ছবি: সংগৃহীত
যেসব কাজের মাধ্যমে শেখা যায়, পড়া তার মধ্যে অন্যতম। আজকের দিনে শিক্ষার সবচেয়ে মৌলিক দক্ষতাও বলা যায় পড়তে জানা এবং পড়াকে। এমনকি সমাজের নানা শ্রেণি সম্পর্কে অবগত হওয়া এবং বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশগ্রহণের জন্যও পড়তে জানতে হয়। শুধু তাই নয়, ট্রাফিকের কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন চিহ্ন, চিকিৎসায় ব্যবহৃত বিভিন্ন নির্দেশনা এবং সংবাদমাধ্যমের সংবাদ জানতেও পড়তে হয়।
এ ছাড়া তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে পৃথিবীর কোন প্রান্তে কি ঘটছে তা জানতে মানুষকে অনলাইনে থাকা তথ্য বা বই, ম্যাগাজিন সাহায্য করে। মানুষকে এসব তথ্য শিক্ষিতও করে তুলে। মানব মস্তিষ্ক ধারাবাহিকভাবে বিকশিত হয় এবং এতে পড়া খুবই কার্যকরভাবে সাহায্য করে। পড়া মানুষকে অধিক কার্যকর কল্পনা শক্তি তৈরিতে সাহায্য করে এবং নান্দনিকতার শীর্ষে নিয়ে যায়। তাই পৃথিবীর সব দেশের সব নাগরিকের জন্য পড়া খবুই গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্যাপার। প্রশ্ন হলো পৃথিবীর কোন দেশের মানুষ সবচেয়ে বেশি সময় বই পড়ে ব্যয় করে?
বই পড়ায় সপ্তাহভিত্তিক সময়ে কোন দেশের নাগরিকরা এগিয়ে তা জানতে দ্য ওয়ার্ল্ড কালচার স্কোর ইনডেক্স বৈশ্বিকভাবে একটি সমীক্ষা চালায়। তবে এই সমীক্ষায় কোন ধরনের বই পড়ার কথা বলা হয়েছে তা স্পষ্ট ছিল না। এটি অনলাইনে নিউজ পড়া থেকে শুরু করে অফিসের প্রয়োজনে ই-মেইল পড়া, ম্যাগাজিন বা ছাপা বইও হতে পারে। এ ছাড়া সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের বিস্তারিত পরিচয়ও প্রকাশ করা হয়নি। অর্থাৎ তাদের বয়স কত, শিক্ষাগত যোগ্যতা কি, তাদের লিঙ্গ কি বা ঠিক কতজন মানুষ এই সমীক্ষায় অংশ নিয়েছেন ইত্যাদি। যদিও সমীক্ষাটি ২০২০ সালের দিকে চালানো হয়। তবে সম্প্রতি সমীক্ষার ফলাফলটি আবার সামাজিকমাধ্যমে আলোচিত হয়। যদিও এই সমীক্ষার প্রকাশিত তালিকায় বাংলাদেশের নাম নেই। ২৯টি দেশের তালিকার মধ্যে বাংলাদেশ নেই। তালিকায় সপ্তাহে বই পড়ে বেশি সময় ব্যয়ের তালিকায় শীর্ষে রয়েছেন ভারতের নাগরিকরা। তারা সপ্তাহে ১০ ঘণ্টা ৪২ মিনিট বই পড়েন। এর পরেই রয়েছে থাইল্যান্ড। দেশটির নাগরিকরা সপ্তাহে ৯ ঘণ্টা ২৪ মিনিট বই পড়েন। এরপর ধারাবাহিকভাবে রয়েছে চীন ( ৮ ঘণ্টা), ফিলিপাইন্স (৭ ঘণ্টা ৩৬ মিনিট), মিসর (৭ ঘণ্টা ৩০ মিনিট), চেক রিপাবলিক ( ৭ ঘণ্টা ২৪ মিনিট), সুইডেন (৭ ঘণ্টা ৬ মিনিট), ফ্রান্স (৬ ঘণ্টা ৫৪ মিনিট), হাঙ্গেরি (৬ ঘণ্টা ৪৮ মিনিট) ও সৌদি আরব (৬ ঘণ্টা ৪৮ মিনিট)।
বই পড়ার ক্ষণস্থায়ী লাভের পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদী লাভও আছে। যেমন বই পড়লে মানুষের আয়ু বাড়ে। বই বা পড়া যায় এমন কিছুতে অংশ না নেওয়া ব্যক্তির চেয়ে অংশগ্রহণকারীরা অন্তত দুই বছর আয়ু বেশি পান। স্বাস্থ্য এবং অবসরের ওপর ইয়েল ইউনিভার্সিটির ১২ বছরব্যাপী চালানো এক গবেষণায় বলা হয়েছে, যারা বই খুব একটা পড়েন না তাদের চেয়ে দৈনিক ৩০ মিনিট বা সপ্তাহে সাড়ে তিন ঘণ্টা বই পড়া ব্যক্তিদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ২৩ শতাংশ বেশি।
সূত্র : ইয়াহু নিউজ, ওয়ার্ল্ড অ্যাটলাস ডটকম