পশ্চিমবঙ্গ সিআইডি ঝিনাইদহ-৪ আসনে সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারের খুনির সন্ধানে নেপাল যাচ্ছে। আর খুনের ঘটনায় তার বাল্যবন্ধু আখতারুজ্জামান শাহীনসহ চার জনের বিরুদ্ধে ‘লুকআউট নোটিশ’ জারি করেছে তারা। আখতারুজ্জামান শাহীন নেপালে কোথায় উঠেছিলেন, তারপর সেখানে কোথায় কোথায় গিয়েছিলেন সেগুলো জানতে সিআইডির একটি দল সে দেশে যাচ্ছে। পাশাপাশি, এই ঘটনার আরেক অভিযুক্ত সিয়াম নেপালে থাকতে পারেন বলে সিআইডি ধারণা করছে। এই অভিযানে সিআইডি গোয়েন্দাদের নজরে রয়েছেন সিয়ামও।
তদন্ত কর্মকর্তাদের দাবি, আনোয়ারুল আজীম আনার খুনের ঘটনার মূল অভিযুক্ত আখতারুজ্জামান শাহীন কলকাতা থেকে কাঠমান্ডু হয়ে পালিয়েছেন। তিনি কোথায় গিয়েছেন তা এখনও নিশ্চিত নয়। তবে ধারণা করা হচ্ছে, সংযুক্ত আরব আমিরাত অথবা যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়েছেন।
এদিকে নিউ টাউনের ওই আবাসনের সেপটিক ট্যাংক থেকে প্রায় ৪ কেজি ওজনের মাংসপিণ্ড উদ্ধার করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা। তাদের ধারণা, এসব মাংসপিণ্ড নিহত এমপি আনোয়ারুল আজীমের।
আরও জানা গেছে, নিউ টাউনের ওই আবাসনের সেপটিক ট্যাংকে মানুষের মাংস ছাড়া কিছু চুলও মিলেছে। সবই মৃত সংসদ সদস্যের বলে মনে করছেন তদন্ত কর্মকর্তারা। তবে তা নিশ্চিত হতে ডিএনএ পরীক্ষা করানো হবে। তার জন্য বাংলাদেশ থেকে কলকাতায় উড়িয়ে আনা হচ্ছে নিহতের কন্যাকে।
প্রসঙ্গত, আনোয়ারুল আজীম আনার ঝিনাইদহ-৪ আসনে ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে আওয়ামী লীগ থেকে পর পর তিনবার এমপি নির্বাচিত হন। গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য চুয়াডাঙ্গার দর্শনা সীমান্ত দিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে যান তিনি। সেখানে বরাহনগর থানার মগুলপাড়া লেনে গোপাল বিশ্বাস নামের এক বন্ধুর বাড়িতে ওঠেন। পরদিন ডাক্তার দেখানোর কথা বলে বাড়ি থেকে বের হলে তার আর খোঁজ মেলেনি। এরপর থেকেই রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ ছিলেন।
গত বুধবার বিকেলে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের মহাপরিদর্শক (সিআইডি) অখিলেশ চতুর্বেদী সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘আমরা কিছু সুনির্দিষ্ট তথ্য পেয়েছি, যার ভিত্তিতে মনে করছি আনোয়ারুল আজীমকে হত্যা করা হয়েছে। তবে মরদেহ এখনও পাওয়া যায়নি। পূর্ব কলকাতার নিউ টাউন অঞ্চলে যে ফ্ল্যাটে আনোয়ারুল আজীম উঠেছিলেন, সেটি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আবগারি দফতরের কর্মকর্তা সন্দীপ কুমার রায়ের। সন্দীপের কাছ থেকে ফ্ল্যাটটি ভাড়া নিয়েছিলেন আখতারুজ্জামান নামের এক ব্যক্তি। আখতারুজ্জামানই ওই ফ্ল্যাটে আজীমের থাকার ব্যবস্থা করেছিলেন কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’