
দুই দেশের
মধ্যে আমদানি-রপ্তানিতে ফারাক আাকাশ-পাতাল। বরাবরই বাংলাদেশ পিছিয়ে। বাংলাদেশ যেখানে
রপ্তানি করে মাত্র ১৪ শতাংশ সেখানে আমদানির
পরিমাণ প্রায় ৮৬ শতাংশ। তবে গত
বছর বাংলাদেশে ভারতের
রপ্তানি হ্রাস
পেয়েছে।
ভারতের বাণিজ্য
মন্ত্রণালয় বিদায়ী অর্থবছরের তথ্য গতকাল বৃহস্পতিবার (১৬ মে) প্রকাশ করেছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, ভারতে বাংলাদেশের রপ্তানি কমেছে ৮ দশমিক ৭৪
শতাংশ। আর ভারত থেকে
আমদানি কমেছে ৯ দশমিক ৪৫
শতাংশ।
২০২২-২৩ অর্থবছর ভারত
থেকে বাংলাদেশের পণ্য আমদানির পরিমাণ ছিল ১ হাজার ২২১
কোটি ডলার। ২০২৩-২৪ অর্থবছর তা
হ্রাস পেয়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ১০৬
কোটি ডলার।
২০২২-২৩ অর্থবছর বাংলাদেশ
থেকে ভারত আমদানি করেছিল ২০২ কোটি ১২ লাখ ডলারের
পণ্য। গত অর্থবছর তা
কমে দাঁড়িয়েছে ১৮৪ কোটি ৪৬ লাখ ডলার।
ভারত
থেকে আমদানির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে তুলা, জ্বালানি তেল, বিটুমিন ও অন্যান্য খনিজ
পদার্থ, রেল ও ইঞ্জিনের বিভিন্ন
যন্ত্রাংশ। আমদানি সবচেয়ে বেশি কমেছে পেঁয়াজ, ডালজাতীয় খাদ্যশস্য, চিনি ও চিনির কাঁচামাল,
লোহা ও লৌহজাত কাঁচামাল।
অন্যদিকে
ভারতে রপ্তানির
তালিকায় শীর্ষে রয়েছে তৈরি পোশাক, সুতা ও অন্যান্য টেক্সটাইল
পণ্য। রপ্তানি সবচেয়ে বেশি কমেছে ফল ও বাদাম,
উদ্ভিজ্য ও প্রাণীজ চর্বি,
দুধ, আটা-ময়দা, খনিজ দ্রব্য।
২০২৩-২৪ অর্থবছর ভারত
থেকে তুলা আমদানি করা হয়েছে ২৩৬ কোটি ৮৮ লাখ ডলারের,
যা মোট আমদানির প্রায় সাড়ে ২১ শতাংশ। ২০২২-২৩ অর্থবছর ভারত
থেকে তুলা আমদানি করা হয়েছে ২০২ কোটি ৮৯ লাখ ডলারের।
বিদায়ী অর্থবছর ভারত থেকে জ্বালানি তেল, বিটুমিন ও অন্যান্য খনিজ
পদার্থ আমদানি করা হয়েছে ২৩০ কোটি ৭৬ লাখ ডলারের,
যা মোট আমদানির প্রায় ২১ শতাংশ। ২০২২-২৩ অর্থবছর এসব
পণ্য আমদানি করা হয়েছিল ১৯২ দশমিক ৭৩ কোটি ডলার।
বিদায়ী
অর্থবছর ভারতের রেল ও ইঞ্জিনের বিভিন্ন
যন্ত্রাংশ বাংলাদেশে রপ্তানি কমেছে ৬০ কোটি ৩৪
লাখ ডলারের, যা আগের অর্থবছর
ছিল ৭২ কোটি ৬৮
লাখ ডলারের।
এর
বাইরে ভারত থেকে উল্লেখযোগ্য আমদানির মধ্যে রয়েছে সবজি ও অন্যান্য খাদ্যশস্য
৩৯ কোটি ৭৫ লাখ ডলার,
জৈব রাসায়সিক ৩৭ কোটি ৪৫
লাখ ডলার, কফি-চা ও বিভিন্ন
ধরনের মশলা ৩০ কোটি ৪৫
লাখ ডলার, আয়রন ও স্টিল ২৮
কোটি ৯১
লাখ ডলার, অ্যালুমিনিয়াম ও এর কাঁচামাল
২৮ কোটি ৪৮ লাখ ডলার,
টেলিভিশন ও অন্যান্য ইলেকট্রনিক
যন্ত্রপাতি ২৩ কোটি ডলার,
চিনি ও চিনিজাত দ্রব্য
১৬ কোটি ৫০ লাখ ডলার,
বিভিন্ন কেমিক্যাল পণ্য ১৫ কোটি ২৭
লাখ ডলার, ফাইবার ১৪ কোটি ২৬
লাখ, রাবার ও রাবার জাতীয়
পণ্য ১১ কোটি ৭১
লাখ ডলার এবং অজৈব রাসায়নিক ১১ কোটি ডলার।
এদিকে
পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়ায় গত অর্থবছর এর
আমদানি সবচেয়ে বেশি কমেছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছর ভারত
থেকে পেঁয়াজ আমদানি হয়নি। যদিও ২০২২-২৩ অর্থবছর এ
পণ্য আমদানি হয়েছিল ১১ কোটি ডলারের
বেশি। এছাড়া গত অর্থবছর ভারত
থেকে ডালজাতীয় খাদ্যশস্য আমদানি হয়েছে মাত্র ৯ কোটি ১২
লাখ ডলার। এর আগের অর্থবছর
এ পণ্য আমদানি হয়েছিল ১২৮ কোটি ৭৭ লাখ ডলার।
অর্থাৎ ৯৩ শতাংশ আমদানি
কমেছে।
অন্যদিকে
বিদায়ী অর্থবছর বাংলাদেশ থেকে ভারতের আমদানির মধ্যে শীর্ষে ছিল ওভেন পোশাক ৩৯ কোটি ১৪
লাখ ডলার, যা তার আগের
অর্থবছর ছিল ৪৪ কোটি ৩৭
লাখ ডলার। আর ২০২৩-২৪
অর্থবছর বাংলাদেশ থেকে ভারতের নিট পোশাক আমদানির পরিমাণ ২০ কোটি ৪১
লাখ ডলার, যা ২০২২-২৩
অর্থবছর ছিল ৩০ কোটি ৯৫
লাখ ডলার। ওভেন সুতা ও অন্যান্য টেক্সটাইল
পণ্য বিদায়ী অর্থবছর ভারত আমদানি করেছে ২১ কোটি ৭৫
লাখ ডলার, যা তার আগের
অর্থবছর ছিল ২০ কোটি ৮১
লাখ ডলার।