নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য অব্যাহতভাবে চুরি ও বিক্রি আতঙ্কজনক: টিআইবি
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি) থেকে জাতীয় পরিচয়পত্রের (এআইডি) তথ্য ও মোবাইল ফোনের কল ডেটা রেকর্ড (সিডিআর)–সহ নাগরিকের ব্যক্তিগত গোপনীয় ও স্পর্শকাতর তথ্য চুরি ও অনলাইনে বিক্রির ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। আজ মঙ্গলবার (২১ মে) বিকেলে সংস্থাটির আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ উদ্বেগের কথা জানায় সংস্থাটি।
সংস্থাটি বলছে, দেশের সাধারণ নাগরিকের ব্যক্তিগত ও সংবেদনশীল তথ্যের সুরক্ষা নিশ্চিতের সাংবিধানিক অঙ্গীকারকে ভূলুণ্ঠিত করে। এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং খসড়া ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা আইন, ২০২৪ দ্রুত পাস করার উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে টিআইবি।
গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, ভিন্ন দুই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার সদস্যের আইডি ব্যবহার করে এনটিএমসির সিস্টেম ব্যবহার করে বিভিন্ন ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য (এনআইডি) ও মোবাইল ফোনের কল ডেটা রেকর্ডসহ (সিডিআর) অন্যান্য গোপনীয় তথ্য সংগ্রহ করে অর্থের বিনিময়ে পাচার করা হয়েছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থায় নিয়োজিত ব্যক্তিদের আইডি ব্যবহার করে নাগরিকের সংবেদনশীল ব্যক্তিগত তথ্য পাচারে ঘটনাকে চরম উদ্বেগজনক উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘জাতীয় পরিচয়পত্র ও সিডিআর–এর মতো এমন ব্যক্তিগত ও সংবেদনশীল তথ্য চুরির ঘটনা এবারই প্রথম নয়। আমরা এর আগেও বিভিন্ন সময়ে নাগরিকের জন্মনিবন্ধন, জাতীয় পরিচয়পত্রসহ বিভিন্ন গোপনীয় তথ্য চুরির অভিজ্ঞতা হয়েছে বাংলাদেশের নাগরিকদের।’
তিনি বলেন, ‘সর্বশেষ এমন একটি প্রতিষ্ঠান থেকে নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্য পাচারের ঘটনা ঘটল যা এই তথ্যের সুরক্ষা নিশ্চিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত, আবার এমন ব্যক্তিদের ক্রেডেনশিয়াল ব্যবহার করে এই তথ্য পাচার হয়েছে যারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য। অর্থাৎ, সরকার যে প্রক্রিয়া ও কারিগরি কাঠামোর মাধ্যমে নাগরিকের ব্যক্তিগত সংবেদনশীল তথ্যের সুরক্ষার নিশ্চিত করতে চায়, তার সক্ষমতা ও শুদ্ধাচারও প্রশ্নবিদ্ধ।’
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘ডিজিটাল দুনিয়ায় তথ্যের অপব্যবহার ও নজরদারিতে কোনো কোনো মহলের যে আগ্রহ ও তৎপরতা, সে তুলনায় একটি সঠিক ও কার্যকর উপাত্ত সুরক্ষা প্রক্রিয়া ও কারিগরি কাঠামো তৈরিতে সরকারের আগ্রহ ও সক্ষমতা নেই। অর্থাৎ, ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা নিশ্চিতে সরকারের গৃহীত যে আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগ ও আয়োজন তা একদিকে যেমন ফাঁপা বুলি, অন্যদিকে তা ভয়াবহ ঝুঁকিপূর্ণ।’