ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার কয়েক দিন আগেই চিকিৎসার জন্য ভারত গিয়ে খুন হয়েছেন। কলকাতার নিউটাউন এলাকার সঞ্জিভা গার্ডেন থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে।
কলকাতা পুলিশের হাতে আটক হওয়া একজন ক্যাবচালক জানান, এক সপ্তাহ আগে নিখোঁজ হওয়া এমপি আনারকে হত্যা করা হয়েছে। তার লাশ খণ্ডবিখণ্ড করে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কলকাতা বিধান নগর পুলিশের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার মানব শ্রিংলা বলেন, ‘ক্যাবচালক স্বীকারোক্তি দিয়েছে- ১৩ মে যে ব্যক্তিকে সে গাড়িতে তুলেছিল তাকে হত্যার পর টুকরা টুকরা করে লাশ ছড়িয়ে দিয়েছে। যে ফ্ল্যাটে লাশ পাওয়া গেছে সেটি পুলিশ ঘিরে রেখেছে। সেখানে কাউকে এখনো ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, সিসিটিভি ফুটেজে ফ্ল্যাটে তিনজনকে ঢুকতে দেখা গেছে। এদের মধ্যে একজন নারী। তবে ওই তিনজনকে সেখান থেকে বের হতে আর দেখা যায়নি।
এদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান সাংবাদিকদের জানান, আনোয়ারুল আজিমের লাশ উদ্ধারের বিষয়ে বিস্তারিত জানতে কলকাতা পুলিশের সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে।
কলকাতার বাংলাদেশ উপ-দূতাবাসের এক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশ করার সস্ত্বে বলেন, আজিমের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন সকালে কলকাতায় ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন। সর্বশেষ ২০ মে আজিমের খোঁজ করতে গিয়ে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ তার মোবাইল লোকেশন ট্র্যাক করেছিল। তারা জানতে পেরেছে কলকাতায় বন্ধুর বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর তার মোবাইলের লোকেশন একবার পাওয়া গিয়েছিল সেখানকার নিউমার্কেট এলাকায়। এরপর ১৭ মে তার ফোন কিছুক্ষণের জন্য সচল ছিল বিহারের কোনো জায়গায়। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে এই তথ্য পেয়েছে কলকাতায় বাংলাদেশ উপ-দূতাবাস কর্তৃপক্ষ।
কলকাতার উত্তর শহরতলি বরাহনগর এলাকার সিঁথিতে যে বন্ধুর বাড়িতে উঠেছিলেন আনার, সেই গোপাল বিশ্বাস জানান, ১৩ মে তার বাড়ি থেকে বেরিয়ে যে ভাড়া করা গাড়িতে উঠেছিলেন আজিম, সেটির চালকের সন্ধান পেয়েছে বলেই স্থানীয় পুলিশের তরফে তাকে জানানো হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘পুলিশের কাছে আমি নিখোঁজ ডায়েরি করেছিলাম। তারা ওই গাড়িটিকে খুঁজে বের করেছে আর চালককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। ওই চালক নাকি পুলিশকে জানিয়েছেন যে, সংসদ সদস্যের সাথে একজন বাংলাদেশি নাগরিক ছিলেন। এদের দুজনকে তিনি কলকাতা সংলগ্ন নিউ টাউন এলাকায় ছেড়ে দেন ১৩ মে। এর বাইরে এখন পর্যন্ত আর কোনো তথ্য পাননি।
২০ মে উপ-দূতাবাস আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেস সচিব রঞ্জন সেন বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে সংসদ সদস্যের নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার বিষয়টি আমাদের শনিবার জানানো হয়। তারপরই আমরা ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগ করি। তারা খোঁজখবর করছেন এমনটাই আমাদের জানানো হয়েছে।’ আবার শেষবার যেহেতু নিখোঁজ সংসদ সদস্যকে কলকাতায় দেখা গিয়েছিল, তাই কলকাতা পুলিশের সাথেও অনানুষ্ঠানিকভাবে যোগাযোগ রাখছিল বাংলাদেশ উপ-দূতাবাস।
সূত্র : বিবিসি