Logo
Logo
×

সংবাদ

বিজ্ঞাপন ঘিরে সমালোচনার ঝড়

ফিলিস্তিন নিয়ে কটাক্ষ করেছে কোকাকোলা!

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ জুন ২০২৪, ০১:৫৩ এএম

ফিলিস্তিন নিয়ে কটাক্ষ করেছে কোকাকোলা!

কথায় আছে প্রচারেই প্রসার। কিন্তু বিশ্ব বিখ্যাত কোমল পানীয়ের ব্রান্ড কোকাকোলার ক্ষেত্রে তার উল্টো ঘটনা ঘটেছে। সম্প্রতি ইসরায়েলি এই বেভারেজ পণ্যটি নিয়ে বানানো একটি বিজ্ঞাপন প্রচারিত হয়। এরপর থেকে কোকাকোলা বর্জনের যে আন্দোলন চলছিল সেটি আরও বেগবান হচ্ছে। 

কোকাকোলা এই বিজ্ঞাপনে ফিলিস্তিন নিয়ে কটাক্ষ করেছে বলে অভিযোগ তুলছেন অনেকেই। এ কারণে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে কোকাকোলা ও এই বিজ্ঞাপন চিত্রে যেসব অভিনেতা অংশ নিয়েছেন তাদের বর্জনের ডাক দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন ব্যক্তি ও গ্রুপ থেকে প্রতিবাদী নানা পোস্ট দেওয়া হচ্ছে। 

গত বছরের অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি হামলা শুরু হওয়ার পর থেকেই দেশব্যাপী ইসরায়েলি পণ্য বর্জনের ডাক আসে। এর ফলে বাংলাদেশি প্রচলিত ইসরায়েলি অনেক পণ্যের সঙ্গে বর্জনের হিড়িক পড়ে এক সময়ের সবার পছন্দের পানীয় কোকাকোলাও। জনগণের বর্জনের মুখে এই ব্র্যান্ডটির জায়গা করে নেয় দেশীয় বিভিন্ন ব্রান্ডের কোমল পানীয়। 

অবস্থা এমন পর্যায়ে যায় যে, কয়েক দফা পণ্যের দাম কমিয়েও ক্রেতা পাচ্ছিল না কোকাকোলা। প্রায় প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এই পণ্যটি বর্জনের নানা সচিত্র তথ্য আসছিল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তবে আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে বাজারে ফের ঘুরে দাঁড়াতে একটি নতুন বিজ্ঞাপন নির্মাণ করে কোকাকোলা বেভারেজ। 

ওই বিজ্ঞাপনে বলা হয়, কোককে সবাই যে দেশের পণ্য মনে করছে, আসলে সেই দেশের পণ্য নয় কোকাকোলা। মানুষ সঠিক তথ্য না জেনেই কোকাকোলা বয়কটের ডাক দিয়েছে। ১৯০টি দেশের মানুষ কোক খায়। এমনকি ফিলিস্তিনে কোকাকোলার ফ্যাক্টরি রয়েছে। তাই বিভ্রান্ত না হয়ে গুগলে সার্চ দিয়ে নিশ্চিত হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে বিজ্ঞাপনটিতে।

বিজ্ঞাপনটিতে মডেল হয়েছেন অভিনেতা শরাফ আহমেদ জীবন, শিমুল শর্মা, আব্দুল্লাহ আল সেন্টু প্রমুখ। তবে বিজ্ঞাপনটির নির্মাতা ও বিজ্ঞাপন সংস্থা সম্পর্কে বিজ্ঞাপনে কোনো তথ্য জানানো হয়নি। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অভিনয়ের পাশাপাশি বিজ্ঞাপনটি নির্মাণের পেছনেও রয়েছেন শরাফ আহমেদ জীবন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিজ্ঞাপনটি প্রচারে আসার পর থেকে সমালোচনার মুখে পড়েছেন অভিনয়শিল্পীরা। তাদের বয়কটের হুমকি দিয়েছেন নেটিজেনরা।

এ বিষয়ে অভিনেতা শিমুল শর্মা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মানুষ ভাইরাল হতে পছন্দ করে, ফেসবুকে কথা বলতে পছন্দ করে। কোনো বিষয় পেলে কেউ ছাড় দিতে চায় না। সবাই নিজেদের মতামত দিতে পছন্দ করে। সেটাই হয়েছে। তবে আমি সমালোচনা নিয়ে কথা বলতে চাচ্ছি না। মানুষের সঙ্গে তর্কে যেতে চাই না। তাতে মনে হতে পারে, আমি তাদের কাউন্টার দিচ্ছি।’

বিজ্ঞাপনটি প্রচারের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মানুষের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে শিমুল শর্মা বলেন, ‘আমি যেহেতু কাজ করেছি, তার মানে জেনেশুনেই কাজ করেছি। আমি পণ্যটাকে প্রাধান্য দিয়েছি। আমরা কিন্তু কোনো গালি দেই নাই, উদ্ভট কোনো কাপড় পরি নাই। এমন কোনো প্রোডাক্টের কথা বলি নাই, যেটা সরাসরি ধর্মকে আঘাত করে। মানুষের সেন্টিমেন্ট তো আর পড়তে পারি না। 

তিনি বলেন, তারা বিজ্ঞাপনটি কীভাবে নেবে সেটা জানা ছিল না। আমি জানতাম না ধর্মপ্রাণ মানুষ বিষয়টি এমনভাবে নেবে, তাদের মনে আঘাত লাগবে। জানলে হয়তো আরও ভাবনার জায়গা থাকত। তবে আমি জানি, অভিনেতা হিসেবে আমাদের কিছু দায়িত্ব আছে। ভালো–মন্দ যাচাই করে আমাদের কাজ করা উচিত। সেই জায়গা থেকে আমারও দায় আছে, সেটা অস্বীকার করব না।’

এ বিষয়ে সোশ্যাল মিডিয়া অ্যানালিস্ট সৌহার্দ্য শুভ বলেন, বিজ্ঞাপনটিতে আকাশকুসুম পেজ নামে একটি শব্দের ব্যবহার করে তারা পরোক্ষভাবে দেশের সম্প্রতি প্রয়াত একজন বিখ্যাত আলেমের প্রতি কটাক্ষমূলক ইঙ্গিত করেছে বলে নেটিজেনদের অনেকেই মনে করছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন মানুষ খুব অল্পতেই অনেক কিছু বুঝতে পারে। সুতরাং বিজ্ঞাপন নির্মাতারা যেটা আশা করেছিল, তাদের বাজার তারা ফিরে পাবে সেটি হয়নি। এটি তাদের জন্য বুমেরাং হয়েছে। এটি প্রচারের পর জনগণের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সেটাই প্রমাণ করে।

Logo

প্রধান কার্যালয়: ৬০৯০ ডাউসন বুলেভার্ড, নরক্রস, জর্জিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন