Logo
Logo
×

সংবাদ

ঘূর্ণিঝড় রেমাল

৮ লক্ষাধিক মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে

Icon

প্রকাশ: ২৬ মে ২০২৪, ১১:১৮ পিএম

৮ লক্ষাধিক মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে

ঘূর্ণিঝড় রোমালের ক্ষয়ক্ষতি থেকে বাঁচাতে উপকূলের ৮ লাখেরও বেশি মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান। একইসঙ্গে উপকূলীয় ১৬ জেলার অধিবাসীদের দেরি না করে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার অনুরোধ জোনান তিনি। আজ রবিবার (২৬ মে) সচিবালয়ে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে সাংবাদিকদের সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অনুরোধ জানান।

ঘূর্ণিঝড়টি সন্ধ্যা নাগাদ বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম শুরু করতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা অতীতের অভিজ্ঞতা দিয়ে আরও সক্ষমতার সঙ্গে ‘রেমাল’ মোকাবিলার জন্য সমস্ত প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। আমরা যে নির্দেশনা দিচ্ছি সেটা যদি সবাই আন্তরিকতার সঙ্গে পালন করে, আশা করছি এই দুর্যোগও আমরা আগের মতো সক্ষমতার সঙ্গে মোকাবিলা করতে পারব।”

মহিববুর রহমান বলেন, ‘আমি সবাইকে শেষবারের মতো আহ্বান জানাব- কালবিলম্ব না করে যেসব এলাকা অ্যাফেক্টেড (আক্রান্ত) হওয়ার সম্ভাবনা ইতোমধ্যে ঘোষিত হয়েছে, সেসব এলাকা থেকে সবাই এক্ষুণি নিরাপদ আশ্রয়ে যান।’

আবহাওয়া অফিসের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, ঘূর্ণিঝড়ের ঝুঁকিতে থাকা উপকূলীয় ১৬ জেলার মধ্যে রয়েছে- খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও চাঁদপুর।

ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে ৮ থেকে ৯ হাজার আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি করে রেডি (প্রস্তুত) রেখেছি। সবগুলো আশ্রয়কেন্দ্রে পর্যাপ্ত শুকনো খাবার, বিস্কুট, পানি ও চিকিৎসাসামগ্রী পৌঁছে গেছে।’

উপকূলীয় এলাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িতদের বলা হয়েছে, তারা যাতে প্রতিষ্ঠানের কাছাকাছি থেকে মানুষকে আশ্রয়ের ব্যাপারে সহযোগিতা করতে পারেন।’

তিনি বলেন, ‘আমরা গতকালকে বলেছিলাম আজকে ভোর থেকেই দুর্যোগ শুরু হতে পারে।  ঝড়ের গতিটা কম বলে এটি আজকে ভোরে আসেনি। গতকাল এর গতি ছিল ঘণ্টায় ১৬ থেকে ১৭ কিলোমিটার, কিন্তু ভোরে গতি কমে ১০ এর নিচে ঘণ্টায় ৬ কিলোমিটারে নেমে এসেছে।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘মহাবিপদ সংকেত জারি করা হয়েছে। সন্ধ্যা নাগাদ ঝড়ের প্রথম ভাগ বাংলাদেশ অতিক্রম শুরু করবে। মধ্যরাতের মধ্যে ঝড়ের মূল অংশটি বাংলাদেশ অতিক্রম করবে। ‘উপকূল অতিক্রমের সময় ঝড়ের সর্বোচ্চ গতি হতে পারে ঘণ্টায় ১১০ থেকে ১৩০ কিলোমিটার। ঝড়ের সময় উপকূলীয় এলাকায় ১০ থেকে ১২ ফুটের বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। জোয়ার থাকলে এটি আরও বেশি হবে।’ সাতক্ষীরা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত পুরো এলাকাটায় ঝড়ের কারণে কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে জানান তিনি।

ঝড়ের কারণে দেশে প্রচুর বৃষ্টিপাত হবে জানিয়ে মহিববুর রহমান বলেন, ‘ঝড় আসার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৩০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই আমরা মনে করছি বৃষ্টিপাতের জন্য সারাদেশই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। পাহাড়ি এলাকায় ব্যাপকভাবে ভূমিধস হওয়ার সম্ভাবনা আছে।’

তিনি বলেন, ‘শহর-গ্রাম, সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভায় জলাবদ্ধতা হওয়ার সম্ভাবনা আছে। যানজট হতে পারে, স্বাভাবিক যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হতে পারে। ঝড় শেষ না হওয়া পর্যন্ত সকল সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। লঞ্চ-স্টিমার যেগুলো চলাচল করছে সেগুলো বন্ধ থাকবে। আজকে সন্ধ্যা থেকে আগামীকাল সকাল পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু টানেলও বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিতে সর্বাত্মকভাবে কাজ হচ্ছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আশা করছি, (ঘূর্ণিঝড়) আঘাত হানার আগে আমরা সকল মানুষকে নিরাপদ আশ্রয় নিয়ে আসতে পারব। ঝড়-পরবর্তী সময়ে কাজ করার জন্য আমাদের মেডিকেল টিমগুলো প্রস্তুত রয়েছে। সেনাবাহিনীর লোকজন যেকোনো দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে, সেখানেও আমাদের ফায়ার সার্ভিস ও সেনাবাহিনীর লোক যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য সব ধরনের সরঞ্জাম নিয়ে তৈরি হয়ে আছে। ‘ঝড়ের পরে যাতে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় গিয়ে অন্য এলাকার কর্মকর্তারা কাজ করতে পারেন সেজন্য টিম গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেভাবেই আমরা প্রস্তুত রেখেছি।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সার্বক্ষণিকভাবে প্রস্তুতি কার্যক্রম করছেন জানিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি আমাদের নির্দেশনা দিচ্ছেন। তার নেতৃত্ব এবং পরামর্শে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছি।’

Logo

প্রধান কার্যালয়: ৬০৯০ ডাউসন বুলেভার্ড, নরক্রস, জর্জিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন