বিপিএসএর সভা ও বিবৃতি
পুলিশ কর্মকর্তাদের দুর্নীতির খবরে গণমাধ্যমের ওপর ক্ষোভ
পুলিশের একাধিক সাবেক কর্মকর্তার সম্পদ ও দুর্নীতির বিষয়ে সম্প্রতি প্রকাশিত খবরগুলো নিয়ে সংবাদমাধ্যমের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএসএ)। খবরগুলো অতিরঞ্জিত বলে সংগঠনটির নেতারা উল্লেখ করেছেন। শুক্রবার (২১ জুন) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, ‘এ ধরনের আংশিক, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ঢালাওভাবে প্রকাশিত/প্রচারিত অতিরঞ্জিত রিপোর্টের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন।’
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার পুলিশ সদর দপ্তর মিলনায়তনে বিসিএস ক্যাডার পুলিশ কর্মকর্তাদের এ সংগঠনের সভা হয়। সেখানেও অনেকে এসব প্রতিবেদনের বিষয়ে ক্ষোভের কথা জানান। কেউ কেউ এ ধরনের খবর প্রকাশে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তোলেন বলে উপস্থিত একাধিক কর্মকর্তা জানান।
শুক্রবার অ্যাসোসিয়েশনের বিবৃতিতে এ ধরনের খবর প্রকাশের সঙ্গে ‘স্বাধীনতা বিরোধী সাম্প্রদায়িক শক্তি এবং গণতন্ত্র ও দেশবিরোধী চক্রের’ সম্পর্ক আছে বলে দাবি করা হয়। এতে বলা হয়, ‘স্বাধীনতা ও দেশবিরোধী চক্র তাদের দোসর বিদেশে পলাতক সন্ত্রাসী কর্তৃক ধারাবাহিকভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা ও অতিরঞ্জিত তথ্য প্রকাশ করে পুলিশ কর্মকর্তাদের চরিত্র হননে ব্যস্ত। তাদেরই অনুকরণে ইদানিং কোনো কোনো গণমাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশের বর্তমান ও প্রাক্তণ সদস্য সম্পর্কে উদ্দেশ্য প্রণোদিত মানহানিকর নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশ করছে, যা বাংলাদেশ পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার হীন উদ্দেশ্য বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।’
পুলিশ কর্মকর্তাদের দুর্নীতি নিয়ে প্রতিবেদনগুলোতে অপসাংবাদিকতা বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। এগুলো পুলিশের ‘মনোবল ধ্বংসের অপপ্রয়াস’ বলে এতে উল্লেখ করা হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভা শুরু হয়। চলে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত। সভায় ২০ জনের বেশি পুলিশ কর্মকর্তা আলোচনায় অংশ নেন। ঢাকার বাইরের পুলিশ কর্মকর্তাদের কেউ কেউ অনলাইনে সভায় যুক্ত হন।
নিজের ও পরিবারের নামে জমি, বাড়ি, ফ্ল্যাটসহ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত অস্বাভাবিক পরিমাণ সম্পত্তির মালিকানা নিয়ে কিছুদিন ধরে আলোচনায় আছেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ। সম্প্রতি আলোচনায় এসেছে অবসরপ্রাপ্ত আরেক কর্মকর্তা মো. আছাদুজ্জামান মিয়া ও তাঁর পরিবারের সম্পদ। তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার ছিলেন।
সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেনজীর আহমেদ ও আছাদুজ্জামান মিয়ার সম্পদের মালিকানার বিষয়গুলো সামনে আসায় বিষয়টিকে অস্বস্তিকর মনে করছেন কোনো কোনো কর্মকর্তা। কেউ কেউ এটাকে বাহিনীর ভাবমূর্তির ক্ষুণ্ন হিসেবে দেখছেন। তাই এ বিষয়ে করণীয় নিয়ে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের কার্যনির্বাহী কমিটি বৈঠক করে।