ভারতে চিকিৎসার নামে ভয়ংকর প্রতারণা, বহু বাংলাদেশির কিডনি অপসারণ
প্রতীকী ছবি
ভারতে চিকিৎসার মান ভালো, আবার খরচও তুলনামূলক কম—এসব বিবেচনা করে প্রতিদিন শত শত বাংলাদেশি দেশটিতে যাচ্ছেন চিকিৎসা করাতে। ভারতে চিকিৎসা করাতে গিয়ে নানাভাবে প্রতারিত হয়েছেন এমন খবর মাঝে মাঝেই খবরের শিরোনাম হতে দেখা গেছে। এবার সামনে এলো আরও ভয়ংকর এক খবর। নয়াদিল্লি-ভিত্তিক ইন্দ্রপ্রস্থ অ্যাপোলো হাসপাতালের এক চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করেছে ভারতের পুলিশ। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ হলো- তিনি অপারেশনের নামে অন্তত ১৫ থেকে ১৬ জন ব্যক্তির কিডনি সরিয়েছেন। আর যাদের কিডনি সরানোর হয়েছে তাদের অধিকাংশই বাংলাদেশি।
আজ মঙ্গলবার (৯ জুলাই) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই নারী চিকিৎসকের নাম ডা. বিজয়া কুমার। তিনি বাংলাদেশ ও ভারতের কিডনি পাচার চক্রের সঙ্গে জড়িত।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, দিল্লি পুলিশ বিজয়া গ্রেপ্তার করে। অ্যাপোলো হাসপাতালের ওই নারী চিকিৎসক নয়াদিল্লি সংলগ্ন নয়ডা শহরে ‘যথার্থ’ নামের একটি হাসপাতালে অপারেশনের নামে অন্তত ১৫ থেকে ১৬ জন ব্যক্তির কিডনি সরান। তিনি ‘যথার্থ’ হাসপাতালের ভিজিটিং কনসালটেন্ট ও সার্জন ছিলেন। যাদের কিডনি সরিয়েছেন, তাদের অধিকাংশই বাংলাদেশের নাগরিক। ২০২১ থেকে ২০২৩ সালের বিভিন্ন সময়ের মধ্যে এসব অপারেশন করা হয়।
দিল্লি পুলিশের বরাতে ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সক্রিয় এই চক্র মধ্যবর্তী ব্যক্তি বা দালালদের মাধ্যমে দরিদ্র বাংলাদেশিদের অর্থের লোভ দেখিয়ে নয়াদিল্লির আশপাশের কিছু হাসপাতালে নিয়ে আসত। সেসব হাসপাতালে চক্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা বাংলাদেশিদের কিডনি অপসারণ করতেন।
দিল্লিতে একাধিক কিডনি পাচারকারী চক্র সক্রিয়। সেই চক্রের সঙ্গে জড়িত গত মাসে এমন তিন বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করে দিল্লি পুলিশ। এই চক্রটি নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের নামে জাল নথি এবং কিডনি দাতা এবং গ্রহণকারীর (উভয় বাংলাদেশি) মধ্যে সম্পর্ক রয়েছে বলে কাগজ তৈরি করতো। কারণ ভারতীয় আইনে এই কাগজ দরকার হয়। এসব জাল নথিও জব্দ করেছে পুলিশ।
বিশ্বের অধিকাংশ দেশের মতো ভারতেও অর্থের বিনিময়ে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিক্রি নিষিদ্ধ এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তবে, কোনো ব্যক্তি স্বেচ্ছায় কাউকে যদি কিডনি বা অন্য কোনো প্রত্যঙ্গ দিতে চান, তাহলে তা বৈধ।