এসএসসি
জিপিএ-৫ এ শীর্ষে ঢাকা, পাসে যশোর বোর্ড, সর্বনিম্ন সিলেট
২০২৪ সালের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষার পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। আজ রবিবার (১২ মে) সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ফলাফলের কপি তুলে দেওয়া। এসময় তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল প্রকাশ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। পরে দুপুরে সচিবালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল ঘোষণা করেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরি নওফেল। এসময় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বেগম শামসুন নাহারসহ শিক্ষা বোর্ডগুলোর চেয়ারম্যানরা উপস্থিত ছিলেন।
ঘোষিত ফলাফলে দেখা গেছে, চলতি বছর মাধ্যমিকে ( স্কুল, মাদ্রাসা ও কারিগরি) মিলিয়ে গড় পাসের হার ৮৩ দশমিক ৪ শতাংশ। এর মধ্যে ছাত্রদের পাসের হার ৮১ দশমিক ৫৭ শতাংশ এবং ছাত্রীদের পাসের হার ৮৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ। নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৮৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ।
গত বছর (২০২৩) সালে মোট উত্তীর্ণের হার ছিল ৭৮ দশমিক ৬৪। ২০২২ সালে পাসের হার ছিল ৮৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ। এ বছর ২ দশমিক ৬৫ শতাংশ পাসের হার বেড়েছে। যদিও তা ২০২২ সালের তুলনায় ২ দশমিক ৮১ শতাংশ কম।
এ বছরের প্রাপ্ত ফলাফল অনুযায়ী, ঢাকা বোর্ডে পাসের হার ৮৩ দশমিক ৯২ শতাংশ, বরিশালে ৮৯ দশমিক ১৩ শতাংশ, চট্টগ্রামে ৮২ দশমিক ৮০ শতাংশ, কুমিল্লায় ৭৯ দশমিক ২৩ শতাংশ, দিনাজপুরে ৭৮ দশমিক ৪০ শতাংশ, রাজশাহীতে ৮৯ দশমিক ২৬ শতাংশ, সিলেটে ৭৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ, ময়মনসিংহ ৮৪ দশমিক ৯৭ শতাংশ ও যশোরে ৯২ দশমিক ৩২ শতাংশ। আর মাদ্রাসা বোর্ডে পাসের হার ৭৯ দশমিক ৬৬ শতাংশ।
পাসের হারে শীর্ষে যশোর, সর্বনিম্ন সিলেটে
চলতি বছরের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষায় পাসের হারে শীর্ষে রয়েছে যশোর শিক্ষা বোর্ড। আর সর্বনিম্ন পাসের হার সিলেট শিক্ষা বোর্ডে।
বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ড প্রাপ্ত ফলাফল থেকে জানা যায়, যশোর বোর্ডে পাসের হার ৯২ দশমিক ৩২ শতাংশ। আর সর্বনিম্ন সিলেট বোর্ডে পাসের হার ৭৩ দশমিক ৪ শতাংশ। এছাড়া ঢাকা বোর্ডে পাসের হার ৮৩ দশমিক ৯২ শতাংশ, রাজশাহীতে ৮৯ দশমিক ২৫ শতাংশ, কুমিল্লায় ৭৯ দশমিক ২৩ শতাংশ, চট্টগ্রামে ৮২ দশমিক ৮০ শতাংশ, বরিশালে ৮৯ দশমিক ১৩ শতাংশ, দিনাজপুরে ৭৮ দশমিক ৪০ শতাংশ ও ময়মনসিংহে ৮৪ দশমিক ৯৭ শতাংশ।
জিপিএ-৫-এ এগিয়ে ঢাকা বোর্ড
এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফলে এবার ঢাকা শিক্ষাবোর্ডে পাসের হার ৮৩ দশমিক ৯২ শতাংশ। আর জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৪৯ হাজার ১৯০ জন শিক্ষার্থী।
মাদ্রাসা বোর্ডে পাসের হার ৭৯ দশমিক ৬৬ শতাংশ
এ বছর মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে ৭৯ দশমিক ৬৬ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে। এছাড়া জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৪ হাজার ২০৬ জন।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়। লিখিত পরীক্ষা শেষ হয় গত ১২ মার্চ। ব্যবহারিক পরীক্ষা ১৩ থেকে ২০ মার্চের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়। এবার মোট ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ২০ লাখ ২৪ হাজার ১৯২ জন পরীক্ষার্থী এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নেয়।
এর মধ্যে নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পরীক্ষার্থী ছিল ১৬ লাখ ৬ হাজার ৮৭৯ জন। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে দাখিল পরীক্ষা দিয়েছিল মোট ২ লাখ ৪২ হাজার ৩১৪ জন। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এসএসসি (ভোকেশনাল) ও দাখিল (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় অংশ নেয় ১ লাখ ২৬ হাজার ৩৭৩ জন।
ছাত্রীদের চেয়ে ছাত্ররা পিছিয়ে
এদিকে ঘোষিত ফলাফলে দেখা গেছে, বরাবরের মতোই ছেলেদের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে মেয়েরা। ১১টি শিক্ষা বোর্ডে মোট ২০ লাখ ৩৮ হাজার ১৫০ জন পরীক্ষার্থী। ছাত্র নয় লাখ ৯৯ হাজার ৩৬৪ জন, আর ছাত্রী ১০ লাখ ৩৮ হাজার ৭৮৬ জন।
ফেল করা শিক্ষার্থীদের গালমন্দ করবেন না : প্রধানমন্ত্রী
ফলাফল প্রকাশের পর অভিভাবকদের উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যেসব শিক্ষার্থী ফেল করেছে তাদের গালমন্দ করা যাবে না। ফেল করেছে এতেই তো তাদের মনে কষ্ট। তাদের প্রতি সহানুভূতি দেখাতে হবে। পড়াশোনার দিকে আরও মনোযোগী করতে হবে। গালমন্দ করলে তারা সেটা নিতে পারবে না।
এবারের পরীক্ষায় যারা কৃতকার্য হয়েছে তাদের অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী। সঙ্গে অভিভাবক ও শিক্ষকদেরও অভিনন্দন জানান তিনি। যারা অকৃতকার্য হয়েছে তাদের মন খারাপ না করে আগামীতে আরও ভালো করার তাগিদ দেন তিনি।
এ সময় তিনি অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে আরো বলেন, গালমন্দ করলে ছেলে-মেয়েরা সেটা সহ্য করতে পারে না। কিছু ঘটনা তারা ঘটিয়ে ফেলে, তা তো নিশ্চয়ই অভিভাবকরা চাইবেন না। তারা চাইবেন না তাদের সন্তান হারাতে। সেজন্য তাদের সহানুভূতির সঙ্গে দেখেন, কেন সে পারল না? সেটা খুঁজে বের করে তার সেই সমস্যা দূর করতে হবে। পড়াশোনার দিকে আরও মনোযোগী করে তুলতে হবে।