বাংলাদেশে বিদ্যুৎ বেচে আদানির আয় ১০ হাজার কোটি টাকা
আদানি পাওয়ার প্লান্ট, গোড্ডা, ঝাড়খন্ড, ভারত।
বহুল আলোচিত ভারতের ব্যবসায়ী আদানি বাংলাদেশে বিদ্যুৎ বেচে এক বছরে আয় করেছে ১০ হাজার কোটি টাকা। সম্প্রতি আদানি পাওয়ার আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, এক বছরে কোম্পানিটির মোট আয় বেড়েছে ৩৭ শতাংশ। মুনাফা বেড়েছে ৯৪ শতাংশ।
আদানি পাওয়ার আর্থিক প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, ২০২২-২৩ তাদের আয়ের পরিমাণ ছিল ৩৭ হাজার কোটি রুপি (৪৯ হাজার কোটি টাকা)। ২০২৩-২৪ তা বেড়েছে ১৩ হাজার কোটি রুপি (১৮ হাজার কোটি টাকা)।
বিদায়ী হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন ২০২৩) আদানি বাংলাদেশে বিদ্যুৎ বিক্রি করে ১৪৬৮ কোটি রুপি, দ্বিতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ২০৩৪ কোটি রুপি, তৃতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) ১৮২৪ কোটি রুপি ও চতুর্থ প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) ২১৪৪ কোটি রুপি। জানুয়ারি-মার্চ সময়ে সবচেয়ে বেশি বিদ্যুৎ কেনা হয়েছে। যদিও এ সময় শীতের জন্য বিদ্যুতের চাহিদা তুলনামূলক কম থাকে।
বাংলাদেশে বিদ্যুৎ বিক্রির জন্য গত বছর ৫ এপ্রিল গড্ডা বিদ্যুকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট ও ২৬ জুন দ্বিতীয় ইউনিটটি উৎপাদন শুরু করে। চুক্তির আওতায় আদানি বাংলাদেশে ২৫ বছর বিদ্যুৎ বিক্রি করবে।
আদানির সঙ্গে যখন চুক্তি হয় তখন বাংলাদেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন হতো ১৩ হাজার মেগাওয়াট। আদানি যখন উৎপাদন করে বাংলাদেশে বিক্রি শুরু করে তখন বাংলাদেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন-ক্ষমতা বেড়ে হয়েছে ২৩ হাজার মেগাওয়াট।
বিদ্যুতের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে উত্তরাঞ্চলের জন্য বাংলাদেশ আদানির সঙ্গে চুক্তি করে। এই চুক্তি নিয়ে শুরু থেকেই নানা বিতর্ক রয়েছে। ক্ষমতাসীন দলের নেতারা আদানির কাছ থেকে ব্যাপক সুবিধা নিয়ে বেশি দামে বিদ্যুৎ বিক্রির সুযোগ করে দিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
এখন বাংলাদেশের নিজস্ব বিদ্যুকেন্দ্র বসিয়ে রেখে আদানি পাওয়ার থেকে বিদ্যুৎ কেনা হচ্ছে। না কিনলে তাদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। কেন্দ্রটির জন্য উচ্চহারে ক্যাপাসিটি চার্জও দিতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। চুক্তিতে এমন নানা সুবিধা নিয়েছে আদানি। গত বছরের এপ্রিল থেকে চলতি বছর মার্চ পর্যন্ত এক বছরে আদানি বাংলাদেশ থেকে ক্যাপাসিটি চার্জ পেয়েছে প্রায় চার হাজার ১০০ কোটি টাকা।
আদানি পাওয়ার বলছে, ভারতের অভ্যন্তরে বিদ্যুতের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং আমদানিকৃত কয়লা ও বিকল্প জ্বালানির দাম হ্রাস পাওয়ায় তাদের মুনাফা বেড়েছে।
বিদায়ী হিসাব বছরে তাদের মুনাফা আগের বছরের দ্বিগুণ হয়েছে, ২০ হাজার ৮২৯ কোটি রুপি (২৭ হাজার ৩৯৪ কোটি টাকা)। তার আগে ২০২২-২৩ বছরে মুনাফা ছিল ১০ হাজার ৭২৭ কোটি রুপি। ২০২১-২২ বছর ৪ হাজার ৯১২ কোটি রুপি, ২০২০-২১ বছর ১ হাজার ২৭০ কোটি রুপি।