মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করেন। এরপর থেকে ফের বিভিন্ন ক্যাম্পাসে কোটা বাতিলের দাবিতে ছাত্র আন্দোলন শুরু হয়।