প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণির সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা বহাল রাখতে হাইকোর্টের আদেশের প্রতিবাদ জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। ঢাবি ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী এবং ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনের ফ্রন্টলাইনার ও নেতাকর্মীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন ব্যানার নিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেন।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে মানববন্ধন করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে মানববন্ধন করেন ছাত্র অধিকার পরিষদের সাবেক নেতাকর্মীরা।
সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদ জানান তারা। ছাত্র অধিকার পরিষদের অন্যতম শীর্ষ নেতা বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, ‘বৈষম্যপূর্ণ দেশ গড়ার জন্য আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করেননি। তারা ন্যায় ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠার জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন। চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা বাস্তবায়ন লাখ লাখ বেকার শিক্ষার্থীর স্বপ্ন ধ্বংসের শামিল। এটা ছাত্রদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা।’ এ আদেশ প্রত্যাহারের জন্য হাইকোর্টের প্রতি অনুরোধও জানান তিনি।
২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনের সাবেক আহ্বায়ক হাসান আল মামুন বলেন, 'কোটা পুনর্বহালে উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ বেআইনি ও অসাংবিধানিক। সংবিধানে স্পষ্টভাবে বলা আছে, দেশের প্রতিটি নাগরিকের সরকারি চাকরিতে সমান অধিকার রয়েছে। তাহলে সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা কেন?’ ২০১৮ সালের মতো দেশের সব শিক্ষার্থীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
শীর্ষ গ্রেডের সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা পুর্নবহালের আদালতের রায়ের প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয় সড়কে পৃথক মিছিলও করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থী হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, 'গুটিকয়েক শিক্ষার্থীর দাবির ওপর ভিত্তি করে যারা অন্যায্য সুবিধা চায় তাদের দাবির ভিত্তিতে কোটা পুনর্বহাল শিক্ষার্থীরা মেনে নেবে না। কোটা পদ্ধতি বাতিল করতে হলে আবারও রাজপথে নামতে হবে। আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা সাম্য ও ন্যায়বিচারের জন্য যুদ্ধ করেছেন।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের ফটক থেকে শুরু হওয়া র্যালিতে অন্তত ৫০০ শিক্ষার্থী যোগ দেন। এই গ্রন্থাগারে শিক্ষার্থীরা সারা বছর সরকারি চাকরির জন্য প্রস্তুতি নেন। রায় বাতিলের স্লোগান দিয়ে মিছিল নিয়ে তারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে যান।
এর আগে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহালের দাবিতে বুধবার (৫ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন।
এদিকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে হাইকোর্টের রায়ের প্রতিবাদ জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।