ঘূর্ণিঝড় রেমাল
উপকূলে ১৩০ কি.মি গতিতে আছড়ে পড়বে, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল
প্রকাশ: ২৬ মে ২০২৪, ০৭:২৬ পিএম
ছবি সংগৃহীত
ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ দেশের উপকূল অতিক্রমকালে এর গতিবেগ সর্বোচ্চ ১৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান। এ ছাড়া এই দুর্যোগ মোকাবিলা ও উপকূলীয়দের পাশে থাকার জন্য সব মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। রোববার (২৬ মে) দুপুরে সচিবালয়ে আন্তঃমন্ত্রণলায় সভা শেষে ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে এটি মহাবিপদ সংকেতে পরিণত হয়েছে। আজ সন্ধ্যা নাগাদ ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগ দেশের উপকূল অতিক্রম শুরু করবে। আর মধ্যরাত নাগাদ মূল যে ঝড় সেটি অতিক্রম করবে। বর্তমানে ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের গতিবেগ ৯০-১২০ কি.মি.। তবে যখন উপকূলে আসবে তখন এটা বেড়ে ১১০-১৩০ কি.মি পর্যন্ত হবে।
তিনি বলেন, উপকূলীয় এলাকায় ১০ ফুটের বেশি জলোচ্ছ্বাস হবে। পাশাপাশি ৩০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হতে পারে। এ ছাড়া সারাদেশে বৃষ্টি হতে পারে। পাহাড় ধসের আশঙ্কা রয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান জানান, ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। সেই সঙ্গে দেশের ভেতরে নৌ চলাচল বন্ধ থাকবে। মানুষের জান-মালের নিরাপত্তায় সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ সব মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনা হয়েছে। পাশাপাশি চিকিৎসা সামগ্রী, শুকনো খাবার আশ্রয়কেন্দ্রে রাখা হয়েছে।
তিনি জানান, ইতোমধ্যে ৮ লাখের বেশি মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনা হয়েছে। বাকিদের আসার জন্য আহ্বান জানানো হচ্ছে। পর্যাপ্ত আশ্রয়কেন্দ্র আছে। সশস্ত্র বাহিনীসহ অন্য বাহিনীগুলোও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। উপকূলীয় অঞ্চলে আপাতত স্কুল খোলা থাকবে তবে ক্লাস বন্ধ থাকবে।
প্রসঙ্গত: উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় রেমাল উত্তর দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হয়ে একই এলাকায় প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। এ অবস্থায় পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ১০ (দশ) নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
এছাড়া কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
সেই সঙ্গে খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার নদী বন্দরসমূহকে ৪ ( নম্বর নৌ-মহাবিপদ সংকেতদেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
রেমালের অগ্রবর্তী অংশ ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ০৮-১২ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।