সারা দেশে আজ সোমবার যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে মুসলমানদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা উদ্যাপিত হচ্ছে। মহান আল্লাহর অনুগ্রহলাভের আশায় ঈদের জামাত শেষ করে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা সামর্থ্য অনুযায়ী পশু কোরবানি দিতে শুরু করেছেন।
রাজধানীর গুলশান, বনানী, রামপুরা, বনশ্রী, মালিবাগ, খিলগাঁও, মুগদা, যাত্রাবাড়ীসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকে মুসল্লিরা নিজ নিজ বাসার সামনের রাস্তায় ও গ্যারেজে পশু কোরবানি শুরু করেছেন ঢাকার বাসিন্দারা।
এ সময় কথা হয় বাগিচারটেক এলাকায় কোরবানিতে ব্যস্ত কাওসার শেখের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বছরের এই দিনটা আল্লাহ কোরবানি দিতে বলেছেন। সে জন্য এত আয়োজন। একটা গরু কোরবানি হয়েছে। এটা পাশের বিল্ডিংয়ের মালিকের। একটু সাহায্য করছি।’
বনশ্রীর বাসিন্দা কায়ইয়ুম বলেন, ‘পশু জবাইয়ের মাধ্যমে মনের পশুকে কোরবানি দিয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা করেন মুসলমানরা। তাই পশু কোরবানি করছি।’
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে এবার, এবার সারা দেশে কোরবানির পশুর চাহিদা ১ কোটি ৭ লাখ। সেখানে গরু-ছাগলসহ কোরবানির জন্য পশু প্রস্তুত আছে প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ। যদিও ঢাকায় কত পশু কোরবানি হবে তা নিয়ে কোনো তথ্য জানা যায়নি।
তবে সিটি করপোরেশন প্রায় ১২ লাখ পশু কোরবানি হবে বলে মনে করছে। জবাই করা পশু এবং কোরবানির হাট মিলিয়ে বর্জ্য তৈরি হবে ২২ হাজার মেট্রিক টনের মতো। দূষণ এড়াতে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন পশু জবাইয়ের স্থান নির্ধারণ করে দিয়েছিল। তবে তাতে সাড়া মেলেনি এবারও। বরাবরের মতোই নগরজুড়ে রাস্তা ও অলিগলিতে পশু জবাইয়ের দৃশ্য দেখা গেছে।
এদিকে, রাজধানীতে ঈদের প্রধান জামাত হয় সকাল সাড়ে ৭টায় জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে। রাষ্ট্রপতি, মন্ত্রিসভার সদস্য, বিচারপতিসহ সর্বস্তরের মানুষ সেখানে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ঈদের নামাজ আদায় করেন। এরপর দেশবাসীর কল্যাণ কামনায় মোনাজাত করেন। অন্যদিকে পাড়া-মহল্লার বেশির ভাগ মসজিদে ঈদের নামাজ হয় সকাল ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে।
এবারের ঈদে রাজধানীতে পশু কোরবানির ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বর্জ্য অপসারণের ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। অন্যদিকে পশু কোরবানির ছয় ঘণ্টার মধ্যে বর্জ্য অপসারণের লক্ষ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েছে বলে জানিয়েছেন মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
কোরবানির বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় দুই সিটির নগর ভবনে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণকক্ষ খোলা হয়েছে। কোনো এলাকায় বর্জ্য যথাসময়ে অপসারণ না হলে উত্তর সিটির হটলাইনের নম্বর ১৬১০৬ এবং দক্ষিণ সিটির নিয়ন্ত্রণকক্ষের ০১৭০৯৯০০৮৮৮ এবং ০২২২৩৩৮৬০১৪ নম্বরে ফোন করে তথ্য ও অভিযোগ জানতে পারবেন নাগরিকেরা।