Logo
Logo
×

সংবাদ

নাগরিক সমাজের সঙ্গে ডোনাল্ড লুর বৈঠক

খোঁজ নিলেন নির্বাচন-পরবর্তী পরিস্থিতির

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ মে ২০২৪, ০৪:২২ এএম

খোঁজ নিলেন নির্বাচন-পরবর্তী পরিস্থিতির

মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন-পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে জানতে চেয়েছেন। মঙ্গলবার (১৪ মে) বিকেলে নাগরিক সমাজের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় তিনি এ সম্পর্কে খোঁজ নেন। ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের বাসায় এ মতবিনিময় করেন তিনি। এ সময় নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি বাংলাদেশের পরিস্থিতি জানালে উদ্বেগ প্রকাশ করেন ডোনাল্ড লু। 

এছাড়া ঢাকা সফরের প্রথম দিনে ডোনাল্ড লু বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির পাশাপাশি এখানকার অর্থনীতি, শ্রম অধিকার, জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কেও জানতে চেয়েছেন। এদিকে ফিলিস্তিন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান এবং নিজ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থী, শিক্ষকসহ নাগরিকদের ওপর মার্কিন সরকারের দমন-পীড়নের ভূমিকায় বাংলাদেশের নাগরিক সমাজের সমালোচনার মুখে পড়েন মার্কিন এ কর্মকর্তা।

এ মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম, বাংলাদেশ সেন্টার ফর উইমেন ওয়ার্কার্স সলিডারিটির নির্বাহী পরিচালক কল্পনা আক্তার, মানবাধিকার কর্মী নূর খান লিটন, চাকমা সার্কেলের রানী ও মানবাধিকার নেত্রী রানী ইয়ান ইয়ান, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক আন্দোলনের সংগঠক সোহানুর রহমান এবং তরুণ সংগঠক মাহমুদা আক্তার মনীষা। এতে দূতাবাসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

মতবিনিময় শেষে সোহানুর রহমান জানান, নির্বাচন-পরবর্তী রাজনৈতিক পরিস্থিতি, মানবাধিকার, শ্রম অধিকার, অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলা, মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতিসহ নানা প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

মানবাধিকার কর্মী নূর খান বলেন, দেশের সামগ্রিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। চা-চক্রে দেশের বর্তমান পরিস্থিতিসহ রাজনৈতিক ও সামাজিক বিষয়গুলো আলোচনায় স্থান পেয়েছে।

বৈঠকের পর শ্রম অধিকারের বিষয়ে জানতে চাইলে কল্পনা আক্তার বলেন, শ্রম আইনের সংস্কার, তৈরি পোশাক শিল্পের কর্মীদের বেতন নিয়ে আন্দোলনের সময় যেসব মামলা হয়েছিল, সেগুলোর পরিস্থিতি সম্পর্কে ডোনাল্ড লু জানতে চেয়েছেন।

বৈঠক সূত্র জানায়, সংসদ নির্বাচনের পর বাংলাদেশে নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকারের চর্চা কতটা অবাধে হচ্ছে, তা জানতে চেয়েছেন ডোনাল্ড লু। নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকারের চর্চার জায়গাটি বাংলাদেশে ক্রমেই সংকুচিত হচ্ছে বলে নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে জানানো হয়। এ সময় তিনি মার্কিন সরকারের প্রত্যাশার কথা তুলে ধরেন। ডোনাল্ড লু বলেন, বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চেয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। সরকার তো নির্বাচন করে তার মতো করে কাজ করছে। এখন কেন দমন বা চাপ প্রয়োগের মতো পরিস্থিতির উদ্ভব হচ্ছে। এমনটি আশা করেনি যুক্তরাষ্ট্র, যা উদ্বেগের বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বৈঠকে মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের (ডিএসএ) প্রসঙ্গটি এসেছে। এ সময় ডিএসএ উদ্বেগের কথা জানান মার্কিন এ প্রতিনিধি। এ ছাড়া গাজায় ফিলিস্তিনের বিরুদ্ধে গণহত্যা বন্ধ আর যুক্তরাষ্ট্র্রে এ নিয়ে বিক্ষোভের প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ নিয়ে নাগরিক সমাজের মত জানতে চেয়েছেন তিনি। নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার বেশ সমালোচনা করেন। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রে ফিলিস্তিনিদের সহমর্মিতায় আয়োজিত বিক্ষোভ দমন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তারা।

মঙ্গলবার সকালে কলম্বো থেকে ঢাকা আসেন ডোনাল্ড লু। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উত্তর আমেরিকা অনু বিভাগ মহাপরিচালক খন্দকার মাসুদুল আলম। তিন দিনের সফরের প্রথম দিনের শুরুতে তিনি বিমানবন্দর থেকে সরাসরি যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসে যান। রাতে তিনি প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের আমন্ত্রণে নৈশভোজে অংশগ্রহণ করেন।

বুধবার সকালে ইএমকে সেন্টারে যাবেন ডোনাল্ড লু। সেখান থেকে সচিবালয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ুবিষয়ক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন তিনি। এর পর সেখান থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। সেখান থেকে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন ডোনাল্ড লু। আগামীকাল রাতেই তাঁর ঢাকা ছাড়ার কথা রয়েছে।

Logo

প্রধান কার্যালয়: ৬০৯০ ডাউসন বুলেভার্ড, নরক্রস, জর্জিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন