সরকারি বিভিন্ন ওয়েবসাইটে তিন হাজারের বেশি জুয়ার পেজের সন্ধান পেয়েছে অনলাইন ভেরিফিকেশন ও মিডিয়া গবেষণা প্লাটফর্ম ডিসমিসল্যাব। এসব পেজ থেকে গ্রাহকদের চারটি অনলাইন জুয়ার ওয়েবসাইট বা অ্যাপে (ভাগ্যবিডি, জিতাএস, ফেন্সিউইন ও সিক্সসিক্সএস) নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। গতকাল সোমবার ‘হাজারো জুয়ার পেজে ভরা বাংলাদেশের সরকারি ওয়েবসাইট’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানায় সংস্থাটি। গত ২৯ মে প্রতিবেদন প্রস্তুত পর্যন্ত এসব পেজের সবই সক্রিয় ছিল।
এ বিষয়ে ডিসমিসল্যাবের গবেষণাপ্রধান মিনহাজ আমান বলেন, আমরা অনেক দিন ধরে দেখছি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে নানাভাবে বেটিং ক্যাসিনোর বিজ্ঞাপন প্রচার হচ্ছে। এ ধরনের প্রচার অবৈধ। তারপরও বিভিন্ন তারকার ছবি, কখনও ডিপফেক ভিডিও ব্যবহার করে সামাজিক মাধ্যমে টাকা খরচ করে বিজ্ঞাপন প্রচার করা হতো। সর্বশেষ আমরা বাংলাদেশের গভডটবিডির আওতাধীন বেশকিছু সরকারি ওয়েবপোর্টালে বেটিংয়ের প্রচার লক্ষ্য করেছি। এ ব্যাপারে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে ই-মেইল করা হয়েছে।
এ বিষয়ে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের সচিব সামসুল আরেফিন বলেন, ‘সরকারি দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রোগ্রামার বা অন্যদের এটি করার কথা নয়। এসব করলে তাদের তো চাকরি থাকবে না। কোনো স্প্যামার, হ্যাকাররা এটি করেছে বলে আমি ধারণা করছি।’
প্রতিবেদনে বলা হয়, তাদের গবেষকরা ‘গভডটবিডি’ ডোমেইনগুলোতে ‘ক্যাসিনো’, ‘বেটিং’-এর মতো আরও কিছু কি-ওয়ার্ড ব্যবহার করে গুগল অনুসন্ধান এবং ওয়েবসাইটগুলোর সাইটম্যাপ যাচাই-বাছাই করে জুয়ার পেজ চালানোর তথ্য পেয়েছে। বিভিন্ন সরকারি অফিস, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং প্রতিরক্ষা সংস্থার অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে ৩ হাজার ২৯৫টি জুয়ার পেজ মিলেছে। এসব ওয়েবসাইটগুলোর মধ্যে রয়েছে, স্থানীয় সরকার বিভাগ, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ, গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তর, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী এবং বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ।
এরমধ্যে স্থানীয় সরকার বিভাগের ওয়েবসাইটে ৩৫৮টি, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের ওয়েবসাইটে ৩৫২টি, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ওয়েবসাইটে ২৮৮টি, গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে ২৮১টি, ফিন্যান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট একাডেমির ওয়েবসাইটে ১৬৭টি এবং ফেনী জেলা পরিষদের ওয়েবসাইটে ১৪৯টি জুয়ার পেজ রয়েছে।
এছাড়া প্রধান বিদ্যুৎ পরিদর্শকের দপ্তর, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এবং নৌবাহিনীর ওয়েবসাইটেও জুয়ার পেজ রয়েছে।
অন্যদিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটেও জুয়ার পেজের সন্ধান মিলেছে। এছাড়া রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটে এবং বাংলাদেশের শিক্ষকদের জন্য তৈরি অনলাইন ওয়েবপোর্টাল শিক্ষক বাতায়নের একটি পোস্টে জুয়ার প্রচারণা চালাতে দেখা গেছে। এ ছাড়া কিশোরগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজ, নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজ এবং যশোর সরকারি সিটি কলেজের ওয়েবসাইটে নগদ ৮৮ নামে জুয়ার ওয়েবসাইটের পোস্ট দেখা গেছে। যশোর সিটি কলেজের ওয়েবসাইটেও জুয়ার পোস্ট রয়েছে।